চন্দ্রকোনা, 1 জুলাই: অর্থ সংগ্রহে ভাঁটা, মাঝ পথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল গ্রামের হরিনাম যজ্ঞ ৷ সহায় হল রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প । মহিলাদের উদ্যোগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সঞ্চিত টাকায় সম্পূর্ণ হল হরিনাম ৷ ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পৌরসভার 6 নম্বর ওয়ার্ডের বাঁশদহ গ্রামের । আট থেকে আশি পুরুষরাও মেতে উঠলেন গ্রামের মহিলাদের আয়োজিত হরিনাম যজ্ঞে ।
জানা গিয়েছে, গত চার বছর ধরে ওই হরিনাম যজ্ঞ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল টাকার অভাবে। সেই যজ্ঞ চালু করতে এগিয়ে এলেন গ্রামের মহিলারা । এই বাঁশদহ গ্রামে 110টি পরিবারের বাস ৷ তার মধ্যে সরকারি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারর প্রাপক আনুমানিক 150 জন । গ্রামের ওই 150 জন মহিলার কেউ পায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের 500 টাকা, তো কেউ আবার 1000 ৷ আর সেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সঞ্চিত অর্থ থেকেই গ্রামের মহিলারা হরিনাম যজ্ঞের আয়োজন করে ।
আরও পড়ুন: অদিতির কণ্ঠে 'শ্রী জগন্নাথ কীর্তন', ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে রথের দড়িতে টান শিল্পীর
উল্লেখ্য, 28 জুন থেকে 30 জুন পর্যন্ত তিনদিন ব্যাপী মহিলাদের উদ্যোগে আয়োজিত হরিনাম যজ্ঞে মেতে উঠেছেন সকলে । 28 জুন বুধবার ছিল অধিবাস ৷ আর 30 জুন শুক্রবার রাতে ছিল হরিনাম যজ্ঞের ধূলোট, অর্থাৎ নাম সংকীর্তনের শেষ দিন । বাঁশদহ গ্রামে শীতলা মন্দিরে তিনদিন ব্যাপী এই হরিনাম যজ্ঞ হয় ৷ হরিনাম যজ্ঞের আয়োজক মহিলাদের মধ্যে অন্যতম তনুশ্রী কুণ্ডু, শম্পা মণ্ডল, মিঠু মণ্ডল, দোলা গোস্বামীরা জানান, প্রথমে গ্রামের পুরুষেরাই এই আয়োজন করত । কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে বছর চারেক বন্ধ হয়ে পড়েছিল নাম সংকীর্তন ।
তাঁরা বলেন, "সব গ্রামে হরিনাম যজ্ঞ চললেও আমাদের গ্রামে তা বন্ধ ছিল । তাই আমরা গ্রামের মহিলারা উদ্যোগ নিয়ে হরিনাম যজ্ঞ করলাম । আমরা সিদ্ধান্ত নিই সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের যে টাকা ঢুকছে তা দিয়েই সকলে একত্রিত হয়ে গ্রামের হরিনাম যজ্ঞ পুনরায় চালু করব । মেয়েরা বসে মিটিং করি ৷ প্রত্যেক মহিলার সঞ্চিত লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দিয়েছে ৷ সেখান থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে এই হরিনাম যজ্ঞের আয়োজন করা হয় ।"
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিংসার প্রতিবাদে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কীর্তন ইসকনের
তবে মহিলাদের এহেন উদ্যোগে পাশে থেকে সঙ্গ দিয়েছেন গ্রামের পুরুষেরাও । গ্রামের এক বাসিন্দা সুশোভন কুন্ডু জানান, সমস্ত উদ্যোগটাই গ্রামের মহিলাদের । লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা থেকে 150 জন মহিলা ফান্ড তৈরি করে ৷ সেই টাকা দিয়েই হরিনাম যজ্ঞের আয়োজন করেছে তারা । পুরুষেরা নেপথ্যে তাদের সহযোগিতা করেছে ।