ETV Bharat / state

International Dance Day: সোশাল মিডিয়ায় 'অসামাজিক' নাচ, শিল্পের অসম্মানে নৃত্য দিবসে আক্ষেপ শিল্পীদের

রিলস, শর্টস ও ইউটিউবে অঙ্গভঙ্গির দাপটে অস্তিত্ব হারাচ্ছে সাধনার নৃত্য ! বিশ্ব নৃত্য দিবসে ক্ষোভ প্রকাশ জঙ্গল মহলের শিল্পীদের ৷

International Dance Day
শিল্পের অসম্মানে নৃত্য দিবসে আক্ষেপ শিল্পীদের
author img

By

Published : Apr 29, 2023, 7:57 PM IST

শিল্পের অসম্মানে নৃত্য দিবসে আক্ষেপ শিল্পীদের

মেদিনীপুর, 29 এপ্রিল: ইউটিউব-সহ সোশাল মিডিয়া খুললেই দেখা যায় 30 সেকেন্ড, এক মিনিটের ভিডিয়ো বিভিন্ন গান ও নাচের অঙ্গভঙ্গির। খুদে থেকে বড়রা কেইই বাদ যায়নি সেই অঙ্গভঙ্গির নৃত্য থেকে। বিশ্ব নৃত্য দিবসে এই অঙ্গভঙ্গি দেখে নৃত্য সাধনার মৃত্যু ঘটছে বলে মনে করছেন জঙ্গলমহলের শিল্পী ও প্রশিক্ষকরা। তাঁরা উগরে দিলেন একরাশ ক্ষোভ ও হতাশা।

নৃত্য হচ্ছে সাধনা, আর এই নৃত্য ভারতবর্ষের সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বজুড়ে। নৃত্য ভালোবাসে না এরকম মানুষ সংখ্যা খুব কমই রয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই নৃত্য শিল্পীদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রম ও সাধনার ফল বলে মত শিল্পীদের। এই নৃত্য ও গান শিখতে, তালিম নিতে বছরের পর বছর কেটে যেতে হয়। কিন্তু বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েডের যুগে এবং মোবাইলের দাপটে ছোট ছোট ভিডিয়ো রিলস ও শর্টস সঙ্গে ইউটিউবে বিভিন্ন গানে অঙ্গভঙ্গির নৃত্যে এই প্রথিতযশা সাধনার মৃত্যু ঘটছে বলে নৃত্য দিবসে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মেদিনীপুরের নৃত্য শিল্পীরা।

ভারতের সনাতনী নৃত্যের ইতিহাস সমৃদ্ধ বললে কম বলা হয় ৷ কেরালার কথাকলি, তামিলনাড়ুর ভরতনাট্যম, উত্তর-পশ্চিম ভারতের কত্থক, অন্ধ্রপ্রদেশের কুচিপুরী ঘরানার নৃত্য পৃথিবীজুড়ে সমাদৃত ৷ পাশপাশি জঙ্গলমহলের ছৌ, ঝুমুর, কাঠি নৃত্য, বিভিন্ন আদিবাসী নৃত্য এবং ক্লাসিকাল ডান্স যা হারিয়ে যেতে বসেছে এবং বর্তমান সমাজের আট থেকে আশির বিভিন্নভাবে ট্রেনিং না-পাওয়া অঙ্গভঙ্গি হাবভাব এবং কোমর দোলানোতে। এই ক্ষেত্রে বড়দের পাশাপাশি এগিয়ে দেওয়া হয়েছে কচিকাঁচা ও খুদেদের।

