দুর্গাপুর, 19 সেপ্টেম্বর: দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পরিষদের কার্যালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে ভস্মীভূত সমস্ত কিছু । রাজ্য দমকল দফতর, দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার দমকল বিভাগ, অণ্ডাল কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরের দমকল বিভাগ-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে 11টি গাড়ি আসে মঙ্গলবার ৷ সঙ্গে আসেন প্রায় শতাধিক দমকল কর্মী এবং সিআইএসএফ বাহিনী ৷ তাঁদের প্রায় আট ঘণ্টার চেষ্টার পর নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন ।
দমকল বিভাগের ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার শুভ্রাংশু মজুমদার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলেন ৷ তিনি বলেন,"আড্ডার কার্যালয়ে প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোনও ফায়ার এক্সটিনগুইজার চোখে পড়েনি । আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের কার্যালয়ে কোনও জলের জোগান ছিল না ৷ এর ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের সকলকে বেগ পেতে হল ।" আর দমকল দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকের সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বিবৃতির পরই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা ।
এ দিন বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই ঘটনাস্থলে এসে এই অগ্নিকাণ্ডের জন্য সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ৷ তিনি বলেন,"পুলিশকে ভরসা নেই । আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত করতে হবে ।" তাঁর কথায়, রাজ্য সরকারের পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপনের পরিকাঠামো না থাকায় এত বড় ঘটনা ঘটল । গোটা রাজ্য জুড়ে যখন আগুন জ্বলছে মুখ্যমন্ত্রী স্পেনে গিয়েছেন শিল্প আনতে । মুখ্যমন্ত্রী ডেঙ্গির ভয়ে স্পেন চলে গিয়েছেন। 6 ঘণ্টা পরেও কেন নিয়ন্ত্রণে এল না আগুন? কেন পর্যাপ্ত জল নেই আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভবনে? বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি জ্বলে গেল । এর পিছনে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলেও দাবি করেন এই বিজেপি বিধায়ক ।
আরও পড়ুন: গভীর রাতে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের কার্যালয়ে আগুন, ঘটনাস্থলে দমকলের 11টি ইঞ্জিন
তাঁর এই দাবির পালটা সরব হয়েছেন আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বিজেপি বিধায়ককে কটাক্ষ করে বলেন, "ওঁনাকে বলুন সিবিআই নয়, ইন্টারপোলের তদন্তের দাবি জানাতে । এখানে এমন কিছু ঘটেনি যার জন্য আগুন লাগিয়ে দেওয়ার কোন কথা উঠতে পারে । কারণ এই দফতেরর সমস্ত নথি জমা আছে রাজ্য সরকারের আরবান ডেভেলপমেন্ট দফতরে ।"
অন্যদিকে পশ্চিম বর্ধমান জেলা সিপিএমের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের বক্তব্য, ষড়যন্ত্র করে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে । সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলার জন্য এই ষড়যন্ত্র । কয়েকদিন আগেই আড্ডার চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় এমন আশংকা প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছেন । তিনি নিজেই বলেছেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফাইল এখানে পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে কি সেই কারণেই এই ভবনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হল? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: চাঁদনি চকের একটি অফিসে আগুন, ঘটনাস্থলে দমকলের 4টি ইঞ্জিন