মাইথন, 11 নভেম্বর: কমনওয়েলথ ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় (Commonwealth Powerlifting Championship) 6টি সোনার পদক জিতেছেন দুর্গাপুরের সীমা দত্ত চট্টোপাধ্যায় (Sima Dutta Chatterjee) ৷ তিনি শুধু নন, এই প্রতিযোগিতায় 4টি সোনা, 3টি রূপো ও একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন অংশু সিং'ও (Anshu Singh) । এই দু'জন কৃতি খেলোয়াড় নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড থেকে সোনা জিতে আসার পর খুশির হাওয়া শিল্পাঞ্চলে ।
তবে তাঁদের জয়ের নেপথ্যে ছাতার মতো ছিলেন একজন ব্যক্তি । সীমা এবং অংশুকে আর্থিক ও মানসিক ভরসা যুগিয়েছেন সবসময় ৷ তিনি হলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি তথা মাইথন অ্যালয়সের কর্ণধার সুভাষ আগরওয়াল । শুক্রবার সন্ধ্যায় মাইথন অ্যালয়স কারখানাতেই দুই কৃতীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় । দু'জনের হাতে তুলে দেওয়া হয় 51 হাজার টাকার চেক । এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ-সহ আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা ।
এদিন সোনাজয়ের কথা বলতে গিয়ে বারবার আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন সীমা এবং অংশু। বারবারই শোনা গিয়েছে সুভাষ আগরওয়ালের নাম তাদের গলায়। সীমা দত্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "শুধু আর্থিকভাবে সহযোগিতা নয়, সুভাষ বাবু আমাদের মানসিকভাবেও বুস্ট-আপ করে রেখেছিলেন ৷ তাঁকে অভিভাবক হিসেবে পাওয়া আমাদের কাছে ঈশ্বরের আশীর্বাদ ।" অভিজ্ঞতার কথা বলার সময় সীমা আরও বলেন, "আবহাওয়া পালটানোর জন্য আমার অকল্যান্ডে প্রচন্ড শরীর খারাপ হয়ে যায় । প্রায় গেম থেকে সরে আসার কথা ভেবেছিলাম । কিন্তু সুভাষ বাবু আমাকে বারবার উৎসাহিত করে গিয়েছেন । এমনকী গভীর রাতে ফোন করে খবরা খবর নিতেন ।"
আরও পড়ুন: ঝুলিতে 6টি স্বর্ণপদক, সীমা ফিরতেই উচ্ছ্বাসে মাতলেন দুর্গাপুরবাসী
অংশু সিং বলেন, "আমার অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন স্বচ্ছল ছিল না । স্যরের সহযোগিতা ছাড়া হয়তো কমনওয়েলথ ভারোত্তলন প্রতিযোগিতায় যেতেই পারতাম না । আমাদের দেশে এরকম বহু খেলোয়াড় আছেন, যারা যোগ্য হয়ে সঠিক সহায়তা পায় না বলে তাদের স্বপ্ন ভেঙে যায় । আমার বলার ভাষা নেই এতটাই আমরা কৃতজ্ঞ ।"
জানা গিয়েছে, সুভাষ আগরওয়াল এর আগে 6 জন বক্সারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন । এছাড়াও নানান সমাজসেবার সঙ্গে তিনি যুক্ত । সুভাষ আগরওয়াল বলেন, " আমি ভালো ছেলে-মেয়ে খুঁজি । যাদের মধ্যে সম্ভাবনা রয়েছে । শুধু আর্থিকভাবে সহযোগিতা করলেই হয় না । সবরকমভাবে তাদের পাশে থাকতে হয় । আমি সবসময় আছি এমন প্রতিভাবানদের পাশে ।"
আরও পড়ুন: কমনওয়েলথ ভারোত্তলন প্রতিযোগিতায় পাড়ি দুর্গাপুরের সোনার মেয়ের
পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ বলেন, "এই শিল্পাঞ্চলে প্রচুর শিল্পপতি রয়েছেন । তাঁরা এভাবেই ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে উদ্যোগী হয়ে এগিয়ে আসতে চাইলে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন তাঁদের সবসময় সহযোগিতা করবে ।"