ETV Bharat / state

আদিবাসীদের বাঁধনা পরব জমে ওঠে মাংসের পিঠের আস্বাদে

author img

By

Published : Jan 13, 2021, 10:26 PM IST

গোবর দিয়ে নিকোনো দেওয়ালে নানা কারুকার্য করা হয় । কেউ মাটি দিয়ে কেউ বা নানান রং দিয়ে ঘর সাজান ৷ তৃতীয় দিনের বিকেল থেকেই শুরু হয় নাচ-গান ।

আদিবাসীদের বাঁধনা পরব জমে ওঠে মাংসের পিঠের আস্বাদে
আদিবাসীদের বাঁধনা পরব জমে ওঠে মাংসের পিঠের আস্বাদে

আসানসোল, 13 জানুয়ারি : প্রাচীন জনজাতিদের আদিম উৎসবে কত নিয়ম-কানুন এবং সংস্কৃতির মিশেল । আদিবাসীদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব বাঁধনা পরব বা সহরায় উৎসব ৷ পৌষ মাসের শেষ পাঁচ দিন নাচে গানে বাঁধনা উৎসবে মেতে থাকেন আদিবাসীরা । যার অন্যতম মূল আকর্ষণ মাংসের পিঠে বা পাতরি পিঠে ।

শিল্পশহর বার্নপুরের একেবারে প্রান্তিক অঞ্চল দামোদর নদীর ধারের হারামডি গ্রাম । আর এই গ্রামে বাঁধনা পরব বা সহরায় উৎসবে মেতে উঠেছে সেখানকার আদিবাসীরা । পৌষ মাসের শেষ পাঁচ দিন নাচে-গানে আনন্দে এবং আধ্যাত্মিক উৎসবের মাধ্যমে এই বাঁধনা পরব পালিত হয় আদিবাসী সমাজে । কীভাবে পালিত হয় এই বাঁধনা পরব ?

আদিবাসী সমাজের নেতা মতিলাল সরেন জানিয়েছেন, "পাঁচ দিন ধরে চলে এই উৎসব । উৎসবের প্রথম দিন নিজেদের শুদ্ধ করে নেওয়ার পালা । ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে, স্নান করে এই উৎসবের সূচনা করা হয় । প্রাচীনকালে কৃষি কাজের সময় গবাদিপশুরা রুষ্ট হয়ে আদিবাসী সমাজ ছেড়ে পালাত । আর সেই গবাদি পশুদের ফিরিয়ে আনার জন্য দেবতার আরাধনা করা হত । এই উৎসবের এটাই আধ্যাত্বিক চিন্তাধারা ।" তিনি আরও জানান, "উৎসবের দ্বিতীয়দিন গ্রামের এক প্রান্তে গিয়ে পুজাে করার পাশাপাশি বাড়ির গবাদি পশুদের তিনদিন ধরে পরিচর্যা করা হয় । গা ধোয়ানো থেকে পায়ে জল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান হয় । তেল মাখানো হয় সিংয়ে ।"

আরও পড়ুন : কোরোনা আতঙ্ক কাটিয়েই বাবুঘাটে গঙ্গাসাগর মেলায় ভিড়

এর পাশাপাশি চলে ঘর সাজানোর কাজ । গোবর দিয়ে নিকোনো দেওয়ালে নানান কারুকার্য করা হয় । কেউ মাটি দিয়ে কেউ বা নানান রং দিয়ে ঘর সাজান ৷ তৃতীয় দিনের বিকেল থেকেই শুরু হয় নাচ-গান । চতুর্থ দিনের সারাদিন এবং পঞ্চম দিন অর্থাৎ পৌষ সংক্রান্তির দিন এই উৎসবের শেষ লগ্নে আনন্দে উচ্ছাসে মেতে ওঠে আদিবাসীরা । একদিকে যেমন আধ্যাত্বিক চিন্তাভাবনা রয়েছে এই উৎসবে । পাশাপাশি রয়েছে আনন্দ-উচ্ছ্বাস । আছে বিশেষ বিশেষ খাবার। এই উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ হলো মাংসের পিঠে । পৌষ সংক্রান্তি ও মকর সংক্রান্তিতে পিঠে পুলি উৎসব প্রচলিত রয়েছে । আদিবাসীদের মধ্যে এই সহরায় বা বাঁধনা পরবের আকর্ষণ হল মাংসের পিঠে । দেশি মুরগির মাংসের সঙ্গে মেশানো হয় চালগুড়ো । তারপর দুটি শাল পাতার মধ্যে মিশ্রনকে রেখে আগুনের উপর পাত্র দিয়ে সেঁকে ফেলা হয় । ব্যস তৈরি হয়ে যায় মাংসের পিঠে । যেহেতু শাল পাতা দিয়ে তৈরি হয় তাই একে পাতরি পিঠেও বলা হয় । বছরে একমাত্র বাঁধনা উৎসবেই তৈরি হয় এই পিঠে । আট থেকে আশি সবারই পছন্দ ।

