বর্ধমান, 2 জুন : রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের নিয়োগকরা ব্যক্তিকে বাদ দিয়েই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যের পদে আশিসকুমারপানিগ্রাহীকে নিয়োগ করল শিক্ষা দপ্তর । ইতিমধ্যেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে যোগদিয়েছেন । তিনি নদিয়ার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের প্রধানছিলেন ।
বর্ধমানবিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যের পদে সেখানকারই প্রাণী বিদ্যা বিভাগের প্রধান গৌতম চন্দ্রকে নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। কিন্তু তাঁকে বাদ রেখেই আশিসকুমার পানিগ্রাহীকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদেনিয়োগ করে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর । গতকাল শিক্ষা দপ্তরের তরফে নিয়োগ পত্র পাওয়ার পরআজ তিনি এই পদে যোগ দেন ।
আশিসকুমারপানিগ্রাহী বলেন, "সোমবারসন্ধ্যে নাগাদ শিক্ষা দপ্তর থেকে আমাকে নিয়োগপত্র পাঠানো হয় । কোন তারিখের মধ্যেযোগ দিতে হবে সেবিষয়ে কিছু জানানো হয়নি । তাই আর দেরি না করে আজই কাজে যোগ দিই ।এমনিতেই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল ।বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের মিটিং-সহ অন্যান্য আলোচনার জন্যমাঝে মধ্যে আমাকে আসতে হত । এই কাজের জন্য আমাকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয় ।সেই সূত্রে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়েও আসতাম । "
পড়ুয়াদেরউদ্দেশে বলেন, "এখনকোরোনা ভাইরাস চলছে । তাই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ আছে । পড়ুয়ারা ছাড়া যেহেতুবিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না তাই তাঁদের অনলাইনে ঠিকমতো ক্লাস করার আবেদন জানাচ্ছি।" যদিও গৌতম চন্দ্রর বদলে তাঁর নিয়োগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননিআশিসকুমার পানিগ্রাহী । তিনি বলেন, "এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই । শিক্ষাদপ্তরের তরফে আমাকে যোগ দিতে বলা হয়েছে সেইমতো আমি এসেছি ।"
21 ফেব্রুয়ারিপদত্যাগ করেন সহ-উপাচার্য মহুয়া সরকার । তারপর থেকে সহ-উপাচার্যের পদ শূন্য আছে ।সেইমতো উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফে আচার্যের কাছে সহ উপাচার্য পদের জন্য দু'জনের নামের প্যানেল পাঠানো হয় । সেইপ্যানেলে থাকা দু'জনেরনামের মধ্যে কোনও নামেই সায় দেননি আচার্য জগদীপ ধনখড় । বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়েরপ্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গৌতম চন্দ্রের নাম প্রস্তাব করেন রাজ্যপাল ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে গিয়ে যেভাবেঅধ্যাপক নিয়োগের চেষ্টা করেছেন রাজ্যপাল, তা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়েের আইন ওপশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইনের 9 নম্বর ধারার বিরোধী । তাই উচ্চশিক্ষাদপ্তর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন এর 58(Burdwan University Act 1981) নম্বর ধারা প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয় । সেই ধারায় বলা হয়েছে, সাংবিধানিক সংকটের ক্ষেত্রে রাজ্যপালবা আচার্যকে বাদ রেখেই নিয়োগ করা যাবে । সেইমতো উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফে কল্যাণীবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আশিসকুমার পানিগ্রাহিকে চার বছরেরজন্য সহ-উপাচার্যের পদে নিয়োগ করা হয় ।
শিক্ষাবিদদের মতে, এর আগেও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েরাজ্যপালের সঙ্গে শিক্ষা দপ্তরের সংঘাত বেধেছিল । সহ উপাচার্যের নিয়োগ ঘিরে সেইসংঘাত আরও বাড়ল বলে মনে করছেন তাঁঁরা ।