বর্ধমান, 28 মে : মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ নজরদারি বর্ধমান জেলা প্রশাসনের । ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে এবার এই পাঁচ রাজ্য় থেকে ফেরা শ্রমিকদের আলাদা করতে চিহ্নিতকরণের ব্যবস্থা করল প্রশাসন। এক্ষেত্রে এই শ্রমিকদের হাতের আঙুলে কালি দিয়ে চিহ্নিত করা হবে।
দেশে বেড়েই চলেছে কোরোনা সংক্রমণ । দিন দিন মৃত্যুর সংখ্য়াও বেড়ে চলেছে । এর মাঝেই নিজেদের রাজ্য়ে ফিরতে শুরু করেছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা । এর জেরে সংক্রমণের সম্ভাবনাও বাড়ছে । বিশেষ করে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলিতে প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ । তাই সেখান থেকে ফেরা শ্রমিকদের জন্য আরও কড়া নজরদারি শুরু বর্ধমান জেলা প্রশাসনের । এক্ষেত্রে পাঁচ রাজ্য় থেকে ফিরে যে শ্রমিকরা হোম কোয়ারানটিনে থাকবেন, তাঁদের একটি আঙুলে আর যাঁদের আইসোলেশনে পাঠানো হবে, তাঁদের দুটি আঙুল চিহ্নিত করা হবে ।
ভিন রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার জন্য ব্লকে ব্লকে টাস্কফোর্সও গঠন করল জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের তরফে জানা গেছে, গত দু'মাসে কোয়ারানটিন সেন্টার তৈরি করার ক্ষেত্রে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে । অন্য রাজ্য থেকে জেলায় আসার পর শ্রমিকরা নিজেদের ব্লকে ঢুকতে পারছেন না । বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না । তাঁদের টেস্টের রিপোর্ট আসতেও দেরি হচ্ছে। নেগেটিভ রিপোর্ট আসার পরও অনেককে ছাড়া হচ্ছে না । এবার এই সব সমস্যা সমাধানেও নানা পরিকল্পনা করছে জেলা প্রশাসন ।
এবিষয়ে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, "জেলায় পরিবহনের একটা বড় সমস্যা ছিল। ট্রেন থেকে নামার পর অনেকেই দাবি করছেন তাঁদের নিজেদের গ্রামে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। কিন্তু শুধুমাত্র একটা গ্রামের জন্য, ব্লকের জন্য তো আলাদা আলাদা করে বাস পাওয়া যায় না, তাই প্রত্যেকের বাড়ির কাছাকাছি এলাকায় কোয়ারানটিন সেন্টার করা হয়েছে। তবে মূলত মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ ,তামিলনাড়ু থেকে আসা শ্রমিকদের বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হবে। এদের মধ্যে যাঁদের হোম কোয়ারানটিনে পাঠানো হবে, তাঁদের বুড়ো আঙুলে কালি লাগানো হবে । যাঁদের আইসোলেশনে পাঠানো হবে, তাঁদের বুড়ো আঙুল ও তর্জনিতে কালি দেওয়া হবে।"
তিনি আরও বলেন, "এই পাঁচ রাজ্য়ের শ্রমিকদের কোনওমতেই বাড়ি পাঠানো যাবে না। যদি তাঁদের বাড়িতে পাওয়া যায় তাহলে ফের কোয়ারানটিন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হবে। তাঁদের ক্ষেত্রে সোয়াব পরীক্ষাও বাধ্যতামূলক । পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য BDO এবং ব্লকের কর্মাধ্যক্ষদের নিয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।"
