ঘাটাল, 19 জুন: তাঁদের বাড়ির মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুন করেছে এই অভিযোগ তুলে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে হাসপাতালে দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখাল মৃতার পরিবার ৷ ঘটনাস্থলে গেলে ঘাটালের বিডিও এবং দাসপুর থানার ওসিকেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে ঘাটাল থানার অজবনগর গ্রামের বাসিন্দা সাথী মাইতি(24) সঙ্গে দাসপুর থানার সুকুমার মাইতির বিয়ে হয়েছিল। মেয়ের মা জানিয়েছেন, তাঁদের আর্থিক পরিস্থিতি ছেলের বাড়ির তুলনায় অনেকটাই। অভিযোগ, এই কারণে বিয়ের পর থেকেই অশান্তি লেগে থাকত। এই প্রসঙ্গে মৃতার মা বলেন, "বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে মারধর করত।"
জানা যায়, শনিবার দুপুর নাগাদ মেয়ের বাপের বাড়িতে একটি নতুন নম্বর থেকে ফোন যায় ৷ ফোনে করে বলা হয় তাঁদের মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি দাসপুর থানার গোপীনাথপুর মেয়ের বাড়িতে ছুটে আসেন মেয়ের বাপের বাড়ির লোকজন। সেখানে গিয়ে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ৷ জানতে পারেন যে তাঁদের মেয়ের দেহ দাসপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তারপর গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ দাসপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানায় মেয়ের বাপের বাড়ির সদস্যরা। অভিযোগ তাঁদের মেয়েকে খুন করেছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য দাসপুর পুলিশ, ঘাটাল হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এরপর রবিবার বিকেল নাগাদ ঘাটাল হাসপাতালে পৌঁছন বিডিও সঞ্জীব কুমার দাস ও দাসপুর থানার ওসি অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মেয়ের বাড়ির লোকজন ৷ তাঁদের দাবি, যতক্ষণ না পর্যন্ত মেয়ের শ্বশুর-শাশুড়ি ও জাকে পুলিশ গ্রেফতার করছে, ততক্ষণ দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে না।
আরও পড়ুন: ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ও দেড় বছরের কন্যাকে খুনের অভিযোগে আটক ব্যক্তি
মেয়ের মা চন্দনা মাইতি বলেন, "বিয়ের পর থেকেই অশান্তি ছিল ৷ ছেলের বাড়ির তুলনায় আমরা গরিব ছিলাম। বিয়েতে যৌতুক হিসেবে যথাসাধ্য দেওয়ার পরও মেয়ের প্রতি অত্যাচার করত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বহুবার এ নিয়ে আমরা আলোচনায় বসার চেষ্টাও করেছি। কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি। সম্প্রতি বাড়িতে গণ্ডগোল হয়েছিল ৷ তাঁরা আমার মেয়েকে মারধরও করেছিল ৷ আমরা শ্বশুর-শাশুড়ি এবং জায়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।" ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