দুর্গাপুর, 5 ফেব্রুয়ারি: এবার প্রকাশ্যে এল দুই তৃণমূল নেতার অন্তর্দ্বন্দ্ব (TMC Factionalism) ৷ যার জেরে বন্ধ হয়ে গেল সরকারি প্রকল্পের কাজ (Government project Stopped) ৷ সংখ্যালঘু সেলের অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে বিরোধ পঞ্চায়েত প্রধানের ৷ সংখ্যালঘু সেলের অঞ্চল সভাপতির অভিযোগ, প্রধান সরকারিভাবে বরাদ্দ সৌর চালিত সাবমারসিবল পাম্প যে অঞ্চলে বসানোর কথা ছিল, সেখানে না বসিয়ে নিজের জমির সামনে বসাচ্ছিলেন ৷ অন্যদিকে পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগ, সংখ্যালঘু সেলের এই নেতা একজন তোলাবাজ । ঠিকাদারদের কাছে তোলা না-পেয়ে কাজে বাধা দিয়েছেন ।
শাসকদলের এই দুই নেতার অন্তদ্বন্দ্বের কারণে সাবমারসিবল পাম্প বসানোর কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাঁকসার মলানদিঘি অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্থ হতে চলেছে কয়েক হাজার কৃষক । শনিবার তৃণমূলের এই গোষ্ঠীকোন্দলের ঘটনা সামনে আসতেই বিড়ম্বনার মুখে ঘাসফুল শিবির । কাটমানির অভিযোগ তুলে সরব হল পদ্ম শিবিরও । সম্প্রতি কৃষিকাজে সেচের কাজের সুবিধার্থে আকন্দারা এলাকায় মলানদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বরাত হয় । প্রায় 3 লক্ষ 50 হাজার টাকা ব্যায় করে শুক্রবার সোলার সাবমার্সিবল বসানোর কাজ শুরু হয় । প্রধানের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে সেই কাজ আঁটকে দেয় সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি জাহিরুল মিদ্যা ।
জাহিরুলের অভিযোগ, "সাবমারসিবল পাম্প ওই এলাকায় দিঘিরমাঠ এলাকায় বসানোর কথা ছিল । কিন্তু মিদ্যাবাঁধে প্রধান নিজের জমির সামনে ঠিকাদারকে দিয়ে বসানোর কাজ শুরু করে দিয়েছিল । এর ফলে চাষিদের বঞ্চিত করছে প্রধান ।" অন্যদিকে মলানদিঘির গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পীযুষ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ," ঠিকাদারের কাছে টাকা চাইছে মলানদিঘি অঞ্চলের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি জাহিরুল মিদ্যা এবং সরকারি কাজে বাধা দিচ্ছে ।" প্রধান অবশ্য জাহিরুলের অভিযোগ খণ্ডন করে জানান, দীঘির বাঁধ এলাকাতেই বসানো হচ্ছিল সাবমারসিবল । জোর করে কাজ বন্ধ করে দেয় সংখ্যালঘু সেলের অঞ্চল সভাপতি । পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে বলেও তিনি জানান ।
আর এই দ্বন্দ্বের মাঝে পড়েই আঁটকে গিয়েছে সরকারি প্রকল্পের কাজ । বিপাকের মুখে পড়েছেন চাষিরা । প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের ঘটনা সামনে আসতেই সুর চড়িয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব । কাঁকসা ব্লকের বিজেপি সাধারণ সম্পদক ভগীরথ ঘোষ তৃণমূলকে আক্রমণ করে বলেন, "ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দন্দ্ব, আর তাতেই বিপাকে চাষিরা ।" পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কাঁকসার মলানদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই দ্বন্দ্বে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদলের নেতারা । সরকারিভাবে বরাদ্দ হওয়া প্রকল্প নিয়েও দলের নেতাদের এই দড়ি টানাটানিতে যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দল, তা স্বীকার করছেন তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব । তবে বিষয়টি দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হবে ৷ এমন আশ্বাস দেওয়া হয়েছে দলের উচ্চ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ।
আরও পড়ুন: সিউড়ি পৌরসভায় তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব ! অভিষেককে চিঠি 14 কাউন্সিলরের