আরও পড়ুন: গুয়াহাটিতে মেগা বিহু নাচ, সাক্ষী থাকলেন প্রধানমন্ত্রী

ছোট থেকেই বড়দের মতো পোশাক পরিয়ে শুধু রোমান্টিক গানে নাচানো হচ্ছে তা নয় এর সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন স্টেজে ভিন্ন ভিন্ন গানের সঙ্গে ডিজে জুড়ে দিয়ে এক অদ্ভুত রকমের মিক্সিং গান করে তাতে ডান্স করাচ্ছেন বিভিন্ন রিয়ালিটি শো ও তাঁর আয়োজকরা। যার ফলে ছোটবেলা থেকেই ভুল শিখছে এই খুদে কচিকাঁচা নৃত্য শিল্পীরা ৷ সেই ভুলভাল কোমর দোলানোতে এগিয়ে দিয়েছেন তাঁর অভিভাবক ও বাবা মায়েরা। যদিও এই ইউটিউব, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম এবং রিলস, শর্টসের দাপটে সেগুলোই ভাইরাল হচ্ছে। ভিউয়ার্স বাড়ছে, লাইক ও কমেন্ট হচ্ছে এবং মুনাফা লাভের জায়গা হচ্ছে। ফলে নৃত্য যে এক শরীরের কলাকৌশল দীর্ঘদিনের সাধনা তা আজ লোপ হয়ে যেতে বসেছে।

আরও পড়ুন: 'সুপার সিঙ্গার'-এর মঞ্চে নাচ-গানের ডাবল ধামাকা

এই বিষয়ে ভারতনাট্যম শিল্পী সাগরিকা ঘোষ বলেন, "মৃত্যু হচ্ছে একটি সাধনা, যা বহু বছর ধরে নির্দিষ্ট তালিম নিয়ে শিখতে হয় ৷ কিন্তু একে গ্রাস করেছে শর্টস, রিলস, ইউটিউব সঙ্গে বিভিন্ন ছোট-বড় রিয়ালিটি শো। না-জেনে শুনেই অর্ধেক শিখে পা দোলাচ্ছেন শিল্পীরা। অপরদিকে, ক্লাসিক্য়াল নাচের প্রশিক্ষক রাজনারায়ণ দত্ত, নন্দিতা সরকাররা বলেন, "নৃত্য হল সাধনা। যে সাধনা আমরা বিশ বছর ধরে অর্জন করেছি ধীরে ধীরে। কিন্তু বর্তমানে এই রিলস শর্টস ও ইউটিউবের যুগে অল্প কিছু অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে সেই সাধনার মৃত্যু ঘটাচ্ছে খুদে থেকে বড়রা। এটা যে কোথায় গিয়ে থামবে তা ভেবেই ভয় পাই। কিছু মুনাফালোভী মানুষজন এগুলো করে নষ্ট করে দিয়েছে সঙ্গীতের ঘরানাকে।"

শিল্পের অসম্মানে নৃত্য দিবসে আক্ষেপ শিল্পীদের

মেদিনীপুর, 29 এপ্রিল: ইউটিউব-সহ সোশাল মিডিয়া খুললেই দেখা যায় 30 সেকেন্ড, এক মিনিটের ভিডিয়ো বিভিন্ন গান ও নাচের অঙ্গভঙ্গির। খুদে থেকে বড়রা কেইই বাদ যায়নি সেই অঙ্গভঙ্গির নৃত্য থেকে। বিশ্ব নৃত্য দিবসে এই অঙ্গভঙ্গি দেখে নৃত্য সাধনার মৃত্যু ঘটছে বলে মনে করছেন জঙ্গলমহলের শিল্পী ও প্রশিক্ষকরা। তাঁরা উগরে দিলেন একরাশ ক্ষোভ ও হতাশা।

নৃত্য হচ্ছে সাধনা, আর এই নৃত্য ভারতবর্ষের সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বজুড়ে। নৃত্য ভালোবাসে না এরকম মানুষ সংখ্যা খুব কমই রয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই নৃত্য শিল্পীদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রম ও সাধনার ফল বলে মত শিল্পীদের। এই নৃত্য ও গান শিখতে, তালিম নিতে বছরের পর বছর কেটে যেতে হয়। কিন্তু বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েডের যুগে এবং মোবাইলের দাপটে ছোট ছোট ভিডিয়ো রিলস ও শর্টস সঙ্গে ইউটিউবে বিভিন্ন গানে অঙ্গভঙ্গির নৃত্যে এই প্রথিতযশা সাধনার মৃত্যু ঘটছে বলে নৃত্য দিবসে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মেদিনীপুরের নৃত্য শিল্পীরা।

