আসানসোল, 31 জানুয়রি : কাঁধে স্কুলের ব্যাগের বদলে জুটেছিল পরিবারের অভাব দূর করার ভার ৷ অভাবের তাড়নায় সকালবেলা স্কুলের বদলে ছুটে যেতে হত কাজের জায়গায় ৷ কারও বা আবার পড়াশোনার প্রতি কোনওরকম ইচ্ছে ছিল না ৷ এবারে এই সমস্ত স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে নয়া উদ্যোগ নিল আসানসোলের শীতলা বাউরি পাড়ার একটি স্বেচ্ছেসেবী সংস্থা ৷
ওই স্বেচ্ছেসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে দরিদ্র পরিবারের স্কুলছুট 18 জন শিশুর হাতেখড়ির আয়োজন করা হয় ৷ স্কুলছুটদের ফের স্কুলমুখী করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা ৷ এমনকী শিশুদের স্কুলে পাঠানো থেকে শুরু করে পড়াশোনা, বাই-খাতা-কলমসহ অন্য যাবতীয় খরচের দায়িত্বও এই স্বেচ্ছেসেবী সংস্থা বহন করবে ৷
উল্লেখ্য, আসানসোল উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বহু এলাকায় দিনের পর দিন স্কুল ছুটদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে ৷ শিশু শ্রমের অন্ধকারে যাতে শৈশব হারিয়ে না যায়, তাই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উড়ানের পক্ষ থেকে সেই সমস্ত অঞ্চলে ছোটো ছোটো শিক্ষা কেন্দ্রও গড়ে তোলা হয়েছে ৷ যেখানে শুধুমাত্র পড়াশোনা নয়, ছবি আঁকা, গান আরও অনেক কিছুই শেখানো হবে শিশুদের৷
স্বেচ্ছেসবী সংস্থার পক্ষ থেকে সুমিত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, "এলাকায় কমপক্ষে 30 জন স্কুলছুট ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে ৷ 18জনকে এখনও পর্যন্ত আমরা বোঝাতে পেরেছি ৷ পাড়ার অন্য কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের দেখিয়ে তাঁদের উৎসাহিত করানো হয়েছে ৷"
সংস্থার অপর সদস্য মুধুরিমা দত্ত জানান, "শিশুদের সেই পুরোনো শিক্ষার পরিবেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই অনুষ্ঠান ৷ ওরা প্রত্যেকেই অক্ষর চেনে ৷ স্কুলে গিয়েছে ৷ পুরোনো দিনের সঙ্গে যাতে নিজেকে মেলাতে পারে সেই কারণেই ফের একবার তাঁদের হাতে-খড়ির ব্যবস্থা করা হয় ৷"
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, আসানসোল জেলা হাসপাতাল সুপার নিখিল চন্দ্র দাস, প্রাক্তন বিধায়ক অমিতাভ মুখোপাধ্যায়, শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত, সমাজসেবী চন্দনা মুখোপাধ্যায়, অসীম সরকারসহ আরও অনেকে ৷ স্কুলে যাওয়া ও পড়াশোনা করা কতটা জরুরি, অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা শিশু ও তাঁদের পরিবারের অভিভাবকদের বোঝান ৷