বর্ধমান, 20 অগাস্ট : গোড়ালির ওপর থেকে বেঁকে গেছে পা । হাঁটতে গেলে এখন ভরসা একজোড়া ক্রাচ । পাঁচ বছর আগেও ছবিটা ছিল অন্যকরম । স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে আর পাঁচজন সুস্থ মানুষের মতোই জীবন কাটাতেন ভাতার থানার বড়বেলুন গ্রামের বাসিন্দা অম্বদীশ চট্টোপাধ্যায় । এখন রোজগারের পথ বলতে গৃহশিক্ষকতা ও যজমানি । তাও যা আয়, তাতে তিনজনের সংসার চালিয়ে নিজের পায়ের চিকিৎসা করানো প্রায় অসম্ভব । এই অবস্থায় সরকারের প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথির কার্ডের জন্য আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়কের কাছে । মেলেনি সাড়া । অগত্যা 'দিদিকে বলো'-র ফোন নম্বরে ফোন করেন তিনি । কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে । মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কলকাতায় এসে দেখা করতে বলেন । আর তা করতেই তিনি ভাঙা পায়ে সাইকেল চালিয়ে রওনা দিলেন 'দিদি'-র উদ্দেশে ।
2014 সালে সাইকেলে করে যাওয়ার সময় অন্ধকারে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যায় অম্বদীশ চ্যাটার্জির । গৃহশিক্ষকতা ও যজমানি করে যা আয়, তা দিয়ে পায়ের চিকিৎসা করানো অসম্ভব । চিকিৎসার অভাবে ভাঙা পা ক্রমশ বেঁকে যেতে শুরু করে । চিকিৎসার জন্য তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য থেকে বিধায়ক, প্রায় সকলের কাছেই স্বাস্থ্যসাথি কার্ডের জন্য আবেদন করেন । কিন্তু প্রতিবারই ফিরে আসেন নিরাশ হয়ে । কেউই সাহায্য করেনি ।
এরপরই তিনি জানতে পারেন রাজ্য সরকারের 'দিদিকে বলো' কর্মসূচি সম্পর্কে । ওই নম্বরে ফোন করেন তিনি । কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে । অম্বদীশ চ্যাটার্জির দাবি, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কলকাতায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেছেন । আর তাই তিনি ভাঙা পা নিয়েই সাইকেল চালিয়ে রওনা দেন নবান্নের উদ্দেশে । কেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত? এই প্রশ্নের উত্তরে অম্বদীশ বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীকে গিয়ে সমস্ত ঘটনা বলব । উনি যদি সবটা শুনে চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা করেন ভালো, না হলে আমি যাতে আত্মহত্যা করতে পারি সেই অনুমতি যেন মুখ্যমন্ত্রী দেন ।"