মন্তেশ্বর, 27 অক্টোবর: মন্ত্রী হওয়ার গ্রামেও সম্পত্তি বেড়েছিল ৷ চোখে দেখেও না দেখার ভান করেছিলেন গ্রামবাসীরা ৷ মন্ত্রীর পরিবার বলে কথা ! কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দুর্নীতির অভিযোগে ইডির হাতে গ্রেফতার হতেই সরব স্থানীয় বিরোধী দলগুলিও ৷ রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মন্ত্রীর গ্রামের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর ব্লকের পূর্ব খাঁ পাড়া গ্রামে। গ্রামে আছে মন্ত্রীর পরিবারের রেশন দোকান। বিরোধীদের অভিযোগ, মন্ত্রী হওয়ার আগে তাঁর যা সম্পত্তি ছিল, এখন তার পরিমাণ বহুগুন বেড়ে গিয়েছে ৷ গ্রামে তাঁর এতটাই দাপট যে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেন না। ফলে মন্ত্রীর গ্রেফতারি নিয়ে গ্রামবাসীরা চুপ। মন্ত্রী ও তার আত্মীয়দের বাড়িও ফাঁকা।
মন্তেশ্বর বিধানসভার 1 নং মণ্ডলের বিজেপির সভাপতি ঝুলন হাজরা বলেন, "জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কিছুদিন আগে নিজের একটা আইটিআই কলেজের উদ্বোধন করেছিলেন। সেই কলেজ তৈরি করতে খরচ হয়েছিল 7 থেকে 8 কোটি টাকা। তিনি কোথা থেকে সেই টাকা পেয়েছিলেন সেটা ভাববার বিষয়। এদিকে ইডি-সিবিআই কলেজে গিয়ে তদন্ত করতে পারে একথা বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি সেই কলেজের নাম মুছে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী হওয়ার আগে তাঁর সামান্য কিছু সম্পত্তি ছিল। কিন্তু প্রথমে খাদ্যমন্ত্রী এবং পরে বনমন্ত্রী হয়ে তিনি প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন।"
ঝুলনের আরও দাবি, "নিজের পরিবারের লোকেদের নামে রেশন দোকান করে দিয়েছেন মন্ত্রী। এছাড়া নামে-বেনামে তিনি প্রচুর সম্পত্তি করেছেন। শুধু তাই নয়, সল্টলেকের মতো জায়গায় তাঁর অনেক সম্পত্তি আছে। তিনি গ্রামে সন্ত্রাস চালান। বিরোধীরাও সেই সন্ত্রাসের সামনে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। গ্রামে অনেক মস্তান পুষে রেথেছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর আশ্রিত গুণ্ডারাই সন্ত্রাস চালিয়ে নির্বাচনে জিতেছে। নিয়ম মেনে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে মন্তেশ্বরের একটা অঞ্চলও তৃণমূল দখল করতে পারত না।
আরও পড়ুন: জ্যোতিপ্রিয়র মামলা 'বিশেষ কেস', নির্দেশ বদল বিচারকের; অসুস্থ মন্ত্রীকে ভরতি করানো হল হাসপাতালে
সিপিএমের মন্তেশ্বর এরিয়া কমিটির সম্পাদক ওসমন আলি সরকারের দাবি, "তৃণমূল ক্ষমতা আসার পর থেকে শুধু নেতা-মন্ত্রী কেন গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য, প্রধান এবং উপপ্রধান প্রত্যেকের সম্পত্তির পরিমাণ বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সম্পত্তিও অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে। মন্ত্রী হবার আগে তাঁর যা সম্পত্তি ছিল সেই তুলনায় এখন সম্পত্তি অনেক গুণ বেড়েছে। তাঁর আত্মীয়দের নামে-বেনামে অনেক সম্পত্তি আছে। মন্ত্রী নিজেও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত।"