কৃষ্ণনগর, 12 সেপ্টেম্বর: রাস্তায় রাস্তায় পড়েছে বাঁশ ৷ চলছে প্যান্ডেল বাঁধার কাজ ৷ জিনিসপত্র কেনার জন্য দোকানে দোকানে মানুষের ভিড় ৷ বাড়ি বাড়ি এসে গিয়েছে পুজোর চাঁদার স্লিপ ৷ কারণ দুর্গাপুজোয় আর বাকি হাতেগোনা কয়েকটা দিন ৷ তাই এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা মৃৎশিল্পীরাদের অন্দরমহলেও ৷ জোরকদমে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ ৷
নদিয়ার কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্প পৃথিবী বিখ্যাত । তবে করোনা অতিমারির সময়ে জগৎ বিখ্যাত এই শিল্পে সাময়িকভাবে ভাঁটা পড়ে ছিল ৷ কিন্তু বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে ঘিরে এই বছর হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার আশায় দিন গুনছেন কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্পীরা । বিগত দু'তিন বছর রোগ ব্যাধি অনেক ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে চলতি বছরে দেশ-বিদেশ থেকে একাধিক প্রতিমা তৈরির বায়না পেয়েছেন তাঁরা ৷ এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি লাভের আশায় বুক বাঁধছেন মৃৎশিল্পীরা । ইতিমধ্যেই বাংলা ছাড়িয়ে ভিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকেও কৃষ্ণনগরের শিল্পীদের কাছে দুর্গা প্রতিমার বায়না আসতে শুরু করেছে । এর জেরেই এখন হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্পীরা।
এই প্রসঙ্গে মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, করোনার জেরে ব্যবসায়িক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ৷ সেই ধাক্কা কাটিয়ে এবারে প্রতিমার চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে ধীরে ধীরে ৷ পাশাপাশি আসন্ন দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ফোনের মাধ্যমে বিদেশ থেকেও প্রতিমার বায়না আসতে শুরু করেছে । তবে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে বাঁধ সেধেছে খোলা বাজারে প্রতিমা তৈরির কাঁচামালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি । সঙ্গে কারিগরের অভাব ৷ কাঁচামালের তুলনায় প্রতিমার মূল্যবৃদ্ধি হয়নি । পুজো উদ্যোক্তারা প্রতিমার দাম বাড়াতে চাইছেন না । ফলে লাভের অংকটা আগের তুলনায় অনেকটাই নিম্নমুখী বলেই জানাচ্ছেন শিল্পীরা।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর ব্যস্ততা তুঙ্গে কৃষ্ণনগরের ডাকের সাজের শিল্পীদের
তবে মৃৎশিল্পীদের দাবি, মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব থাকলেও চলতি বছরে প্রতিমার চাহিদা বেড়েছে । সব মিলিয়ে করোনা অতিমারি কাটিয়ে কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্পীরা তাঁদের সাবেকি ঐতিহ্যকে ফিরে পেতে চলেছেন বলে মত অনেকের । মৃৎশিল্পী কানাইলাল ঘোষ বলেন,"আগে বিদেশের অনেক জায়গায়ই দুর্গা প্রতিমা সম্পর্কে তেমন বিশেষ কিছু জানত না । ইউনেসকো দুর্গা প্রতিমা সম্পর্কে ঘোষণা করার পর চাহিদা আরও বেড়ে গিয়েছে।" শুধু দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করেই নয়, কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত প্রতিমা মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করার জন্যেও বিদেশের মাটিতে পাড়ি দিচ্ছে । এতে খুশির হাওয়া পটুয়ামহলে ৷