দুর্গাপুর, 10 নভেম্বর: একই বাড়িতে পরিবারের তিনজনের রহস্যমৃত্যু ৷ শুক্রবার দিনে-দুপুরে ওই বাড়ি থেকে তিনটি দেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কাঁকসার সারদাপল্লিতে ৷ জানা গিয়েছে, এক বাইক আরোহী ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন ৷ তিনিই তিনজনকে খুন করেছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে ৷
দুটি ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বাড়ির মালিকের মেয়ে এবং শাশুড়ির মৃতদেহ ৷ আর উঠোনে পড়ে শ্যালকের ছেলের রক্তাক্ত মৃতদেহ । মৃত তিনজন হলেন মালিকের মেয়ে সিমরন বিশ্বকর্মা (বয়স 30-এর উপরে), শাশুড়ি সীতা দেবী (60-এর উপরে) এবং শ্যালকের ছেলে সোনু বিশ্বকর্মা (19-20)। এই ঘরে এক রহস্যময় ব্যক্তি বাইক নিয়ে হেলমেট পরে এসেছিলেন বলে খবর । তিনিই খুন করেছেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে ৷ ঘটনাস্থলে গিয়েছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা । তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) কুমার গৌতম ও কাঁকসার এসিপি সুমন জয়সওয়াল ঘটনার তদন্ত করছেন । কাঁকসার সারদাপল্লি এলাকার ধনঞ্জয় বিশ্বকর্মা স্ত্রীকে নিয়ে বর্তমানে তাঁর বড় মেয়ের কাছে অসমে আছেন । কাঁকসার সারদাপল্লির বাড়িতে ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সিমরন বিশ্বকর্মা, শাশুড়ি সীতা দেবী এবং শ্যালকের ছেলে সোনু বিশ্বকর্মা ।
ধনঞ্জয় বিশ্বকর্মার ভাইয়ের স্ত্রীর কথায়, "শুক্রবার দুপুরে আচমকা হেলমেট পরে একজন বাইক থামিয়ে ধনঞ্জয়বাবুর বাড়িতে ঢোকেন । আমি ভেবেছিলাম ওঁদের পরিচিত কেউ । তার পরে ওই বাইক নিয়ে আসা লোক কখন চলে যান দেখিনি ।" এর পরই ধনঞ্জয় বিশ্বকর্মার ভাইয়ের পরিবার এবং প্রতিবেশীরা ধনঞ্জয়ের বাড়িতে দেখতে পান তিনজনের মৃতদেহ তিন জায়গায় পড়ে রয়েছে । মুহূর্তে গোটা এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায় ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কাঁকসা থানার পুলিশ । ঘটনাস্থলে যান ডিসিপি (পুর্ব) কুমার গৌতম, কাঁকসার এসিপি সুমন কুমার জয়সওয়াল-সহ পুলিশের অন্যান্য আধিকারিকরা । খবর দেওয়া হয় ফরেন্সিক দফতরে । ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা । মৃত মহিলা ও বৃদ্ধার গলায় শ্বাসরোধের চিহ্ন রয়েছে ৷ আর যুবকের দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল বলে পুলিশ সুত্রে জানা যায় । কীভাবে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি । মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে ৷ তদন্ত নেমেছে কাঁকসা থানার পুলিশ ।
তবে ধনঞ্জয়ের ভাইয়ের পরিবার এবং তাঁর প্রতিবেশীরা এই ঘটনাকে খুন বলে মনে করছেন । কে ওই রহস্যময় বাইক আরোহী ? তিনি যাওয়ার পরেই কেন তিনজনের মৃতদেহ এভাবে ঘরে পড়ে থাকত দেখা গেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে ? এমন প্রশ্ন তুলছেন প্রতিবেশীরা । তাঁরা সন্দেহ করছেন ওই বাইক আরোহীকেই ৷ তবে পালটা আরও কিছু প্রশ্ন রয়েছে পুলিশের ৷ একজন ব্যক্তি কীভাবে শ্বাসরোধ করে এক মহিলা ও এক বৃদ্ধাকে খুন করার পর ওই যুবককে খুন করল, সেটাও ভাবাচ্ছে পুলিশকে ৷ ওই রহস্যময় ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ । খতিয়ে দেখা হচ্ছে আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ । আপাতত মৃতদেহগুলির ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ । রিপোর্ট পেলেই জানা যাবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ৷ ডিসিপি (পূর্ব) কুমার গৌতম জানিয়ে দিয়েছেন, তদন্ত শেষ না হলে কিছু বলা যাবে না ।
আরও পড়ুন: