সালানপুর, 22 জুন: মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে না-চেয়ে শাসকদলের হুমকির ভয়ে 28 দিনের শিশুকে নিয়ে গোপন ডেরায় লুকিয়ে ছিলেন বিজেপির এক দম্পতি প্রার্থী। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, সালানপুরে তৃণমূল নেতা ভোলা সিংয়ের সন্ত্রাসের ভয়ে এই দম্পতি নিরাপদ স্থানে লুকিয়ে রয়েছে। ইটিভি ভারতে সেই খবর প্রকাশ হয়। এবার সেই ঘটনা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন, সালানপুরের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা ভোলা সিং। তিনি জানালেন ছোট্ট শিশুকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে বিজেপি। ওরাই প্রার্থীদের বন্দি করে রেখেছিল জেলা পার্টি অফিসে।
গত মঙ্গলবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিনে আদিবাসী এক দম্পতি তাঁদের 28 দিনের শিশুকে নিয়ে আসানসোলে জেলা বিজেপি দলীয় অফিসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। শুধু তারাই নয়, আরও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রার্থীরা এসে জেলা দলীয় অফিসে ছিলেন। শাসকের হুমকির ভয়ে প্রার্থীরা যাতে মনোনয়ন প্রত্যাহার না-করে নিতে পারেন সে কারণেই বিজেপির পক্ষ থেকে তাঁদেরকে নিরাপদ আশ্রয় রাখা হয়েছিল। সেখানেই সুনিতা কিস্কু ও সুভাষ কিস্কু তাঁদের 28 দিনের সন্তানকে আগলে রেখে জানান, সালানপুরের দেন্দুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তাঁরা প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু তৃণমূল হুমকি দিচ্ছে তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য। কিন্তু তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন না। আর সেই কারণেই বিজেপি দলীয় অফিসে তাঁরা লুকিয়ে ছিলেন।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে ধাক্কা, ভোটে আরও 800 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল কমিশন
বর্তমানে সব প্রার্থীরাই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। নতুন করে আর হুমকি বা অশান্তির খবর আসেনি। বারাবনি বিধানসভার তৃণমূল নেতা কৌশিক চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, সালানপুরের তৃণমূল নেতা ভোলা সিংয়ের নেতৃত্বেই বাড়ি গিয়ে প্রার্থীদের হুমকি দিচ্ছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। এবার সেই ঘটনা নিয়ে ভোলা সিং নিজে মুখ খুললেন। প্রসঙ্গত, এই ভোলা সিংয়ের নেতৃত্বে বিডিও অফিসের বাইরে মনোনয়ন করার দিনে বিরোধী প্রার্থীদের গোলাপ ফুল এবং ঠান্ডা জলের বোতল দেওয়া হয়েছিল। তার বিরুদ্ধেই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল।
বিষয়টি নিয়ে ভোলা সিংয়ের সহাস্য মন্তব্য "বিজেপি পাড়া গরম করবার জন্য এসব করছে। ওরা মাঝে মাঝে বিল থেকে বেরিয়ে আসে। ভোট পেরিয়ে গেলে আবার বিলের মধ্যে ঢুকে পড়বে।" 28 দিনের শিশুকে নিয়ে আদিবাসী দম্পতির প্রসঙ্গ উঠতে ভোলা সিং বলেন, "শিশুকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি বিজেপি করতে পারে। আমরা পারি না। আমি চাইলেও এখানে একজন প্রার্থীকে বসিয়ে রেখে দিতে পারতাম। কিন্তু আমরা সেসব করি না। আমি ওই প্রার্থীকে কখনও চোখেই দেখিনি। চিনিই না। আর বিজেপিই তো সমস্ত প্রার্থীদের বন্দি করে জেলা পার্টি অফিসে লুকিয়ে রেখেছিল। সেখান থেকে বেরিয়ে এসেও একজন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছে। ওরা প্রার্থীদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে।"
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিয়ালদা স্টেশনে প্রচারে কুণাল