আসানসোল, 24 ডিসেম্বর: 1886 সালের 24 ডিসেম্বর রাতেই হুগলির আটপুরে রামকৃষ্ণদেবের নয় জন অনুগামী সন্ন্যাস গ্রহণ করেছিলেন। যার মধ্যে অন্যতম ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda)। অন্যদিকে, এই রাতই হচ্ছে ক্রিসমাস (Christmas) ইভ। যিশুর জন্মের আগের রাত। আর ঠিক এই দুই ঘটনাক্রমকে মনে রেখেই আসানসোলে 24 ডিসেম্বর রাতে রামকৃষ্ণ মিশনে বিশেষ যিশু পুজো অনুষ্ঠিত হয়।
কথিত রয়েছে, স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর কয়েকজন গুরুভাইয়ের সঙ্গে হুগলির আটপুরে প্রেমানন্দ মহারাজ বা বাবুরাম মহারাজের বাড়িতে যান। সেখানে আজকের রাত অর্থাৎ 24 ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাবুরাম বাড়ির বাগানে ধুনি জ্বালিয়ে ধ্যান করেন তাঁরা। ত্যাগের পথে গিয়ে সন্ন্যাসও গ্রহণ করেন তাঁরা। এরপর তাঁরা আশ্চর্য হয়ে অনুভব করেন ওই বিশেষ রাতই যিশুর জন্মের আগের রাত। সেই রাতে বিবেকানন্দ অনান্যদের যিশুর বাণী এবং জীবনীও শোনান।
রীতি বজায় রেখে আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনে এদিন পালিত হল যিশুর জন্মদিন। যিশুর এই বিশেষ পুজোতে কেক, বিস্কুট, চকলেট, চানাচুর-সহ বিশেষ ভোগ দান করা হয়। চলে মঙ্গল আরতি। পুজোর শেষে কেক এবং অন্যান্য প্রসাদ ভক্তকূলের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এদিন প্রচুর ভক্তদের সমাগাম দেখা যায় ৷ ভক্তরাও এদৃশ্য দেখে অভিভূত ৷ অনীক মুখোপাধ্যায় নামে এক দর্শনার্থী জানালেন এদিনের সন্ধ্যার অভিজ্ঞতা। পাশাপাশি আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনে যিশু আরাধনায় মাতেন আসানসোলবাসী (Jesus Christ Birthday Celebration in Asansol Ramakrishna Mission) ৷
আরও পড়ুন: বড়দিনে রঙিন ব্যান্ডেল চার্চ, মিডনাইট মাসের আগেই উপচে পড়ল ভিড়
অন্যদিকে, আসানসোলের প্রাচীন গির্জাগুলোতে এদিন রাতভর প্রার্থনা চলে ৷ দু'ঘণ্টা ধরে মোমবাতি নিয়ে চলে এই আরাধনা ৷ এছাড়াও ক্রিসমাস ক্যারোল পরিবেশন করেন আবাসিকের ছাত্ররা ৷ শুধু তাই নয় রামকৃষ্ণ মিশনের মবারাজ এদিন বাইবেল পাঠ করে ভক্তকুলকে যিশুর মাহাত্ম্য শোনান ৷ আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী সিদ্ধানন্দজি বলেন, "আমরা সমস্ত ধর্মকে সম্মান করি, সেই কারণেই ক্রিসমাস ইভ পালন করি ৷ তাছাড়াও এটি একটি বিশেষ দিন ৷ কারণ এদিন রামকৃষ্ণদেবের অনুগামী স্বামী বিবেকানন্দ ও অনেকেই সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন ৷" এদিনের ক্রিসমাস ইভে আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনে যিশু পুজোর আনন্দ ও অনন্য ধর্মীয় ভাবনায় মেতে রইলেন আসানসোলের মানুষ।