দুর্গাপুর, 22 এপ্রিল : ওঁদের মধ্যে কেউ স্যানিটাইজ়ার হাতে নিয়ে মাথায় মাখলেন । কেউ আবার সুগন্ধি স্যানিটাইজ়ার গায়ে মেখে ফেললেন । আবার কেউ কেউ স্যানিটাইজ়ার হাতে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ দুই হাতেই ঘষলেন । দুই নম্বর জাতীয় সড়ক সহ বিভিন্ন রাস্তায় উড়ালপুলের নিচে ওঁদের আশ্রয় । লকডাউনে এই মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষগুলো কেমন আছেন ? দুর্গাপুরের দুই যুবক হারাধন সরকার ও বিদ্রোহী চট্টোপাধ্যায় কাঁকসা থানার রাজবাঁধ থেকে অন্ডাল পর্যন্ত এরকম কয়েকজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের হাতে খাবার তুলে দিলেন । ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদেরও 10 দিন ধরে ঠান্ডা পানীয় এবং টিফিন পরিবেশন করছেন হারাধন এবং বিদ্রোহী ।
লকডাউনের ফলে রাস্তার ধারের সমস্ত দোকানপাট, হোটেল বন্ধ । এই সমস্ত ধাবা, হোটেল বন্ধ থাকার কারণে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো ভবঘুরেদের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে । বিশেষ করে যাঁরা মানসিক ভারসাম্যহীন তাঁরা খাবার পাচ্ছেন না । দুই নম্বর জাতীয় সড়কসহ বিভিন্ন রাস্তার উড়ালপুলের নিচে অথবা রাস্তার পাশে গাছের নিচে তাঁরা বসে আছেন । কেউ হয়ত একদিন খাননি বা কেউ তারও বেশিদিন অভুক্ত । তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন হারাধন এবং বিদ্রোহী । লকডাউন চলাকালীন গতকাল কাঁকসা থানা এলাকার রাজবাঁধ থেকে অন্ডাল থানা এলাকা পর্যন্ত রাস্তার পাশে বসে থাকা মানুষের হাতে প্রথমে স্যানিটাইজ়ার দিলেন তাঁরা । তারপর তাঁদের হাতে তুলে দিলেন খাবারের প্যাকেট । অনেকেই জানেন না স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার । তাই কাউকে দেখা গেল, মাথায় মাখতে , কেউ বা আবার গোটা গায়ে মাখলেন, আবার কেউ কেউ দুই হাতে স্যানিটাইজ়ার মাখলেন । আর খাবারের প্যাকেট হাতে পেয়ে তাঁদের মুখে হাসি ।
এই দুই যুবক 10 দিন ধরে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীসহ সাফাই কর্মীদের ঠান্ডা পানীয় যোগান দিয়ে যাচ্ছেন । হারাধন সরকার এই বিষয়ে বলেন , “শুধু সরকার প্রচেষ্টা চালালে হবে না । এই দুঃসময়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে । এমন ভাবনা থেকেই আমাদের বেরিয়ে পড়া । মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে ভালো লাগছে ।”