নয়াদিল্লি, 29 ডিসেম্বর: ফের বিস্ফোরক শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় ৷ রবিবার প্রণব-কন্যার অভিযোগ, কংগ্রেসে ক্ষয় শুরু হয়েছে ৷ দলের ‘দুঃখজনক অবস্থা’ সম্পর্কে গুরুতর আত্মদর্শনের প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছেন তিনি । একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতি এবং শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আদর্শের অভাবের কারণে পুরনো কংগ্রেস কর্মীরা আজ দল থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করছেন ।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্যের দিনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন শর্মিষ্ঠা ৷ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্য়ায়ের মৃত্যুর পর কংগ্রেস তাঁকে যথাযথ সম্মান জানায়নি বলে দাবি করেছিলেন প্রণব-কন্যা ৷ শনিবার তিনি স্পষ্টতই জানান, তাঁর বাবার মৃত্যুর সময় আনুষ্ঠানিকভাবে শোক জানাতে কংগ্রেস কোনও ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকেনি ৷ তখন তাঁর যথেষ্টই খারাপ লেগেছিল বলেও জানান শর্মিষ্ঠা। সেই ঝাঁঝের রেশ রয়েছে রবিবারের বক্তব্যেও ৷
নিগমবোধ ঘাটে শেষকৃত্য হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ৷ সেদিনই শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্য়ায় বলেন, "বাবা যখন মারা গেলেন তখন আমি সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলাম। কংগ্রেসের অংশ হিসেবে আমি হতবাক হয়েছিলাম । কোনও আনুষ্ঠানিক ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়নি ৷ আমার ধারণা, কোনও শোকপ্রস্তাব পাশ হয়নি কংগ্রেসের সম্মেলনে ৷ সোনিয়া গান্ধি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন কিন্তু রাষ্ট্রপতির আগে তিনি (প্রণব মুখোপাধ্যায়) 45 বছর ধরে সিডব্লিউসি-র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৷"
তিনি এদিন বলেন, ‘‘কংগ্রেসকে এর উত্তর দিতে হবে । আমি জানি না এই ধরনের আচরণ ইচ্ছাকৃত নাকি নিছক অবহেলা। এতবড় এবং ঐতিহাসিক দলে পরিচালনের নিজস্ব নিয়ম আছে। যদি কংগ্রেসের মতো এতবড় একটি দল নিজেদের অতীত ভুলে যায় আর রাহুল গান্ধি এবং তাঁর আশেপাশের লোকেরা যদি কংগ্রেস আগে কীভাবে চলত তাহলে তা না জানেন তাহলে সেটা দলের জন্য গুরুতর এবং দুঃখজনক ৷’’
কংগ্রেসে অ-গান্ধি নেতাদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমা রাওর সঙ্গে কী করা হয়েছিল তা ভুলে যাওয়া উচিত নয়।" অন্য একটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "পুরো কংগ্রেস ইকোসিস্টেম, দলের সোশাল মিডিয়া আমাকে ট্রল করছিল । আমার এবং আমার বাবার মতো নেতাদের জন্য যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছিল তা দেখায় যে পচন ধরেছে কংগ্রেসে।"
যদিও শর্মিষ্ঠা মনে করেন, মনমোহন সিংয়ের জন্য স্মৃতিসৌধের দাবি একেবারে ন্যায্য । তিনি ছিলেন ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কারের স্থপতি, আধুনিক ভারতের আর্থিক উন্নতির জনক ছিলেন এই দু’বারের প্রধানমন্ত্রী । ভারতের নাগরিকদের পক্ষ থেকে মনমোহনের জন্য ভারতরত্নও দাবি করেছেন শর্মিষ্ঠা ৷