আসানসোল, 25 অক্টোবর: আসানসোল সংশোধনাগারে (Asansol Jail custody) থাকাকালীন প্রায় 10 কেজি ওজন কমেছে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal)। আজ আসানসোল জেলা হাসপাতালে তাঁর রুটিন শারীরিক পরীক্ষা করানোর সময় এমন তথ্যই উঠে এসেছে । গত 25 অগস্ট আসানসোল জেলা হাসপাতালে প্রথম শারীরিক পরীক্ষা হয়েছিল অনুব্রতর (Anubrata Weight Loss)। তখন ওজন ছিল 110 কেজি । মঙ্গলবার পুনরায় তাঁর ওজন মাপা হয় । দেখা যায় প্রায় 101 কেজি ওজন হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের । যদিও হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে বীরভূমের তৃণমূল নেতা দাবি করেছেন, জেলের ওজন মাপার যন্ত্রে আরও দু'কেজি ওজন কম এসেছিল তাঁর ।
গত 10 অগস্ট গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল । প্রথমে সিবিআই হেফাজত এবং 24 অগস্ট থেকে তিনি বিচার বিভাগীয় হেফাজতে আসানসোল সংশোধনাগারে রয়েছেন । 25 অগস্ট আসানসোল জেলা হাসপাতালে প্রথমবার অনুব্রত মণ্ডল'কে নিয়ে আসা হয় । তারপর মঙ্গলবার অর্থাৎ 25 অক্টোবর নিয়ে আসা হল অনুব্রত মণ্ডলকে, দ্বিতীয়বার শারীরিক পরীক্ষার জন্য । আসানসোল জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে অনুব্রত মণ্ডল আক্ষেপ করে বলেছেন, "বোলপুরে থাকাকালীন কোনওদিন বোলপুর সরকারি হাসপাতালে যাইনি আমি, অথচ আসানসোলে থেকে দু'বার আসানসোল জেলা হাসপাতালে চলে এলাম ।"
প্রায় 1 ঘণ্টা ধরে অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক পরীক্ষা হয় । আসানসোল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে মোট চারজন ডাক্তার অনুব্রত মণ্ডলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন । এই চারজন ডাক্তারের মধ্যে একজন সার্জন ছিলেন । নতুন করে অনুব্রত মণ্ডলের কোনও শারীরিক ইমার্জেন্সি এই মুহূর্তে নেই বলেই জানিয়েছেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস । পুরোনো ওষুধগুলিই চলবে তাঁর । বর্তমানে নতুন করে আর কোনও ওষুধ দেওয়া হয়নি ।
আরও পড়ুন: কেষ্টর গড়ে শুভেন্দুর সঙ্গে সিউড়ির দুই তৃণমূল নেতার সাক্ষাৎ ঘিরে রাজনৈতিক জল্পনা
গত 21 সেপ্টেম্বর অনুব্রত মণ্ডলকে শেষবার আসানসোল সিবিআই আদালতে তোলা হয়েছিল । তারপর থেকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন তিনি । দুর্গাপুজো এবং কালীপুজোর ছুটির জন্য সিবিআই আদালত বন্ধ । সেই কারণে আগামী 29 অক্টোবর অনুব্রত মণ্ডল'কে পুনরায় আসানসোল সিবিআই আদালতে তোলা হবে । দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন । এরই মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে বাঙালির দুটি বৃহৎ উৎসব । দুর্গাপুজো এবং কালীপুজোয় জেলের মধ্যেই থেকেছেন অনুব্রত । ফলে মানসিক অবসাদ আসতে পারে তাঁর মধ্যে । এছাড়াও তাঁর দীর্ঘদিনের সঙ্গী সায়গল হোসেন বর্তমানে ইডি হেফাজতে দিল্লিতে রয়েছেন । সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, অনুব্রত মণ্ডল প্রতিদিন 30টিরও বেশি যে ওষুধ খান, সেই ওষুধের দেখভাল করতেন সায়গল নিজেই । ফলে সায়গল চলে যাওয়ার পর অনুব্রত ঠিকঠাক ওষুধ খাচ্ছেন কি না বা অন্য কোনও মানসিক চাপ তাঁর মধ্যে আসছে কি না, সেই চাপ থেকে তিনি অন্য কোনও ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন কি না, এই সবকিছু দেখতেই তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা বলে সূত্র থেকে জানা গিয়েছে ।
আগামী 29 অক্টোবর অনুব্রত মণ্ডলের পরবর্তী শুনানি । সবাই এখন তাকিয়ে সে দিন কী রায় ঘোষণা করে আসানসোল সিবিআই আদালত ।