দুর্গাপুর, 21 জানুয়ারি: দুর্গাপুরে বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Chief Minister Mamata Banerjee) কড়া আক্রমণ করলেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা (BJP MP Raju Bista) ৷ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের মানুষকে অপমান করেছেন বলে এদিন তিনি আক্রমণ সাধালেন ৷ রাজু বিস্তা শনিবার দাবি করেন, বিমল গুরুং (Bimal Gurung) এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থাৎ তৃণমূলের (TMC) পাশেই রয়েছেন ৷
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন (Panchayat Election) ৷ তার পরেই 2024 সালের লোকসভা নির্বাচন ৷ তার আগে দুর্গাপুরে ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য কমিটির বৈঠক (BJP state conference) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে । এই বৈঠক উপলক্ষে পাঁচজন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের উপস্থিতিতে আজ দ্বিতীয় দিনে মোট সাড়ে 450 জন প্রতিনিধি সারা রাজ্য থেকে উপস্থিত থাকবেন । বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে ভারতীয় জনতা পার্টির বেশ কয়েকজন নেতা জনসংযোগের কারণে দুর্গাপুরের বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দিতে যান ।
এদিন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা দুর্গাপুরের কোক ওভেন থানা এলাকার সাগরভাঙ্গা এসবি মোড়ে সংকটমোচনের মন্দিরে পুজো দিতে যান । সেখানে পুজো দেওয়ার পর তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, "গত কুড়ি বছর দার্জিলিংয়ের কোনও পঞ্চায়েতের নির্বাচন হয়নি । দার্জিলিংয়ে পৌরসভার নির্বাচন হয়েছিল । কিন্তু মমতা দিদি সেই বোর্ড ছ-মাসের মধ্যে ভেঙ্গে দিয়ে তাঁর মনের মত লোকদেরকে সেখানে বসিয়ে দিয়েছেন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দার্জিলিংয়ে গণতন্ত্র চান না, একথা স্পষ্ট । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তরাই-ডুয়ার্স-দার্জিলিংয়ের গোর্খাদের এবং আদিবাসীদের কোনও ভাল হোক চান না ।"
এরপরই রাজু বিস্তা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, "তিনি সারা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ৷ তা সত্বেও তিনি বারবার উত্তরবঙ্গের মানুষকে অপমান করেন ।" দার্জিলিংয়ের ক্ষুব্ধ সাংসদ মুখ্যমন্ত্রীকে আরও তীব্র আক্রমণ করে বলেন , "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতি হল ডিভাইড এন্ড রুল । মানে মারো এবং রাজত্ব করো। দুর্নীতি করো এবং রাজত্ব করো, মানুষকে দুখী করো এবং রাজত্ব করো । আগে এটা সিপিআইএম করত এখন তৃণমূল করে ৷"
সাম্প্রতিককালে গোর্খা নেতা বিমল গুরুংয়ের অবস্থান নিয়ে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা এদিন দাবি করেন, তিনি তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন ৷ রাজু বিস্তা বলেন, "বিমল গুরুং আগে ভারতীয় জনতা পার্টিতে ছিলেন ৷ আমি যতটুকু জানি এখন তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের মমতা দিদির পাশেই আছেন । একথা ঠিক যে গোর্খাদের সঙ্গে চূড়ান্ত অন্যায় হয়েছে । গোর্খারা বহু চেষ্টা করেছে । কিন্তু রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় তাদের কিছু হয়নি ।"
তিনি এদিন আরও বলেন, "ভারতীয় জনতা পার্টি গোর্খাদের উন্নয়নের জন্য ভাবছে এবং বিজেপির হাত ধরেই ওই এলাকার সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান হবে । ভারতীয় সংবিধানকে মান্যতা দিয়েই দার্জিলিং, তরাই, ডুয়ার্সের স্থায়ী সমাধান হবে এবং সেই দিন আর দূর নয় ।" তাহলে কী কোথাও গোর্খাদের আলাদা গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিকে পরোক্ষে স্বীকৃতি দিলেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ? তাঁর এই মন্তব্যের পর এমনই সব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্য-রাজনীতিতে ।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ ভাগ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে কটাক্ষ বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার