কৃষ্ণগঞ্জ, 14 অক্টোবর : তোড়জোড় চলছিল সকাল থেকেই ৷ কত কী কাজ ৷ সাজসজ্জার জন্য যা লাগে তা কেনা হয়ে গিয়েছিল ইতিমধ্যেই ৷ প্রস্তুতিও সারা ৷ আসন পাতা, আল্পনা আরও সব উপাচারে যখন বিশ্বাসবাড়িতে হইহই তখনও কিন্তু কৌতুহলের কেন্দ্রবিন্দু এলাকার সবার সামনেই আসেনি ৷ এল যখন, দুপুর পেরিয়ে লক্ষ্মীবারের সূর্য বিকেলের পথে ৷ যেই শুনল, অবাক হল অতি বিস্ময়ে ৷ বলে কী ! বিশ্বাস বাড়ি তখন লক্ষ্মী-আলোয় ঝলমল করছে ৷ শাঁখ বাজছে, উলুধ্বনি চতুর্দিকে ৷ মা যে এসেছেন জীবন্ত লক্ষ্মী হয়ে ৷
ঘটনাস্থান নদিয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ সংলগ্ন মাজদিয়ার শিবনিবাস গ্রাম ৷ গতকাল লক্ষ্মীপুজোর দিন বাড়িতে নিজের কন্যাসন্তানকেই দেবী রূপে পুজো করে চমকে দিলেন ঝুমাশ্রী খাঁ বিশ্বাস ও তাঁর স্বামী রমেশ বিশ্বাস ৷ বিশ্বাস দম্পতির দুই কন্যা ৷ বড় মেয়ে রূপকথা ৷ বয়স পাঁচ ৷ আর ছোটো মেয়ে সাঁঝবাতি ৷ রমেশবাবু শক্তিনগর উচ্চবিদ্যালয় শিক্ষকতা করেন । তিনি বললেন , "বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে দেখি কন্যা সন্তানদের হত্যা করা হচ্ছে, অথবা কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার অপরাধে মায়ের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে৷ আজও সমাজে অবহেলিত মহিলারা । সেজন্যই এই পুজোর আয়োজন ৷"
ঝুমাশ্রী এই বিষয়ে বলেন, "প্রত্যেকে যেন তাঁদের মেয়েকে খুব ভালো করে মানুষ করে, বড়ো করে ৷ তাহলে সেই মেয়েই সম্মান বাড়াবে ৷ আয় বাড়বে ৷ বাড়িতে শান্তি আসবে ৷ সবকিছুই বাড়বে ৷"
পুজোর আয়োজনে কোনওরকম খামতি রাখেননি বিশ্বাস দম্পতি ৷ বাড়িতে লক্ষ্মীর আসন বসিয়ে, পুরোহিত ডেকে করা হয় পুজো ৷ দেওয়া হয় অঞ্জলিও ৷
পুজো করে খুশি পুরোহিত ৷ তিনি বলেন, "একটা অন্যরকম অনুভূতি হল ৷
সত্যিই মায়ের কাছে তো মেয়েই লক্ষ্মী ৷"