ETV Bharat / state

Dhaakis in Crisis: বাজারে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও মিউজিক সিস্টেমের রমরমা, সংকটে ঢাকিরা

আধুনিক যন্ত্রপাতি ও মিউজিক সিস্টেমের রমরমায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঢাকের আওয়াজ ৷ পুজোতে সামান্য বায়না পেয়ে সংকটে ঢাকিরা ৷ দিন পরিবর্তনের আশায় দিন গুনছে ঢাকিগ্রাম খেতুয়া ৷

Dhaakis
ঢাকি
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 26, 2023, 7:15 PM IST

আধুনিক যন্ত্রপাতি ও মিউজিক সিস্টেমের রমরমায় সংকটে ঢাকিরা

কেশপুর, 26 সেপ্টেম্বর: বাঙালির পুজো মানেই ঢাক ৷ শ্রেষ্ঠ উৎসব যদি দুর্গাপুজো হয়, তাহলে ঢাক তার অবিচ্ছেদ্য অংশ ৷ ঢাকের আওয়াজেই নেচে ওঠে মন ৷ কিন্তু বদলেছে যুগ ৷ এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং মিউজিক সিস্টেমের রমরমা ৷ তাতেই বেজে চলে ঢাক ৷ ফলে দিনে দিনে বায়না পেতে সমস্যায় পড়ছেন ঢাকিরা ৷

Dhaakis in Crisis
মিউজিক সিস্টেমের রমরমায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঢাকের আওয়াজ

পূর্বপুরুষ ধরে ঢাক বাজিয়ে আসছেন তাঁরা ৷ ঢাকিপাড়া হিসাবেই খ্যাত পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের খেতুয়া গ্রাম ৷ এই গ্রামের ঢাকিরা শুধু জেলা নয়, কলকাতা-সহ জেলার বাইরে এবং ভিন্ন রাজ্যেও ঢাক বাজাতে বায়না ধরেন । পুজোর কটা দিনে যখন সবাই উৎসবে মেতে উঠে তখন পরিবার-পরিজন ছেড়ে ঢাক বাজাতে দূরদূরান্তে পাড়ি দেন তাঁরা । কিন্তু বায়না পেলেও মিলছে না ভালো টাকা ৷ আবার অনেকের ঢাক প্রস্তুত কিন্তু নেই বায়না ৷ সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলেও আর্থিক সহযোগিতা জোটেনি ভাগ্যে, আক্ষেপ ঢাকিদের ৷ ফলে চরম সংকটে রয়েছেন তাঁরা ৷

ঢাকি শুভাশিস রুইদাস বলেন, "প্রতিদিন যেভাবে আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং মিউজিক সিস্টেম বেরোচ্ছে তাতে ঢাকিদের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে অনেক দিন আগেই । যতটুকু প্রয়োজন রয়েছে তার জন্য মানুষ ঢাকিদের অতি অল্প টাকায় বায়না করছে । আর তাতেই আমাদের জীবন জীবিকা নির্ধারণে সমস্যা বাড়ছে । আমরা না পেয়েছি কোন সরকারি সাহায্য ও সুবিধা । না পেয়েছি আর্থিক সাহায্য ৷ তবুও পূর্বপুরুষ ধরে চলে আসা ঢাক এখনও বাজিয়ে চলছি আমরা ।"

Dhaakis in Crisis
সংকটে পড়েছেন ঢাকিরা

অন্যদিকে সুদর্শন ও জয়দেব রুইদাসদের কথায়, " বাবা কাকা জ্যাঠাদের হাত ধরে এই ঢাক বাজানোর তালিম নেওয়া । আমাদের গ্রাম ঢাকিগ্রাম নামে পরিচিত । আমরা অবসর সময়ে চাষবাস করে থাকি । কারণ আগের মতো দিন আর নেই ৷ বর্তমানে ঢাক বাজানোর প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে । যতটুকু প্রয়োজন রয়েছে মানুষের তাতে অল্প টাকায় বায়না করা হচ্ছে ঢাকিদের । তাই আমরা এক প্রান্তেই রয়ে গিয়েছি । যেহেতু অন্য কাজ আমরা শিখিনি তাই এই পেশা আমরা পরিবর্তন করতে পারিনি । আমাদের আশা হয়তো একদিন আবার মিউজিক প্লেয়ার ছেড়ে পুরনো সেই নস্টালজিয়ার ঢাক বাজানো ফিরে আসবে ।"

