ETV Bharat / state

Landslide Affected Area: আসানসোলে 50 হাজার ধস কবলিতদের পুনর্বাসন বিশবাঁও জলে, চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর

Asansol Landslide Affected Area: নয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে আসানসোলের ধস কবলিত এলাকার মানুষের জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে ইসিএল । কিন্তু আজও 90 শতাংশ মানুষ পুনর্বাসন পায়নি বলে অভিযোগ । এই নিয়ে চলছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন ৷

Landslide Affected Area
Landslide Affected Area
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 7, 2023, 8:11 PM IST

আসানসোলে 50 হাজার ধস কবলিতদের পুনর্বাসন বিশবাঁও জলে

আসানসোল, 7 নভেম্বর: নয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে আসানসোলের বিস্তীর্ণ ধস কবলিত এলাকার জন্য 2400 কোটি টাকার মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছিল ইসিএল । কিন্তু আজও 90 শতাংশ মানুষ পুনর্বাসন পায়নি । আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর । বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের দাবি, কেন্দ্র টাকা দিলেও সেই টাকা চুরি হয়েছে । ফলে উপভোক্তারা বাড়ি পাচ্ছেন না । অন্যদিকে পুনর্বাসন প্রকল্পের নোডাল এজেন্ট এডিডিএ-এর চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 2400 কোটির জায়গায় মিলেছে মাত্র 620 কোটি টাকা । যেমনভাবে টাকা আসছে, কাজও সেই ধাপে ধাপে হচ্ছে । কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্যের এই টানাপোড়েনে প্রাণ হাতে নিয়ে বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছে 50 হাজার ধস কবলিত মানুষকে ।

1997 সালের জুন মাসে ডেপুটি জেনারেল অফ মাইনস সেফটি একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কয়লা খননের কারণে রানিগঞ্জ খনি অঞ্চলে 146টি মৌজা ধস কবলিত ও বিপজ্জনক । 139টি মৌজার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দিতে হবে । সেই সময় আসানসোলের তৎকালীন সিপিএম সাংসদ হারাধন রায় দাবি করেন, পুনর্বাসনের যাবতীয় খরচ বহন করতে হবে ইসিএলকে ।

সেই বছরই তিনি সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন । সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে 1999 সালে ইসিএল পুনর্বাসনের একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে । মোট 2400 কোটি টাকা মঞ্জুর হয় ধস কবলিতদের ধস পুনর্বাসনের জন্য। ঠিক হয় টাকা দেবে ইসিএল । প্রকল্পটির নোডাল এজেন্ট হয়ে কাজ করবে এডিডিএ । বাম আমলে ততকালীন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরি এডিডিএ চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু ধস কবলিতদের চিহ্নিত করতে ও তাঁদের পরিচয়পত্র প্রদান করতেই বহু সময় চলে যায় ।

এরই মাঝে রাজ্যে রাজনৈতিক পরিবর্তন হয় । এডিডিএ-এর চেয়ারম্যান হন তৃণমূল কংগ্রেসের তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় । কিন্তু কাজ যে গতিতে হওয়ার কথা ছিল, তেমন গতিতে হয়নি । অন্ডালে বাড়ি তৈরির কাজ শেষের মুখে হলেও জামুড়িয়ায় আবাসনের কাজ ফেলে রেখে পালিয়েছে ঠিকাদার সংস্থা । সালানপুরেও জমিজটে আটকে গিয়েছে কাজ । প্রশ্ন উঠছে, কবে পুনর্বাসন মিলবে ?

বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল । অগ্নিমিত্রা পালের দাবি, "ইসিএল টাকা দিয়েছে । কিন্তু সেই টাকা চুরি হয়েছে । ফলে একদিকে যখন নির্মাণ ঘিরে চুরি হচ্ছে, অন্যদিকে নির্মাণ হওয়ার পর আবাসনগুলি মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে না । ফলে ফাঁকা আবাসনগুলোর জানলা-কপাট চুরি হচ্ছে । আবার নতুন করে টেন্ডার হবে । এই প্রকল্প ঘিরে শুধু চুরিই চলছে। মানুষ আসলে কিছু পাচ্ছে না ।"

অন্যদিকে এডিডিএ চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “উনি শিক্ষিত হয়েও অর্ধশিক্ষিতের মতো কথা বলছেন । মোট 2400 কোটি টাকার প্রকল্প ছিল । প্রথম ধাপে এসেছিল 200 কোটি টাকা, পরবর্তীকালে 420 কোটি টাকা এসেছে । প্রচুর টাকার জমি কিনতে হয়েছে আমাদেরকে । জামুড়িয়ায় যে প্রকল্প চলছিল, সেই প্রকল্পের কাজ মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে পালিয়েছে ঠিকাদার । ফলে সেই কাজ এখনও পর্যন্ত শেষ হয়নি ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘সেই কারণে অন্ডালে যে জমি কেনা হয়েছিল, সেখানে রাজ্য নির্মাণ সংস্থাকে দিয়েই কাজ করানো হচ্ছে । সেই কাজ শেষের মুখে । সেই কাজ হয়ে গেলেই বাড়ি তুলে দেওয়া হবে ধস কবলিতদের । এটা একটা বিরাট বড় প্রকল্প । ধাপে ধাপে কাজ হচ্ছে । উনি সবটা জানেন না বলেই এই ধরনের মন্তব্য করছেন ।’’

এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই এই প্রকল্প ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছেই । সাধারণ বাসিন্দারা চাইছেন, রাজনীতি বন্ধ হোক । পুনর্বাসন মিলুক ধস কবলিতদের ।

আরও পড়ুন: "গো ব্যাক অগ্নিমিত্রা", ধস কবলিত এলাকায় বিক্ষোভের মুখে বিধায়ক

আসানসোলে 50 হাজার ধস কবলিতদের পুনর্বাসন বিশবাঁও জলে

আসানসোল, 7 নভেম্বর: নয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে আসানসোলের বিস্তীর্ণ ধস কবলিত এলাকার জন্য 2400 কোটি টাকার মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছিল ইসিএল । কিন্তু আজও 90 শতাংশ মানুষ পুনর্বাসন পায়নি । আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর । বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের দাবি, কেন্দ্র টাকা দিলেও সেই টাকা চুরি হয়েছে । ফলে উপভোক্তারা বাড়ি পাচ্ছেন না । অন্যদিকে পুনর্বাসন প্রকল্পের নোডাল এজেন্ট এডিডিএ-এর চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 2400 কোটির জায়গায় মিলেছে মাত্র 620 কোটি টাকা । যেমনভাবে টাকা আসছে, কাজও সেই ধাপে ধাপে হচ্ছে । কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্যের এই টানাপোড়েনে প্রাণ হাতে নিয়ে বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছে 50 হাজার ধস কবলিত মানুষকে ।

1997 সালের জুন মাসে ডেপুটি জেনারেল অফ মাইনস সেফটি একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কয়লা খননের কারণে রানিগঞ্জ খনি অঞ্চলে 146টি মৌজা ধস কবলিত ও বিপজ্জনক । 139টি মৌজার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দিতে হবে । সেই সময় আসানসোলের তৎকালীন সিপিএম সাংসদ হারাধন রায় দাবি করেন, পুনর্বাসনের যাবতীয় খরচ বহন করতে হবে ইসিএলকে ।

সেই বছরই তিনি সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন । সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে 1999 সালে ইসিএল পুনর্বাসনের একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে । মোট 2400 কোটি টাকা মঞ্জুর হয় ধস কবলিতদের ধস পুনর্বাসনের জন্য। ঠিক হয় টাকা দেবে ইসিএল । প্রকল্পটির নোডাল এজেন্ট হয়ে কাজ করবে এডিডিএ । বাম আমলে ততকালীন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরি এডিডিএ চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু ধস কবলিতদের চিহ্নিত করতে ও তাঁদের পরিচয়পত্র প্রদান করতেই বহু সময় চলে যায় ।

এরই মাঝে রাজ্যে রাজনৈতিক পরিবর্তন হয় । এডিডিএ-এর চেয়ারম্যান হন তৃণমূল কংগ্রেসের তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় । কিন্তু কাজ যে গতিতে হওয়ার কথা ছিল, তেমন গতিতে হয়নি । অন্ডালে বাড়ি তৈরির কাজ শেষের মুখে হলেও জামুড়িয়ায় আবাসনের কাজ ফেলে রেখে পালিয়েছে ঠিকাদার সংস্থা । সালানপুরেও জমিজটে আটকে গিয়েছে কাজ । প্রশ্ন উঠছে, কবে পুনর্বাসন মিলবে ?

বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল । অগ্নিমিত্রা পালের দাবি, "ইসিএল টাকা দিয়েছে । কিন্তু সেই টাকা চুরি হয়েছে । ফলে একদিকে যখন নির্মাণ ঘিরে চুরি হচ্ছে, অন্যদিকে নির্মাণ হওয়ার পর আবাসনগুলি মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে না । ফলে ফাঁকা আবাসনগুলোর জানলা-কপাট চুরি হচ্ছে । আবার নতুন করে টেন্ডার হবে । এই প্রকল্প ঘিরে শুধু চুরিই চলছে। মানুষ আসলে কিছু পাচ্ছে না ।"

অন্যদিকে এডিডিএ চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “উনি শিক্ষিত হয়েও অর্ধশিক্ষিতের মতো কথা বলছেন । মোট 2400 কোটি টাকার প্রকল্প ছিল । প্রথম ধাপে এসেছিল 200 কোটি টাকা, পরবর্তীকালে 420 কোটি টাকা এসেছে । প্রচুর টাকার জমি কিনতে হয়েছে আমাদেরকে । জামুড়িয়ায় যে প্রকল্প চলছিল, সেই প্রকল্পের কাজ মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে পালিয়েছে ঠিকাদার । ফলে সেই কাজ এখনও পর্যন্ত শেষ হয়নি ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘সেই কারণে অন্ডালে যে জমি কেনা হয়েছিল, সেখানে রাজ্য নির্মাণ সংস্থাকে দিয়েই কাজ করানো হচ্ছে । সেই কাজ শেষের মুখে । সেই কাজ হয়ে গেলেই বাড়ি তুলে দেওয়া হবে ধস কবলিতদের । এটা একটা বিরাট বড় প্রকল্প । ধাপে ধাপে কাজ হচ্ছে । উনি সবটা জানেন না বলেই এই ধরনের মন্তব্য করছেন ।’’

এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই এই প্রকল্প ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছেই । সাধারণ বাসিন্দারা চাইছেন, রাজনীতি বন্ধ হোক । পুনর্বাসন মিলুক ধস কবলিতদের ।

আরও পড়ুন: "গো ব্যাক অগ্নিমিত্রা", ধস কবলিত এলাকায় বিক্ষোভের মুখে বিধায়ক

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.