মেদিনীপুর, 20 মার্চ: আধার আর প্যান কার্ড লিংক (Aadhaar-PAN Link Harassment) করা নিয়ে আতঙ্কে পশ্চিম মেদিনীপুরের মানুষ । কারণ লিংক করতেই লাগছে 1100 টাকা ৷ আবার মাস ফুরোলেই তা দাঁড়াতে পারে 5 বা 10 হাজার টাকায় ৷ এই লিংক না করালেই নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে প্যান কার্ড । আধার ও প্যান লিংক করাতে কেন এত টাকা লাগবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শাসক ও বিরোধী দলের নেতারা (West Midnapore News)৷
কেন্দ্রের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী এতদিন যাঁরা আধার ও প্যান কার্ড লিংক করাননি, তাঁদের এখন এটি করানোর জন্য 1000 টারা জরিমানা দিতে হচ্ছে ৷ এই নির্দেশিকায় দিশেহারা মেদিনীপুর-সহ জঙ্গলমহলের মানুষজন । ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন প্রত্যেকে ৷ প্যান কার্ড ও আধার কার্ডের সংযুক্তির জন্য সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় এই জরিমানার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷
নয়া নির্দেশিকায় সময়সীমা বাড়ানো হলেও, তার সঙ্গে গ্যাঁটের কড়ি খসাতে হচ্ছে ৷ যে কোনও সাইবার ক্যাফে অথবা অনলাইনে এই আধার ও প্যানের মধ্যে লিংক করতে গেলে তারা নিচ্ছে এক হাজার টাকা ৷ সঙ্গে প্রসেসিং চার্জ হিসেবে কেউ নিচ্ছে 50 টাকা তো কেউ নিচ্ছে 100 টাকা । কেউ আবার 200 টাকাও নিচ্ছেন ।
এত টাকা খরচ করেও লিংক করাতে বাধ্য হচ্ছেন মানুষজন ৷ নইলে আগামী দিনে টাকা লেনদেন করতে পারবেন না গ্রাহকরা ৷ কেন্দ্রের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে, যাঁরা 31 মার্চের পর আধার ও প্যান কার্ডের লিংক করবেন না, তাঁদের আরেকবার সুযোগ দেওয়া হবে । তবে লাগতে পারে পাঁচ হাজার টাকা ৷ পরমিাণটা দশ হাজারও হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে ৷ অথবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে প্যান কার্ড ।
এই নিয়েই চরম হয়রানি ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে জঙ্গলমহল মেদিনীপুরে । লোকজন তাঁদের নিজের কাজকর্ম বাদ দিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আধার ও প্যান কার্ড লিংক করাচ্ছেন ৷ এই নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে জেলার মানুষের মধ্যে ৷
আরও পড়ুন: আরও সরলীকৃত হচ্ছে কেওয়াইসি, প্যান এখন সাধারণ পরিচয়পত্র
এই বিষয়ে বিশ্বনাথ দাস, গৌতম দাস, সুব্রত চক্রবর্তীরা বলেন, "যাঁরা কোটিপতি, বড়লোক, তাঁদের তো কোনও সমস্যা হচ্ছে না ৷ কিন্তু আমাদের মতো খেটে খাওয়া দিন আনা দিন খাওয়া মানুষেরা সমস্যায় পড়ছে । সেই 2016 সাল থেকে তো শুধু লাইনই দিয়ে গেলাম । পেটের জন্য ভাবব নাকি এই লিংক করে করে সরকারের খেসারত দেব ?"
এই বিষয়ে কেন্দ্রকে তীব্র কটাক্ষ করেছে শাসক দল । তৃণমূল জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, "হিটলারি শাসন চলছে । যার জন্য গরিব মানুষরাই বেশি সমস্যায় পড়ছে ।"
যদিও বিজেপির তরফ থেকেও টাকা কমানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে । বিজেপি জেলা মুখপত্র অরূপ দাস বলেন, দেশের উন্নতি করতে হলে একটু কষ্ট করতে হবে । তবে টাকাটা কমানো উচিত । এই বিষয়ে অবশ্যই ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার ।
প্রসেসিং ফি কমানোর দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ী মহল । কনফেডারেশন অফ পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য এডি বর্মন বলেন, "ব্যবসায়ীরা একই সমস্যার কথা বলেছেন কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার অনেক সময়সীমা দিয়েছিল । অনেক মানুষের লিংক এখনও করা হয়নি ৷ টাকা কমানোর দাবি আমাদেরও থাকবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ।"