দুর্গাপুর, 2 সেপ্টেম্বর: গত কয়েকদিন ধরে দক্ষিণবঙ্গজুড়ে দফায় দফায় লোডশেডিং হচ্ছে । আঙুল উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন নিগমের দিকে । পশ্চিম বর্ধমান জেলাতেও একই চিত্র । তীব্র গরমে হাঁসফাস করছে আমজনতা । তারসঙ্গে দফায় দফায় বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হওয়ার জেরে স্বস্তি আর মিলছে না ৷ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি পশ্চিম বর্ধমান জেলার মানুষদেরও একই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে । বর্তমান পরিস্থিতিতে আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের একটি ইউনিটি ৷ তবে তাদের কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে বলে যে এই সমস্যা হচ্ছে, তা মানতে নারাজ দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড বা ডিপিএল-এর কর্তারা ৷
এবিষয়ে দুর্গাপুরের রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র শনিবার জানান, দুর্গাপুর প্রোজেক্ট লিমিটেডের 8 নম্বর ইউনিট বন্ধ আছে । সেই জন্য বিদ্যুৎ কিছুটা হলেও কম উৎপাদন হচ্ছে । কয়লার অভাবে 7 নম্বর ইউনিটেও বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে ৷ কিন্তু এর জন্য লোডশেডিং হচ্ছে তা বলা যায় না ৷ কারণ রাজ্যের বিদ্যুৎ সংস্থা বা ডব্লুবিএসইডিসিএল শুধু ডিপিএল এর থেকে বিদ্যুৎ নেয় না, অন্য সংস্থা থেকেও নেয় ৷ দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেডের কাজ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা । আর সরবরাহের দায়িত্বে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন নিগম । তাই কী কারণে লোডশেডিং হচ্ছে সেটা পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বন্টন নিগম বলতে পারবে । স্বাগতা মিত্র আরও বলেন, "কয়লার ঘাটতি রয়েছে এছাড়াও বর্ষায় ভেজা কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথে কিছুটা অন্তরায় । আপাতত এ মাসের 10 তারিখ পর্যন্ত 8 নম্বর ইউনিট বন্ধ থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে । তবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতির জন্যই যে লোডশেডিং হচ্ছে সেই বিষয়টি নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না ।"
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেওয়ার পাশাপাশি বেকারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ায় উদ্যোগী রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর
এই বিষয়ে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ শনিবার দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলেন, "বিদ্যুৎ দফতরের তথ্য অনুযায়ী প্রযুক্তিগত কারণে এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে ।" দ্রুত সেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলেও তিনি জানান । অসমর্থিত সূত্রে জানা যাচ্ছে, কয়লার ঘাটতির কারণেই রাজ্যের বিভিন্ন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে । পাশাপাশি চলতি বছরের রাজ্যের বহু গৃহস্থের বাড়িতে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বিশেষ করে এসি মেশিন অনেক বেশি পরিমাণে বসার কারণে বিদ্যুতের চাহিদা অনেকটাই বেড়ে গেছে এক লাফে । কিন্তু আমাদের রাজ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি নেই এমন কথাই বারংবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাহলে এখন রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় লোডশেডিংয়ের এরকম দাপট কেন, সেই প্রশ্ন উঠছে ৷