দুর্গাপুর, 1 মে: আজ, সোমবার, ঐতিহাসিক মে দিবস । শ্রমিকদের দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে এই দিনে শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাস আজও আলোচিত । সেই ইতিহাসের নিরিখে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার শপথ গ্রহণের দিন আজ । সারা বিশ্বের সঙ্গে এই বিশেষ দিনে এরাজ্যেও ঘটা করে ডান-বাম সব পক্ষই 'মে দিবস' পালন করেছে ।
শ্রমিক অধিকার রক্ষার এই বিশেষ দিনে এক অনন্য ছবি ধরা পরল পশ্চিম বর্ধমান জেলার লাউদোহা ফরিদপুর ব্লকের মাঝিপাড়া এলাকায় । একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের সম্মানিত করা হল এদিন, তবে একটু অন্যভাবে । যাঁরা দিনমজুর, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রতিদিনের জীবন সংগ্রামে জড়িয়ে সেই সমস্ত শ্রমিকদের পা ধুয়ে দিয়ে তাঁদের গলায় উত্তরীয় পরিয়ে হাতে পুষ্পস্তবক, মিষ্টির প্যাকেট দিয়ে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয় । শ্রমিকদের পা ধুয়ে নতুন চটি পরিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের ৷
ওরা দিনমজুর । ওরা জানেন না মে দিবসের তাৎপর্য । ওরা জানেন না শ্রমিকদের সম্মান কী ? তাই এদিন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে এরকম একটি অনুষ্ঠান করে তাঁদের পা ধুয়ে দিয়ে এতটা সম্মানিত করা হবে একথা বোধ হয় মাঠে-ঘাটে খেটে খাওয়া ওই শ্রমিকরা জানতেনই না । জ্যোতি দেবী, পুনম কুমারী, সারবান নুনিয়া-সহ বহু শ্রমিক প্রতিদিন সংগ্রাম করেন দিন গুজরানের জন্য । সামান্য আয়ের জন্য বৈশাখের তপ্ত দুপুরে কিম্বা শীতের হাড় হীম করা সকালে অথবা অবিরাম বর্ষায় নিজেদের শরীরকে জলে ভিজিয়ে সামান্য অর্থ উপার্জনের তাগিদে এরা ছুটে বাড়ান ।
আজ মে দিবসের দিনে তাই এরকম দিনমজুরদের অনন্য সম্মান প্রদান দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকে । কাঁসার থালার মধ্যে পা ডুবিয়ে সেই পা জল দিয়ে ধুইয়ে দিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা । জ্যোতিদেবী, পুনম কুমারীদের কথায়,"আমরা এরকম সম্মান পাবো কোনওদিন আশা করিনি । উদ্যোক্তাদের কি বলে ধন্যবাদ দেব জানি না । আমরা দিনমজুর । সামান্য অর্থের জন্য আমরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করি । আমাদের খোঁজ কেউ রাখেন না । এরকম সম্মান পেয়ে আমরা খুব খুশি । "
আরও পড়ুন: রাস্তার দাবিতে দেওয়াল লিখন, পোস্টার ঝুলিয়ে ভোট বয়কটের ডাক গ্রামবাসীদের
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অন্যতম প্রধান কুলদীপ কুমার সিং জানালেন, ঐতিহাসিক মে দিবসের দিনে এলাকার বেশ কয়েকজন দিনমজুরকে সম্মানিত করতে পেরে তাঁরাও গর্বিত । দেশের উন্নয়নে তাঁদের অবদান সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এদের কথা কেউ মনে রাখেন না সেটাই দুঃখের ৷