পরব জমে ওঠে মাংসের পিঠের আস্বাদে

আদিবাসী সমাজে নতুন দিন এসেছে । মাটির ঘরের পাশে পাকা দালান তৈরি হয়েছে । আদিবাসী ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করছে ৷ চাকরি করছে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের উঁচু পদে । কিন্তু প্রাচীন এই উৎসব ঐতিহ্য এখনও বহন করে চলেছে আদিবাসীরা । কারণ এই উৎসবে তাঁরা মাটির টান খুঁজে পান ।

আসানসোল, 13 জানুয়ারি : প্রাচীন জনজাতিদের আদিম উৎসবে কত নিয়ম-কানুন এবং সংস্কৃতির মিশেল । আদিবাসীদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব বাঁধনা পরব বা সহরায় উৎসব ৷ পৌষ মাসের শেষ পাঁচ দিন নাচে গানে বাঁধনা উৎসবে মেতে থাকেন আদিবাসীরা । যার অন্যতম মূল আকর্ষণ মাংসের পিঠে বা পাতরি পিঠে ।

শিল্পশহর বার্নপুরের একেবারে প্রান্তিক অঞ্চল দামোদর নদীর ধারের হারামডি গ্রাম । আর এই গ্রামে বাঁধনা পরব বা সহরায় উৎসবে মেতে উঠেছে সেখানকার আদিবাসীরা । পৌষ মাসের শেষ পাঁচ দিন নাচে-গানে আনন্দে এবং আধ্যাত্মিক উৎসবের মাধ্যমে এই বাঁধনা পরব পালিত হয় আদিবাসী সমাজে । কীভাবে পালিত হয় এই বাঁধনা পরব ?

আদিবাসী সমাজের নেতা মতিলাল সরেন জানিয়েছেন, "পাঁচ দিন ধরে চলে এই উৎসব । উৎসবের প্রথম দিন নিজেদের শুদ্ধ করে নেওয়ার পালা । ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে, স্নান করে এই উৎসবের সূচনা করা হয় । প্রাচীনকালে কৃষি কাজের সময় গবাদিপশুরা রুষ্ট হয়ে আদিবাসী সমাজ ছেড়ে পালাত । আর সেই গবাদি পশুদের ফিরিয়ে আনার জন্য দেবতার আরাধনা করা হত । এই উৎসবের এটাই আধ্যাত্বিক চিন্তাধারা ।" তিনি আরও জানান, "উৎসবের দ্বিতীয়দিন গ্রামের এক প্রান্তে গিয়ে পুজাে করার পাশাপাশি বাড়ির গবাদি পশুদের তিনদিন ধরে পরিচর্যা করা হয় । গা ধোয়ানো থেকে পায়ে জল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান হয় । তেল মাখানো হয় সিংয়ে ।"

আরও পড়ুন : কোরোনা আতঙ্ক কাটিয়েই বাবুঘাটে গঙ্গাসাগর মেলায় ভিড়

এর পাশাপাশি চলে ঘর সাজানোর কাজ । গোবর দিয়ে নিকোনো দেওয়ালে নানান কারুকার্য করা হয় । কেউ মাটি দিয়ে কেউ বা নানান রং দিয়ে ঘর সাজান ৷ তৃতীয় দিনের বিকেল থেকেই শুরু হয় নাচ-গান । চতুর্থ দিনের সারাদিন এবং পঞ্চম দিন অর্থাৎ পৌষ সংক্রান্তির দিন এই উৎসবের শেষ লগ্নে আনন্দে উচ্ছাসে মেতে ওঠে আদিবাসীরা । একদিকে যেমন আধ্যাত্বিক চিন্তাভাবনা রয়েছে এই উৎসবে । পাশাপাশি রয়েছে আনন্দ-উচ্ছ্বাস । আছে বিশেষ বিশেষ খাবার। এই উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ হলো মাংসের পিঠে । পৌষ সংক্রান্তি ও মকর সংক্রান্তিতে পিঠে পুলি উৎসব প্রচলিত রয়েছে । আদিবাসীদের মধ্যে এই সহরায় বা বাঁধনা পরবের আকর্ষণ হল মাংসের পিঠে । দেশি মুরগির মাংসের সঙ্গে মেশানো হয় চালগুড়ো । তারপর দুটি শাল পাতার মধ্যে মিশ্রনকে রেখে আগুনের উপর পাত্র দিয়ে সেঁকে ফেলা হয় । ব্যস তৈরি হয়ে যায় মাংসের পিঠে । যেহেতু শাল পাতা দিয়ে তৈরি হয় তাই একে পাতরি পিঠেও বলা হয় । বছরে একমাত্র বাঁধনা উৎসবেই তৈরি হয় এই পিঠে । আট থেকে আশি সবারই পছন্দ ।

পরব জমে ওঠে মাংসের পিঠের আস্বাদে

আদিবাসী সমাজে নতুন দিন এসেছে । মাটির ঘরের পাশে পাকা দালান তৈরি হয়েছে । আদিবাসী ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করছে ৷ চাকরি করছে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের উঁচু পদে । কিন্তু প্রাচীন এই উৎসব ঐতিহ্য এখনও বহন করে চলেছে আদিবাসীরা । কারণ এই উৎসবে তাঁরা মাটির টান খুঁজে পান ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.