বহরমপুর, 27 মে : বাবার মৃত্যুর পর বড় দাদাই সংসারের হাল ধরেছিলেন । সেই দাদার হঠাৎ মৃত্যুতে জীবনের মোড় ঘুরে যায় দৌলতাবাদ থানার ছয়ঘরির বাসিন্দা মৌসুমী বিশ্বাসের (Cultivation in Berhampore)। এক দাদা, মা, দিদি, আর মৃত দাদার ছেলে-মেয়ের সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর কাঁধে । তখন তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর বিভাগে পাঠরতা । লেখা-পড়ায় ছেদ টেনে সংসারের হাল ধরেন মৌসুমী । বাবার রেখে যাওয়া 6 কাঠা জমির উপর শুরু করেন সবজি চাষ । বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে এবং কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে জৈব পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে মৌসুমী এখন পরিচিত মুখ । বাংলা ছাড়িয়ে ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য এবং ভারত সরকারের একাধিক খেতাব তাঁর ঝুলিতে ।
দাদার মৃত্যুই জীবনের গতিপথ পালটে দেয় । দু'চোখে দেখতে পান না মা । শারীরিকভাবে অসুস্থ দাদা । দাদার ছেলে-মেয়ে । ভরা সংসার । বাবার রেখে যাওয়া 6 কাঠা জমি আর কৃষি সরঞ্জাম নিয়ে মাঠেই ঝাঁপিয়ে পড়েন মৌসুমী । নিজে হাতে চাষ করেন তিনি । চাষে সাফল্য আসায় মাটির বাড়ি ভেঙে সেখানে একতলা পাকা বাড়ি তুলেছেন । ধীরে ধীরে জমি বাড়িয়েছেন । এখন নিজের কৃষি জমির পরিমাণ 6 বিঘা । সেই জমিতে ফলছে পটল, বেগুন, লঙ্কা, লাউ, কুমড়ো-সহ বিভিন্ন ফসল । রয়েছে একটি কলা বাগান । একটি পানের বরজ । রোজ নিজে ক্ষেতের পরিচর্যা করেন ।
আরও পড়ুন : ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে পাথুরে জমিতে সবজি বাগান, রোজগারের দিশা দেখাচ্ছেন ঝালদার মহিলারা
কৃষি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এবং কৃষি বিজ্ঞানীদের পরামর্শ নিয়ে মৌসুমী এখন কৃষিকাজে দক্ষ হয়ে উঠেছেন । এলাকার কৃষকরা তাঁর কাছে পরামর্শ নিতে আসেন । পরামর্শ দিতে ও আলোচনায় অংশ নিতে ডাক আসে বিভিন্ন জেলা ও রাজ্য থেকে । ঘরে তাক ভর্তি একাধিক স্মারকে । সফল কৃষিজীবী হিসাবে মৌসুমী এখন জেলার মানুষের কাছে আইকন । একাধিক পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে ৷