Dhaakis in Crisis
ঢাকিপাড়া হিসাবেই খ্যাত কেশপুরের খেতুয়া গ্রাম

খেতুয়া গ্রামের প্রায় 27টি পরিবার থাকে ৷ যারা বাবা কাকা, জ্যাঠা -সহ পূর্বপুরুষের আমল ধরে ঢাক বাজিয়ে আসছে । এক সময় ঢাকই ছিল প্রধান বাদ্যযন্ত্র । সেই সময় ঢাক বাজিয়ে টাকা রোজগার করে সংসার চালত পরিবারগুলির । মূলত সমাজ থেকে পিছিয়ে পড়া এই পরিবারের মূল আয়ের উৎসই ঢাক বাজানো । সেই সময় ঢাকের চাহিদাও ছিল সর্ব ত্র। পুজো পার্বণ-সহ বিভিন্নরকম অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও সর্বপ্রথম প্রয়োজনীয়তা ছিল ঢাক । কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢাকের জায়গায় দখল নিয়েছে বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র-সহ বাদ্যযন্ত্র । এর ফলে ধিরে ধিরে চাহিদা কমেছে ঢাকিদের ৷

আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিতে ভুট্টার বিভিন্ন অংশ দিয়ে মাতৃমূর্তি তৈরি করছেন অবসরপ্রাপ্ত হোমগার্ড

ইন্সট্রুমেন্ট মিউজিক প্লেয়ার ছেড়ে আবারও মানুষজন ঢাকিদের শুনবে ৷ সেই নস্টালজিয়ার ঢাক বাজানোর দিন ফিরে আসবে । ফের রমরমা বাজার হবে ঢাকিদের, মিলবে বেশি টাকার বায়না ৷ দিন বদলের আশায় দিন গুনছে ঢাকিগ্রাম ৷

আধুনিক যন্ত্রপাতি ও মিউজিক সিস্টেমের রমরমায় সংকটে ঢাকিরা

কেশপুর, 26 সেপ্টেম্বর: বাঙালির পুজো মানেই ঢাক ৷ শ্রেষ্ঠ উৎসব যদি দুর্গাপুজো হয়, তাহলে ঢাক তার অবিচ্ছেদ্য অংশ ৷ ঢাকের আওয়াজেই নেচে ওঠে মন ৷ কিন্তু বদলেছে যুগ ৷ এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং মিউজিক সিস্টেমের রমরমা ৷ তাতেই বেজে চলে ঢাক ৷ ফলে দিনে দিনে বায়না পেতে সমস্যায় পড়ছেন ঢাকিরা ৷

Dhaakis in Crisis
মিউজিক সিস্টেমের রমরমায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঢাকের আওয়াজ

পূর্বপুরুষ ধরে ঢাক বাজিয়ে আসছেন তাঁরা ৷ ঢাকিপাড়া হিসাবেই খ্যাত পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের খেতুয়া গ্রাম ৷ এই গ্রামের ঢাকিরা শুধু জেলা নয়, কলকাতা-সহ জেলার বাইরে এবং ভিন্ন রাজ্যেও ঢাক বাজাতে বায়না ধরেন । পুজোর কটা দিনে যখন সবাই উৎসবে মেতে উঠে তখন পরিবার-পরিজন ছেড়ে ঢাক বাজাতে দূরদূরান্তে পাড়ি দেন তাঁরা । কিন্তু বায়না পেলেও মিলছে না ভালো টাকা ৷ আবার অনেকের ঢাক প্রস্তুত কিন্তু নেই বায়না ৷ সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলেও আর্থিক সহযোগিতা জোটেনি ভাগ্যে, আক্ষেপ ঢাকিদের ৷ ফলে চরম সংকটে রয়েছেন তাঁরা ৷

