শান্তিপুর, 16 মার্চ : কবি কৃত্তিবাস জন্মগ্রহণ করেছিলেন নদিয়ার শান্তিপুর থানার ফুলিয়াতে । ফুলিয়াতে রয়েছে তাঁর সমাধিস্থল । সমাধিস্থলের পাশেই কৃত্তিবাসের নামে করা হয়েছে লাইব্রেরি । যেখানে দেশের প্রতিটি ভাষায় লেখা রামায়ণের বই রয়েছে । কিন্তু তিনি যে পুঁথিতে রামায়ণ রচনা করেছিলেন, সেই আসল পুঁথিটি নেই তাঁর নামাঙ্কিত গ্রন্থাগারে । সেটি বর্তমানে রয়েছে ফ্রান্সের জাতীয় গ্রন্থাগারে ।
বিভিন্ন পুরানো বই থেকে জানা যায়, স্বাধীনতার আগে চন্দননগর ছিল ফরাসিদের দখলে । ফরাসিদের দখলে থাকার সময় পি সি কডিয়ার নামে একজন ফ্রান্সের শিক্ষাবিদ চন্দননগরে থাকতেন । সেইসময় তিনি হঠাৎ দেখতে পান স্থানীয়রা একটি মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছে গান-বাজনা করতে করতে । এরপর ওই মৃতদেহর যেখানে শ্রাদ্ধ হচ্ছে সেখানে বিভিন্ন ধরনের গান এবং নাচ হচ্ছে । তিনি তখন কৌতূহলী হয়ে জানতে চান এইরকম গান-বাজনা কেন ? তখন শ্রাদ্ধ বাড়ির সকলেই বলে এটা কৃত্তিবাসী রামায়ণের থেকে নেওয়া হয়েছে । তখন কৃত্তিবাসের রামায়ণের প্রতি উৎসাহিত হয়ে নদীপথে ফুলিয়া এসে সেই রামায়ণের আসল পুঁথিটি সংগ্রহ করেন কডিয়ার । এরপর ফ্রান্সে পাঠিয়ে দেন । জানা যায়, এই পুঁথিটি ফ্রান্সে ক্যাডলক হয়েছে 1776 খ্রিস্টাব্দে । এবং তারপর থেকেই ফ্রান্সের জাতীয় গ্রন্থাগারে এই পুঁথিটি রয়েছে । যদিও ভারত সরকারের অনুরোধে ফ্রান্স সরকার ওই পুঁথিটির একটি নেগেটিভ কপি পাঠিয়েছে বলে জানা যায় ।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যেখানে কবি কৃত্তিবাস এর জন্মস্থান এবং যাঁর নামে নামাঙ্কিত লাইব্রেরি সেই কৃত্তিবাসের আসল পুঁথিটি কেন ফ্রান্সে থাকবে । এ বিষয়ে দীর্ঘদিন রামায়ণ নিয়ে চর্চা করেছেন কেশবলাল চক্রবর্তী । তিনি বলেন, ‘‘এটি ভারতের একটি অমূল্য সম্পদ । আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব সরকার উদ্যোগ নিয়ে এই আসল পুঁথিটি আনার চেষ্টা করুক ।’’
যদিও এ বিষয়ে নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু বলেন, ‘‘এটা আগেও আনার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছে । আগামীদিনেও কেন্দ্রীয় সরকারকে বলব ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুঁথিটিকে আনার বিষয়ে কথা বলতে ।’’