চন্দ্রকোনা, 16 নভেম্বর: মানবিকতা একেই বলে ৷ সদ্য গেল আলোর উৎসব ৷ সেই আলোতে বাজি ফাটানোর সময় অমানবিক কয়েকজন মানুষ 'অবলা' গুলোর সঙ্গে মজা করে ৷ ওদের লেজে বা গায়ে বাজি ফাটায় ৷ এমনই অমানবিক কিছু ঘটনার মাঝে মানবিকতার এক চরম নিদর্শন উঠে এল পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় ৷
একটি পরিত্যক্ত ও খালি কুয়োর মধ্যে পড়ে গিয়েছিল মা কুকুর ও তার সাতটি ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চা। অবশেষে পাড়া-প্রতিবেশীদের তৎপরতায় ওদের উদ্ধারে নামে দমকল। সবমিলিয়ে কুকুর ছানা ও তার মাকে উদ্ধার ঘিরে হুলস্থুল কাণ্ড। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার কালিকাপুর এলাকার ৷ ঘটনাক্রমে জানা যায়, বুধবার রাতে একটি বন্ধ বাড়ি থেকে সারমেয়র কান্নার আওয়াজ পান পাড়া-প্রতিবেশীরা। তাঁরা জানার চেষ্টা করেন কোথা থেকে এই কান্না আসছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাঁরা দেখতে পান পাশের বন্ধ বাড়ি থেকে ওই কান্নার আওয়াজ আসছে।
মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাড়িটি খোলা হয়। দেখা যায়, বাড়ির ভিতরে প্রায় 15 ফুটের পরিত্যক্ত কুয়োর (জল ছিল না) মধ্যে পড়ে রয়েছে মা কুকুর-সহ তার ছোট বাচ্চারা। এরপরই প্রতিবেশীরা কী করবেন, বুঝে উঠতে পারেন না। তারপর প্রতিবেশীদের একজন উদ্যোগী হয়ে দমকলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে ঘাটাল দমকল বাহিনীর কর্মীরা এসে একে একে সেই মা কুকুরটিকে এবং তার বাচ্চাগুলোকে উদ্ধার করেন ৷
এ বিষয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা মৌমিতা পণ্ডিত বলেন, "গতকাল থেকে আমরা কুকুরের আওয়াজ পাচ্ছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম কোনও একটি কুকুর হয়তো কোথাও আটকে গিয়েছে বা পড়ে গিয়েছে। এরপরই আমরা বাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং তিনি বাড়ির দরজা খুলতেই দেখতে পান একটি কুকুর-সহ সাতটি বাচ্চা কুয়োয় পড়ে রয়েছে। এরপরই সিভিক পুলিশ ও দমকলের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। এটা একটা মানবিকতার নজির বলে আমরা মনে করি। তাছাড়া এই ধরনের পরিত্যক্ত ও জল না-থাকা কুয়ো ঢাকা দেওয়ার আবেদন জানাই।"
এই বিষয়ে দমকল কর্মী স্নেহাশিস খাটিক জানান, স্টাফ মারফত আমরা খবরটা জানতে পারি এবং খবর পেয়ে এসে সারমেয়গুলোকে উদ্ধার করি ৷ তবে সকলকে সুস্থভাবে উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: