শালবনি, 28 মে: শান্তিপূর্ণভাবে ঘাঘর ঘেরা কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল মেদিনীপুরের কুড়মি সম্প্রদায় ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার দাবি জানিয়েছিলেন সম্প্রদায়ের মানুষরা ৷ কিন্তু পুলিশ তাদের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করানোর আশ্বাস দিয়েও 9 ঘণ্টা আটক করে রাখে থানায় বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ মেদিনীপুরের কুড়মি সমাজ। থানা থেকে বেরিয়েই তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন ৷ জানালেন, এর জবাব মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হবে ।
প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার কর্মসূচিতে ঝাড়গ্রামের গড়শালবনিতে তাঁর কনভয় চলে যাওয়ার পর মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর গাড়িতে ইট, পাটকেল ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ ৷ আর এই অভিযোগের তির কুড়মিদের দিকে ৷ আর তা নিয়ে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি । যদিও এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন এবং তারা আরও তৎপর হয়ে ওঠে ।
শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে নবজোয়ার কর্মসূচি ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৷ আর সেখানেও ঘাঘর ঘেরার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন কুড়মি নেতারা। তবে এই ঘাঘর ঘেরাও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নয়, বরং মুখ্যমন্ত্রীকেই শান্তিপূর্ণভাবে দেখানোর কর্মসূচির কথা জানিয়েছিলেন কুড়মি নেতারা। কিন্তু পুলিশ তাদের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করানোর নাম করে বেলা বারোটা থেকে রাত্রি সাড়ে 9টা পর্যন্ত থানায় বসিয়ে রাখে বলে ক্ষোভ। ক্ষুব্ধ কুড়মিরা জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বিভেদের রাজনীতি করছে তা বেশিদিন টিকবে না। এই ছেলেমানুষির জবাব তাঁকে পেতেই হবে ।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে ঘাঘর ঘেরার হুঁশিয়ারি কুড়মি নেতার
শনিবার মেদিনীপুরের কুড়মি নেতা তথা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুমন মাহাতো বলেন, "শুক্রবার যে ঘটনা ঘটেছে তা থেকে স্পষ্ট যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি বা কনভয় কোনওভাবেই ভাঙচুর করা হয়নি। এরপর মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়িতে ঢিল পাথর পড়ে এবং ভাঙচুর হয় । আমাদের কর্মসূচি কিন্তু কোনও মন্ত্রী বা বিধায়ককে নিয়ে ছিল না। তাই যদি থাকতো তাহলে আমরা ঝাড়গ্রামেই তার বাড়ি অথবা অফিসে ঘেরাও করতে পারতাম । এই ঘটনার পেছনে পুলিশই ষড়যন্ত্র রয়েছে এবং এই ঘটনার সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত ।"
ওই দিন শালবনিতে মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদিবাসী ও কুড়মিদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করছে বিজেপি, মন্তব্য সুমন মাহাতোর ৷ এই প্রসঙ্গে সুমন মাহাতো বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছেলেমানুষি করছেন । তিনি বিভেদের রাজনীতি শুরু করেছেন ৷ মণিপুরের প্রসঙ্গ টেনে এনে এই বাংলায় জাতপাতের গণ্ডগোল লাগাচ্ছেন খোদ নিজে ।"
আরও পড়ুন: কুড়মি আন্দোলনের নামে রাজ্যে জাতির মধ্যে অশান্তি বাঁধাতে চায় বিজেপি: মমতা
কুড়মি নেতা রাজেশের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে সুমনের বক্তব্য, একজন নেতাকে ধরে কখনও একটি আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না । এরকম হাজার হাজার রাজেশ মাহাতো রয়েছেন কুড়মিদের কাছে । আগামিদিনে তার জবাব দেওয়া হবে । যদিও আগামি কর্মসূচি কবে থেকে শুরু হবে বা কী হবে, সে প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত জানায়নি কুড়মি সমাজ ।