ঢাকি শুভাশিস রুইদাস বলেন, "প্রতিদিন যেভাবে আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং মিউজিক সিস্টেম বেরোচ্ছে তাতে ঢাকিদের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে অনেক দিন আগেই । যতটুকু প্রয়োজন রয়েছে তার জন্য মানুষ ঢাকিদের অতি অল্প টাকায় বায়না করছে । আর তাতেই আমাদের জীবন জীবিকা নির্ধারণে সমস্যা বাড়ছে । আমরা না পেয়েছি কোন সরকারি সাহায্য ও সুবিধা । না পেয়েছি আর্থিক সাহায্য ৷ তবুও পূর্বপুরুষ ধরে চলে আসা ঢাক এখনও বাজিয়ে চলছি আমরা ।"

Dhaakis in Crisis
সংকটে পড়েছেন ঢাকিরা

অন্যদিকে সুদর্শন ও জয়দেব রুইদাসদের কথায়, " বাবা কাকা জ্যাঠাদের হাত ধরে এই ঢাক বাজানোর তালিম নেওয়া । আমাদের গ্রাম ঢাকিগ্রাম নামে পরিচিত । আমরা অবসর সময়ে চাষবাস করে থাকি । কারণ আগের মতো দিন আর নেই ৷ বর্তমানে ঢাক বাজানোর প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে । যতটুকু প্রয়োজন রয়েছে মানুষের তাতে অল্প টাকায় বায়না করা হচ্ছে ঢাকিদের । তাই আমরা এক প্রান্তেই রয়ে গিয়েছি । যেহেতু অন্য কাজ আমরা শিখিনি তাই এই পেশা আমরা পরিবর্তন করতে পারিনি । আমাদের আশা হয়তো একদিন আবার মিউজিক প্লেয়ার ছেড়ে পুরনো সেই নস্টালজিয়ার ঢাক বাজানো ফিরে আসবে ।"

Dhaakis in Crisis
ঢাকিপাড়া হিসাবেই খ্যাত কেশপুরের খেতুয়া গ্রাম

খেতুয়া গ্রামের প্রায় 27টি পরিবার থাকে ৷ যারা বাবা কাকা, জ্যাঠা -সহ পূর্বপুরুষের আমল ধরে ঢাক বাজিয়ে আসছে । এক সময় ঢাকই ছিল প্রধান বাদ্যযন্ত্র । সেই সময় ঢাক বাজিয়ে টাকা রোজগার করে সংসার চালত পরিবারগুলির । মূলত সমাজ থেকে পিছিয়ে পড়া এই পরিবারের মূল আয়ের উৎসই ঢাক বাজানো । সেই সময় ঢাকের চাহিদাও ছিল সর্ব ত্র। পুজো পার্বণ-সহ বিভিন্নরকম অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও সর্বপ্রথম প্রয়োজনীয়তা ছিল ঢাক । কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢাকের জায়গায় দখল নিয়েছে বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র-সহ বাদ্যযন্ত্র । এর ফলে ধিরে ধিরে চাহিদা কমেছে ঢাকিদের ৷

আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিতে ভুট্টার বিভিন্ন অংশ দিয়ে মাতৃমূর্তি তৈরি করছেন অবসরপ্রাপ্ত হোমগার্ড

ইন্সট্রুমেন্ট মিউজিক প্লেয়ার ছেড়ে আবারও মানুষজন ঢাকিদের শুনবে ৷ সেই নস্টালজিয়ার ঢাক বাজানোর দিন ফিরে আসবে । ফের রমরমা বাজার হবে ঢাকিদের, মিলবে বেশি টাকার বায়না ৷ দিন বদলের আশায় দিন গুনছে ঢাকিগ্রাম ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.