আসানসোল, 3 জানুয়ারি: ফের 14 দিনের জন্য জেল হেফাজতে (Jail Custody) পাঠানো হল অনুব্রত মণ্ডলকে (Jail Custody for Anubrata)৷ শুক্রবার তাঁর জামিনের কোনও আবেদন জানানো হয়নি ৷ এই মামলার পরবর্তী শুনানি 17 ফেব্রুয়ারি ৷
ফের 14 দিনের জেল হেফাজতে অনুব্রত: শুক্রবার গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে আসানসোল সিবিআই আদালতে (Asansol CBI Court) তোলা হয় । অল্পক্ষণের শুনানির পরেই সিবিআই আদালতের বিচারক পুনরায় 14 দিনের জেল হেফাজতে পাঠান বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে । আগামী 17 ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ।
জামিনের আবেদন করা হয়নি: এ দিন কোনও জামিনের আবেদন করা হয়নি অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীর পক্ষ থেকে । আসানসোল সংশোধনাগার থেকে বেরনোর পর ও আসানসোল সিবিআই কোর্টে ঢোকার মুখে কেষ্টর উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হয়, দল কি তাঁর পাশে আছে ? তবে কোনও জবাব না দিয়ে মুখ বুজে আদালতে ঢুকে যান বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি ।
আগের শুনানিতে বিস্ফোরক দাবি করেছিল সিবিআই: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বীরভুম সফরে, তখনই অনুব্রতর ঘনিষ্ঠদের বৃহস্পতিবার জেরা করেছে সিবিআই । আর তারপরেই অনুব্রত মণ্ডলের গরু পাচার মামলার শুনানি হল শুক্রবার । গত 19 জানুয়ারি শেষবার অনুব্রত মণ্ডলের শুনানি হয়েছিল আসানসোল সিবিআই আদালতে । সে দিন 177টি অ্যাকাউন্টের সন্ধান দিয়েছিল সিবিআই ।
'বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ঘুরে টাকা অনুব্রতর অ্যাকাউন্টে ঢোকে': সমবায় ব্যাংকে এই অ্যাকাউন্টগুলি করা হয়েছিল সরকারি সুবিধে পাওয়ার জন্য উপভোক্তাদের নামে । অথচ যাঁদের অ্যাকাউন্ট তাঁরা কিছুই জানেন না, এমনকী তাঁরা সই পর্যন্ত করেননি বলে আদালতে করেছিল সিবিআই । এমনকী সিবিআইয়ের দাবি ছিল, একজন ব্যক্তি এই অ্যাকাউন্টগুলি পরিচালনা করছিলেন । এই অ্যাকাউন্টগুলি থেকে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট হয়ে টাকা ঢুকেছিল অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ের চাল কলের দুটি অ্যাকাউন্টে ।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম ছাড়তেই অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের ডাক সিবিআই'য়ের
ভোলে বোম রাইস মিলের অ্যাকাউন্ট ডি-ফ্রিজ করার আবেদন: সিবিআইয়ের দাবি, এই টাকা আসলে গরু পাচার সংক্রান্ত টাকা । এই তথ্য সামনে আসার পর অনুব্রত মণ্ডলের জামিন পাওয়ার বিষয়টি ক্ষীণ হয়ে এসেছে । আরও সাঁড়াশির মতো চাপে বীরভুমের কেষ্ট । শুক্রবার শুনানিতে ভোলে বোম রাইস মিলের অ্যাকাউন্ট ডি-ফ্রিজ করার বিষয়টিও উত্থাপিত হওয়ার কথা ছিল । অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ জানান, পরবর্তী শুনানির দিনে এই বিষয়টি নিয়ে আদালতে আবেদন জানাবেন ।
রাজনৈতিক ভাবেও কি কেষ্ট কোণঠাসা ? এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভুমের সভায় অনুব্রত মণ্ডলের নাম উচ্চারণ হয়নি বলে খবর । এমনকী বিভিন্ন কাটআউটেও বাদ দেওয়া হয়েছে কেষ্টর ছবি । কেষ্টহীন বীরভুম কি তবে বিকল্প নেতার সন্ধানে ? যদিও মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বীরভুম জেলা দেখবেন বলে জানিয়েছেন ।
আসানসোল সিবিআই কোর্টে অনুগামীদের ভিড় উধাও: অন্যদিকে, শুনানির দিন আসানসোল সিবিআই কোর্টে যেকরম ভাবে বীরভুম থেকে আসা নেতা ও অনুগামীদের ভিড় দেখা যেত, সেটা এখন উধাও । অর্থ্যাৎ যেভাবে অনুব্রতর বিরুদ্ধে একের পর এক তথ্য সামনে এনেছে সিবিআই, তাতে বীরভুমের তৃণমূল নেতা কর্মীরাও বুঝেছেন, এবার জামিন পাওয়া শক্ত । শুক্রবার কেষ্টকে জিজ্ঞেস করা হয়, দল কি তাঁর পাশে আছে ? এই প্রশ্নে কোনও উত্তর মেলেনি ।
পরবর্তী শুনানি 17 ফেব্রুয়ারি: শুক্রবার অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ জামিনের জন্য কোনও আবেদন করেননি । তিনি শুনানির পর জানান, "যেহেতু আমরা কোনও জামিনের আবেদন করিনি, সেই কারণে সিবিআই নতুন করে কোনও তথ্য নিয়ে আসার সুযোগ পায়নি।" স্বল্পক্ষণের শুনানিতেই আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী পুনরায় 14 দিনের জন্য অনুব্রত মণ্ডলকে জেল হেফাজতে পাঠান । এই মামলার পরবর্তী শুনানি 17 ফেব্রুয়ারি ।