কুলটি, 16 মে : বাড়িতে কয়েকদিন আগে মৃত্যু ঘটেছে ৷ দুঃখের পরিবেশ ৷ এই দুঃখেও মানবতার ডাক আসানসোলের কুলটির মিঠানি গ্রামে ৷ স্বর্গীয় নীলমণি চট্টোপাধ্যায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে পরিবারের লোকেরা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে নজির সৃষ্টি করলেন । আয়োজক ছিলেন প্রয়াত নীলমণিবাবুর ছেলে চিন্তাহরণ চট্টোপাধ্যায় ।
দশ দিন আগে প্রয়াত হন কুলটির মিঠানি গ্রামে প্রবীণ বামনেতা নীলমণি চট্টোপাধ্যায় । তাঁর ছেলে চিন্তাহরণ চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য । নিজের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে রক্তদান শিবির আয়ােজন করা হোক, এমনটাই ইচ্ছে ছিল বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী নীলমণিবাবুর ৷ ছেলেকে এই ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন তিনি ৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রয়াত বাবার ইচ্ছেপূরণের ব্যবস্থা করেন চিন্তাহরণ চট্টোপাধ্যায় ৷ এই মহতি উদ্যোগে অভূতপূর্ব সাড়া পান ৷ পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধবদের মিলিত উদ্যোগে প্রায় 30 বোতল রক্ত আসানসোল জেলা হাসপাতালে দান করা হয় ।
আরও পড়ুন : নির্ধারিত সময়ের পরও খোলা দোকান, জমিয়ে আড্ডা ; গ্রেফতার 7
শুধু তাই নয়, এই রক্তদান শিবির চলাকালীন আসানসোলের একটি হাসপাতালে এক মুমূর্ষ রোগীর বিরল O- রক্তের দরকার হয়ে পড়ে । চিন্তাহরণবাবুর ভাগনির ব্লাড গ্রুপ O- হওয়ায় তিনিও শিবিরে রক্তদান করেন । শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রক্তদান আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত প্রবীর ধর । শিবির চলাকালীন প্রবীরবাবুর কাছে রক্ত চেয়ে ফোন আসে। তখনই এগিয়ে আসেন চিন্তাহরণবাবুর ভাগনি বৈশাখী আচার্য । তিনি বলেন, "দাদুর শ্রাদ্ধের পাশাপাশি আজ আমার জন্মদিন । তাই দিনটি স্মরণ হয়ে রইল ।"
পরিবারের লোকেরা ছাড়াও প্রতিবেশী, বন্ধু বান্ধবরা রক্তদানে এগিয়ে আসেন ৷ এমন অভিনব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক শাশ্বতী সেনগুপ্ত ৷ তিনি বলেন, "এভাবে মানুষ এগিয়ে এলে ব্লাড ব্যাংকে যে সংকট চলছে তা অনেকটাই মিটবে ।"