নদিয়া, 28 জুন : নেই বিক্রি, দেখা নেই পাইকারি ব্যবসায়ীদের । ঘরে পড়ে থেকেই নষ্ট হচ্ছে জিনিস । লাভ তো দুরস্ত, লকডাউনের জেরে লাখ লাখ টাকা ক্ষতির আশঙ্কায় নদিয়ার রাখি শিল্পীরা ।
মূলত কলকাতা থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করেন । এরপর সারা বছর বাড়িতে বসে রাখি বানানোর কাজ করেন এই শিল্পীরা । রাখি পূর্ণিমা । এই একটি দিনের বিক্রির ওপর নির্ভর করে সারা বছর চলে রাখি তৈরির কাজ । ভাই-বোনের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার উৎসব রাখিবন্ধন । কিন্তু, এ'বছর যেন সব উৎসবেই বাধ সেধেছে কোরোনা ভাইরাস ।
কোরোনা সংক্রমণের জেরে বেড়েছে লকডাউন । দীর্ঘদিন ধরে পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকার পর কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে । পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানোর জন্য বিভিন্ন যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে । এছাড়া যারা জরুরি পরিষেবা দেন- কাঁচামালের ক্ষেত্রেও কিছু কিছু ছাড় মিলেছে । ট্রেন চলাচল করছে হাতে গোনা । যারা পাইকারি রাখি কিনতেন, এই অবস্থায় দেখা মিলছে না তাঁদেরও । আসবেনই না কী করে ? আসলেও রাখি বিক্রি করবেন কোথায় ? এ'সব চিন্তাই এখন ঘুম কেড়েছে রাখি শিল্পীদের ।
চলতি বছরের প্রথম দিকে রাখি তৈরি শুরু করলেও কোরোনা সংক্রমণের পর রাখি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে । সারা বছর রাখি তৈরি করেই সংসার চলে নদিয়া রানাঘাট থানা এলাকার কয়েকশো পরিবারের ।
রাখি শিল্পীরা জানাচ্ছেন, যে রাখিগুলি তৈরি হয়ে গিয়েছে সেগুলো সব বাড়িতেই পড়ে রয়েছে । এ'বছর যদি বিক্রি না হলে আগামী বছর এ'গুলি আর বিক্রি হবে না । আপাতত কাজ বন্ধ থাকলেও প্রচুর ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা । আগামী দিনে কিভাবে সংসার চালাবেন সেই কথা ভেবেই ঘুম উড়েছে তাঁদের ।
মূলত সুদে টাকা নিয়ে কাঁচামাল কিনে রাখি তৈরি করেন । দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে কাজ । নেই রাখি বিক্রি । এই অবস্থায় যাদের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়েছেন, তাঁদের টাকা ফেরত দেবেনই বা কী করে ? একদিকে সংসার, আরেকদিকে সুদের টাকা শোধ করার চিন্তা । এ'রকম চলতে থাকলে কীভাবে সংসার চালাবেন আগামীদিনে সেই দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে রাখি শিল্পীদের ।
শিল্পীদের দাবি, সরকার যদি এই মুহূর্তে রাখি শিল্পীদের জন্য আলাদাভাবে কোনও সাহায্য না করে তাহলে না খেতে পেয়ে মরতে হবে তাঁদের । পাশাপাশি রাখি শিল্প ছেড়ে অন্য পেশায় যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না বলেও জানিয়েছেন তাঁরা ।