মেদিনীপুর, 3 অগস্ট: আয়ুষ হসপিটালে মানুষের দাবি-দাওয়া মেনে আজও চালু হয়নি আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিকের ইনডোর পরিষেবা । এমনটাই অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা ৷ স্টাফ ভাড়া করেই চলছে এই হাসপাতালের কাজকর্ম । শুধু আউটডোরের মাধ্যমে কোনক্রমে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে এই চিকিৎসা কেন্দ্র বলেও অভিযোগ ।
জঙ্গলমহলে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বাড়ানোর জন্য 2018-19 সাল নাগাদ বড় হাসপাতাল তৈরি হয় ৷ যার নাম দেওয়া হয় আয়ুষ হাসপাতাল । মেদিনীপুর শহরের শেষ প্রান্ত আবাসে এই হাসপাতাল তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । কথা হয় আয়ুষে যেমন আউটডোর থাকবে তেমনই থাকবে ইনডোর ব্যবস্থাও । এখানে রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা এবং অপারেশন পর্যন্ত করবে চিকিৎসকেরা । কিন্তু হসপিটাল হওয়ার পরও দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকে বেহাল অবস্থায় ।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ প্রকল্প হলেও জেলার এই আয়ুষ হাসপাতালের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার তার দায়িত্ব পালন করে থাকে । এরপর হাসপাতাল চালু হওয়ার মুখে হঠাৎ মহামারী কোভিড দেখা দেয় ৷ সেই সময় তড়িঘড়ি শহরের রোগীদের রাখার জন্য এটিকে রাতারাতি করোনা হাসপাতাল তৈরি করেন জেলাশাসক । এরপর কোভিড বিপর্যয় কেটে গেলে পুনরায় আয়ুষ হাসপাতাল আবার বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ ।
আয়ুষ হাসপাতাল আবার চালু হয়েছে মার্চ মাসে । সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় স্বাস্থ্য দফতরের কিছু অবসরপ্রাপ্ত স্টাফ এবং বেশ কিছু এজেন্সি দ্বারা সিকিউরিটি গার্ড নিয়েই এই হাসপাতালের আউটডোর পরিষেবা চালু রয়েছে গতানুগতিকভাবে । এলাকায় রোগীর বিরাট সংখ্যক থাকায় জেলার ভিন্ন ভিন্ন ব্লক থেকে একজন দুজন ডাক্তারদের কোনমতে আনা হয়েছে এই কঠিন পরিস্থিতিতে । কোন কোন ডাক্তার একবেলা আবার কোন কোন ডাক্তার হাফবেলা তাদের সময় দিয়ে কোন মতে টিকিয়ে রেখেছে আয়ুষে চিকিৎসা পরিষেবা । শুধু আউটডোরে এসেই ডাক্তার দেখে যান কিন্তু এখন পর্যন্ত ইনডোর পরিষেবা চালু হতে পারেনি এই হাসপাতালে । আর তাতেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে(patients demanding indoor service in Ayush hospital at Medinipur) ।
প্রায় 7 টি পৌরসভা নিয়ে মোট জেলার 46 লক্ষ ভোটার নিয়ে গঠিত এই মেদিনীপুর জেলা । সেখানে এই হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ব্যাপকভাবে প্রয়োজনীয় । যার চিকিৎসা কেন্দ্র একমাত্র আয়ুষ । শুধু আউটডোরে দেখেই চিকিৎসা সম্ভব না, তাই মানুষের দাবি অবিলম্বে ইনডোর ব্যবস্থা এবং ওপিডি-সহ স্থায়ীভাবে রোগী চিকিৎসা করার ব্যবস্থা চালু করা হোক ।
আর এই পরিষেবা নিয়েই ক্ষোভ সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ-সহ জেলার মানুষের । যদিও স্বাস্থ্য দফতরের মতে ভাড়া করে কোনও স্টাফ রাখা হয়নি বরং স্বাস্থ্য দফতরের বেশ কিছু স্টাফকে ওখানে পাঠানো হয়েছে কোনওরকমে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য । এই নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে । রাজ্যের বিরোধী বিজেপির দাবি, সরকার মেলা-খেলাতে সমস্ত টাকা খরচা করছে অথচ আয়ুষ হাসপাতাল চালু করার ক্ষেত্রে যত গড়িমসি । এই নিয়ে সমস্যায় রয়ে গিয়েছে জেলায় ।
আরও পড়ুন: লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হয়নি, হাসপাতাল সিল করে দিল জেলা স্বাস্থ্যদফতর
এদিন এই বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবন চন্দ্র হাঁসদা বলেন, "কোনওভাবেই ভাড়া করা স্টাফ নিয়ে হাসপাতাল চলছে না । মূলত স্বাস্থ্য দফতরের একটি অংশকে রেখে চিকিৎসা পরিষেবা চালু রাখা হয়েছে ।"