ভারতের সনাতনী নৃত্যের ইতিহাস সমৃদ্ধ বললে কম বলা হয় ৷ কেরালার কথাকলি, তামিলনাড়ুর ভরতনাট্যম, উত্তর-পশ্চিম ভারতের কত্থক, অন্ধ্রপ্রদেশের কুচিপুরী ঘরানার নৃত্য পৃথিবীজুড়ে সমাদৃত ৷ পাশপাশি জঙ্গলমহলের ছৌ, ঝুমুর, কাঠি নৃত্য, বিভিন্ন আদিবাসী নৃত্য এবং ক্লাসিকাল ডান্স যা হারিয়ে যেতে বসেছে এবং বর্তমান সমাজের আট থেকে আশির বিভিন্নভাবে ট্রেনিং না-পাওয়া অঙ্গভঙ্গি হাবভাব এবং কোমর দোলানোতে। এই ক্ষেত্রে বড়দের পাশাপাশি এগিয়ে দেওয়া হয়েছে কচিকাঁচা ও খুদেদের।

আরও পড়ুন: গুয়াহাটিতে মেগা বিহু নাচ, সাক্ষী থাকলেন প্রধানমন্ত্রী

ছোট থেকেই বড়দের মতো পোশাক পরিয়ে শুধু রোমান্টিক গানে নাচানো হচ্ছে তা নয় এর সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন স্টেজে ভিন্ন ভিন্ন গানের সঙ্গে ডিজে জুড়ে দিয়ে এক অদ্ভুত রকমের মিক্সিং গান করে তাতে ডান্স করাচ্ছেন বিভিন্ন রিয়ালিটি শো ও তাঁর আয়োজকরা। যার ফলে ছোটবেলা থেকেই ভুল শিখছে এই খুদে কচিকাঁচা নৃত্য শিল্পীরা ৷ সেই ভুলভাল কোমর দোলানোতে এগিয়ে দিয়েছেন তাঁর অভিভাবক ও বাবা মায়েরা। যদিও এই ইউটিউব, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম এবং রিলস, শর্টসের দাপটে সেগুলোই ভাইরাল হচ্ছে। ভিউয়ার্স বাড়ছে, লাইক ও কমেন্ট হচ্ছে এবং মুনাফা লাভের জায়গা হচ্ছে। ফলে নৃত্য যে এক শরীরের কলাকৌশল দীর্ঘদিনের সাধনা তা আজ লোপ হয়ে যেতে বসেছে।

আরও পড়ুন: 'সুপার সিঙ্গার'-এর মঞ্চে নাচ-গানের ডাবল ধামাকা

এই বিষয়ে ভারতনাট্যম শিল্পী সাগরিকা ঘোষ বলেন, "মৃত্যু হচ্ছে একটি সাধনা, যা বহু বছর ধরে নির্দিষ্ট তালিম নিয়ে শিখতে হয় ৷ কিন্তু একে গ্রাস করেছে শর্টস, রিলস, ইউটিউব সঙ্গে বিভিন্ন ছোট-বড় রিয়ালিটি শো। না-জেনে শুনেই অর্ধেক শিখে পা দোলাচ্ছেন শিল্পীরা। অপরদিকে, ক্লাসিক্য়াল নাচের প্রশিক্ষক রাজনারায়ণ দত্ত, নন্দিতা সরকাররা বলেন, "নৃত্য হল সাধনা। যে সাধনা আমরা বিশ বছর ধরে অর্জন করেছি ধীরে ধীরে। কিন্তু বর্তমানে এই রিলস শর্টস ও ইউটিউবের যুগে অল্প কিছু অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে সেই সাধনার মৃত্যু ঘটাচ্ছে খুদে থেকে বড়রা। এটা যে কোথায় গিয়ে থামবে তা ভেবেই ভয় পাই। কিছু মুনাফালোভী মানুষজন এগুলো করে নষ্ট করে দিয়েছে সঙ্গীতের ঘরানাকে।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.