আসানসোল, 14 জুলাই : অশীতিপর এক বৃদ্ধাকে অত্যাচার করার অভিযোগ উঠল তার পুত্রবধু এবং তাঁর বাপের বাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে । গোটা বিষয়টিতে ওই বৃদ্ধার ছেলের মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন বৃদ্ধার নাতনি । বিষয়টি জানতে পেরে আসানসোলের একটি মানবাধিকার সংগঠন ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে । গতকাল ওই বৃদ্ধা আসানসোল দক্ষিণ থানায় তার ছেলে, পুত্রবধূ এবং ছেলের দুই শ্যালকের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন ।
আসানসোলের চেলিডাঙা এলাকার বাসিন্দা মলিনা বিশ্বাস । বয়স 85 বছর । তিনি জানান, তাঁর স্বামী নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ছিলেন ইস্কোর প্রাক্তন কর্মী । স্বামীর মৃত্যুর পর কখনও ছেলের আশ্রয়ে, আবার কখনও মেয়ের কাছে থাকেন মলিনা দেবী । কিন্তু অভিযোগ, ছেলের কাছে থাকলেই তাঁর পুত্রবধু ও পুত্রবধুর বাপের বাড়ির লোকেরা এসে মলিনা দেবীকে শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার করেন ৷ দীর্ঘ কয়েকবছর ধরেই নাকি এই অত্যাচার চলছে । মলিনা দেবীর নাতনি মৌ সরকার বিষয়টি আসানসোলের একটি মানবাধিকার সংগঠনকে জানান ।
মৌ সরকার জানান, "গতকালই মামার কাছে ফিরেছিলেন দিদু । তারপরেই অত্যাচার শুরু হয় । মামার শ্যালকরা এসে দিদুকে মারধর করেন । এরপর মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরা গিয়ে দিদুকে উদ্ধার করেন । আমরা চাইছি এর একটা বিহীত হোক ।" মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য সুপ্রতীক মুখোপাধ্যায় জানান, "আমরা চাইছি এই অত্যাচার বন্ধ হোক । বৃদ্ধা শেষ বয়সে যেন একটু শান্তিতে থাকতে পারেন ।"
মলিনা দেবী নিজে জানিয়েছেন, "বৃদ্ধাশ্রম হোক বা অন্য কোথাও, আমি একা থাকতে চাই । তার খরচের ব্যবস্থা করুক আমার ছেলে ।" যদিও এই কথা বলার পরেই মলিনা দেবী ছলছল চোখে বলেন, "ছেলের কিছু হোক চাই না । ওই বা এত টাকা কোথায় পাবে । লকডাউনে ওর কাজ বন্ধ । মেয়েদের পড়াশুনো । কী ক'রে পারবে ও?"
মলিনা দেবীর এই কথা শুনে আসানসোল দক্ষিন থানার পুলিশ কর্মীও দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, " মায়ের মন তো !"