বর্ধমান, 8 জানুয়ারি: গ্রেফতারির পাশাপাশি জিনিসপত্র নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে শনিবার সন্ধ্যায় গাংপুর স্টেশনে (Gangpur Station) আপ ও ডাউন লাইন শাখায় রেল অবরোধে নামে হকাররা । যার ফলে বর্ধমান-হাওড়া কর্ড ও মেন লাইনের বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল ৷ অবরোধের জেরে আটকে পড়ে আপ রাজধানী-সহ মিথিলা এক্সপ্রেস, হাওড়া-বর্ধমান ও বর্ধমান-হাওড়া শাখার কর্ড ও মেন লাইনের ট্রেন (Several Local Trains Including Rajdhani Express Stucked Long Time at Gangpur Station for Hawkers Agitation)। রেল পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে হকারদের সঙ্গে বচসা বেঁধে যায় । তবে বেশ কিছুক্ষণ পর অবশ্য অবরোধ তুলে নেয় হকাররা । ফের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় ৷
স্থানীয় ও রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া-বর্ধমান কর্ড ও মেন শাখার গাংপুর স্টেশনে বহু হকার ট্রেনে ফেরি করে সংসার চালায় । হকারি করার সময় আরপিএফরা বিভিন্নভাবে সমস্যায় ফেলে দেয় তাদের । গত কয়েকদিন ধরে বেশ কয়েকজন হকারকে আটক করে তাদের নামে মিথ্যে কেসও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ । এমনকি তাদের কাছে থাকা বিক্রির জিনিসপত্র কেড়ে নিয়ে ফেলেও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন : তারকেশ্বর-হাওড়া লাইনে ফাটল, দীর্ঘক্ষণ পর স্বাভাবিকের পথে পরিষেবা
অন্যদিকে হকারদের পক্ষ থেকে চাঁদা দিয়ে বৈঁচিগ্রামে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । কিন্তু সেখানেও আরপিএফ হকারদের অনেককেই কেস দিয়ে দেয় । এর ফলে তারা একদিকে যেমন ব্যবসা করতে পারছে না ৷ তেমনি সংসার কীভাবে চালাবেন সেটাও ভেবে উঠতে পারছেন না । ফলে তাঁরা এই অনুষ্ঠানে অংশও নিতে পারছেন না । এইসব ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা শনিবার সন্ধে নাগাদ গাংপুর স্টেশনে রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন । বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে যায় হাওড়া-বর্ধমান শাখার কর্ড ও মেইন লাইনে ট্রেন চলাচল ৷ আপ ও ডাউন দুই লাইনের যাত্রীরাই সমস্যায় পড়েন । যদিও বেশ কিছুক্ষণ পর হকাররা অবরোধ তুলে নিলে ফের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় ৷
হকারদের পক্ষে রাজু দাস বলেন, "হাওড়া-বর্ধমান শাখার কর্ড ও মেন লাইনে আমরা অনেকদিন ধরে ট্রেনে হকারি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি । কয়েকদিন পরে বৈঁচিগ্রামে আমাদের একটা কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠান আছে ৷ সেই জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি । অথচ আমারা আরপিএফের ভয়ে কোনও কাজ করতে পারছি না । গত তিনদিন ধরে আমাদের দু'টো করে ছেলেকে ধরে নিয়ে গিয়ে কেস দিয়ে দিচ্ছে আরপিএফ । আমাদের কাছ থেকে জিনিসপত্র কেড়ে নিয়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে । এমন অত্যাচার মেনে নেওয়া যায় না । আমরা গরিব হলেও আমাদের মান সম্মান আছে । এখন যে অন্য কোনও হকারের কাছ থেকে চাঁদা চাইতে যাব সেই উপায়ও নেই । কারণ সেও কোনও না কোনও কেস খেয়ে বসে আছে । ফলে সে চাঁদা দিতে পারছে না । শনিবার ফের দু'জনকে আটক করেছে আরপিএফ । এই বিরুদ্ধেই আমরা গাংপুর স্টেশনে রেল অবরোধ করি ।"
আরও পড়ুন : বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে ঢিল ছোড়ার ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত চাইলেন কুণাল