বালাঙ্গির, 21 ফেব্রুয়ারি: একটানা তিন মাস বেতন না পেয়ে মাঠে দিনমজুরের কাজে লেগে পড়লেন এক শিক্ষক ৷ এমন ঘটনা ঘটেছে ওড়িশার বালাঙ্গির জেলার পুনিনটালা ব্লকের বন্ধনবহল গ্রামে ৷
ওই শিক্ষক প্রভুদত্তা সাহু গ্রামের সরকারি প্রাথমিক স্কুলে পড়ান ৷ তাঁর অভিযোগ, তিন মাস ধরে তিনি কোনও বেতন পাননি ৷ এদিকে সংসারের খরচখরচা তো বন্ধ রাখা যায় না ৷ তাই স্কুলে ছুটির আবেদন জানিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক ৷ ছুটি নিয়ে তিনি চাষের মাঠে দিনমজুরের কাজে লেগে পড়বেন বলে ঠিক করেন ৷
শিক্ষক প্রভুদত্তা সাহু জানিয়েছেন, বেতন না পেয়ে চরম আর্থিক অনটনে দিন কাটছে তাঁর ৷ এই অবস্থায় পরিবারের খরচখরচা চালাতে দিনমজুরের কাজ করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই তাঁর কাছে ৷ জানা গিয়েছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁর ছুটির আবেদন মঞ্জুর করেছেন ৷
যদি স্কুল থেকে বেতনই না পান ? তাহলে হয়তো দিনমজুরের কাজই চালিয়ে যাবেন সাহু ৷ তিনি আরও জানান, স্কুলের বেতন না পেয়ে সংসার চালাতে গিয়ে তাঁকে টাকা ধার করতে হয়েছে ৷ সেই ঋণের পরিমাণ 30 হাজার টাকারও বেশি হয়ে গিয়েছে ৷ এরপর আর এভাবে দেনা করে সংসার টানা সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে ৷ তিনি বলেন, "আমি বেতন পাচ্ছি না, কিন্তু ছুটি তো নিতেই পারি ৷ তাই ছুটি নিয়ে মাঠে দিনমজুরের কাজ করছি ৷"
প্রাথমিক শিক্ষক প্রভুদত্তা সাহুর বেতন না-পাওয়া নিয়ে অতিরিক্ত জেলা শিক্ষা আধিকারিক কেশব মেহের জানান, সাহু ওড়িশা স্টেট অ্যাসিস্ট্যান্ট টিচার্স ক্যাডার-এর অন্তর্ভুক্ত এক্স-ক্যাডার ৷ digiGOV ওয়েবসাইটে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গত দু'মাস ধরে এই ধরনের শিক্ষকদের বেতন পাওয়া নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে ৷ এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই বেতন দেওয়া হয় ৷ আধিকারিক আশ্বস্ত করেন, এখন 14টি ব্লকের মধ্যে 12টি ব্লকে এই যান্ত্রিক ত্রুটির সমস্যা মিটে গিয়েছে ৷ বাকি দুই ব্লকের শিক্ষকরা খুব শীঘ্রই বেতন পাবেন ৷
জেলায় 809 জন এক্স-ক্যাডার শিক্ষক রয়েছেন ৷ সম্প্রতি জেলার শিক্ষা কার্যালয়ের অ্যাকাউনটেন্টরা কর্মবিরতি করে ৷ তখন ওড়িশা সরকার digiGOV ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ৷ ইতিমধ্যে সরকারের তরফে শিক্ষা দফতরের কার্যালয়গুলিতে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে ৷