দুর্গাপুর, 16 জুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত উত্তর থেকে দক্ষিণ। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। অভিযোগের তীর শাসকদলের দিকে। কাঁকসার বিদবিহারের ইঁটেডাঙা ও শশীপুরের সিপিআইএম মনোনীত প্রার্থীদের হুমকির অভিযোগ। মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে ঘর-বাড়ি লুটপাট চালানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ শাসকদলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে দুই প্রার্থী কাজল ডোম ও স্বপন ডোমকে দফায় দফায় হুমকি দেওয়ার অভিযোগ বিদবিহারের তৃণমূল নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে। পুলিশের শরনাপন্ন প্রার্থীরা ৷
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষ হতেই হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে সিপিআইএমের প্রার্থীদের। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ভর সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত শাসকদলের নেতা কর্মীরা সিপিআইএম প্রার্থীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়েছেন ৷ "প্রার্থী পদ যদি প্রত্যাহার না করে নিস, তাহলে বাড়ির মেয়েরা সুরক্ষিত থাকবে না। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।" এমন ভাষাতেই হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ সিপিএম প্রার্থীদের ৷
ঘটনায় শুক্রবার বেলা সাড়ে 11টা নাগাদ কাঁকসার মলানদিঘি ফাঁড়িতে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বামেরা ৷ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি বাম নেতৃত্বদের। সিপিআইএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক মণ্ডলী সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের নেতৃত্বে মলানদিঘি পুলিশ ফাঁড়ির সামনে সিপিআইএম প্রার্থী ও সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। প্রার্থীদের নিরাপত্তার দাবি-সহ পঞ্চায়েত ভোট সুষ্ঠু ও অবাধ করার দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে পুলিশের কাছে।
পঙ্কজ জয় সরকার বলেন, "আমরা তফশিলি কমিশনের কাছে, রাজ্য মহিলা কমিশনের কাছে এবং অবশ্যই ঠুঁটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনের কাছেও অভিযোগ জানাবো। গ্রামের এই মানুষরা ঘুরে দাঁড়িয়েছে আর এটা বুঝতে পেরেই শাসক দল ভয় পেয়েছে। তাই তাঁরা এখন চাইছেন তাঁদের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাতে জয় লাভ করে। সেটা এবার এখানে হবে না। মানুষকে ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।"
আরও পড়ুন: ঐক্য ভেঙে উত্তরের দুই জেলার পঞ্চায়েত ভোটে সম্মুখসমরে সিপিএম ও আরএসপি
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, রাজ্যে রাজনৈতিক তাপ-উত্তাপ তত বাড়বে ৷ শুধু ভাঙড় কিংবা চোপড়া নয়, জেলায় জেলায় দেখা গিয়েছে অশান্তির বাতাবরণ। হাইকোর্টের পক্ষ থেকে সমস্ত জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশিকা জারি হয়েছে। তবে বিরোধীদের ভরসা পুলিশ কিংবা কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়, তাঁদের ভরসা গ্রামের সাধারণ মানুষেরাই এবার রুখে দাঁড়াবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে।