বর্ধমান, 22 মে : রাজ্যের অন্য জেলার মতো লকডাউনের জেরে বন্ধ পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন মন্দির । বন্ধ বিয়ে থেকে ঘরোয়া পুজো সবকিছুই । লকডাউন ঘোষণার সময় থেকেই কয়েকটি মন্দিরে ভোগ বিতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয় । এরপর সরকারি নির্দেশিকা মেনে ভক্তদের মন্দিরে পূজা দেওয়া এমনকী প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় । ফলে মন্দিরের পুরোহিতরা পড়েছেন চরম আর্থিক সংকটে ।
বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা বাড়ি, রাধাকুঞ্জবিহারী মন্দির, বীরহাটা কালীবাড়ি, কমলাকান্ত কালীবাড়ি, কঙ্কালেশ্বরী কালীবাড়ি, কালনার বুড়োরাজ শিবমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির সহ সব মন্দিরেই পুজো দেওয়া বন্ধ আছে। সারা বছর ওই মন্দিরগুলিতে ভক্ত সমাগম লেগেই থাকে। এছাড়া রাম নবমী, পয়লা বৈশাখ, অক্ষয় তৃতীয়া সহ একাধিক তিথিতে ভিড় উপচে পড়ে । এছাড়া বিয়ের অনুষ্ঠান, অন্নপ্রাশন, উপনয়ন সহ একাধিক অনুষ্ঠানে মন্দিরগুলিতে হয় । ভক্তরা ভোগের জন্য দান করেন । মন্দিরের উন্নতির জন্যও দান করেন অনেকে ।
লকডাউনের জেরে স্থগিত হয়ে গেছে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে পুজো । এছাড়া লকডাউনের জন্য কেউ বাড়িতেও পুজো করার জন্য পুরোহিতদের ডাকছেন না । ফলে পূর্ব বর্ধমান জেলায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার পুরোহিত। তাই পুরোহিত সমাজকে বাঁচানোর জন্য সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন তাঁরা।
বর্ধমানের নতুনগঞ্জের রাধকুঞ্জবিহারী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত বনবিহারী চক্রবর্তী বলেন, লকডাউনের জেরে মন্দিরে পুজো সহ অন্যান্য অনুষ্ঠান বন্ধ আছে। তাই ভক্তরা মন্দিরে এসে পুজো দিতে পারছেন না। এই পুজোর উপর নির্ভর করেই তাঁদের সংসার চলে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা আর্থিক সংকটে পড়েছেন ।
বর্ধমান সর্বমঙ্গলা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত অরুণকুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘50 বছর ধরে এই মন্দিরের সঙ্গে আমি যুক্ত। কোনোদিন এই পরিস্থিতিতে পড়িনি। এই পেশার মাধ্যমেই আমাদের সংসার চলে। লকডাউনের জেরে মন্দিরে কেউ পুজো দিতে আসতে পারছেন না। যাঁরা মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন তাঁর প্রণামীও দিয়ে যেতেন । এছাড়া মায়ের ভোগের জন্য অনেকে তাঁদের সাধ্যমতো দান করে থাকেন। এখন সবকিছুই বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। দেখা দিয়েছে আর্থিক সংকট।’’