সামশেরগঞ্জ (মুর্শিদাবাদ), 4 ফেব্রুয়ারি: ভারত-বাংলাদেশ জলবণ্টন চুক্তির এবছরের কার্যকাল শুরু হয়েছে জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে ৷ কিন্তু, জলবণ্টন প্রক্রিয়া শুরু হতই গঙ্গা নদীতে চর পড়তে শুরু করেছে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে (Ganges Water Level Goes Down in Murshidabad) ৷ যার জেরে বন্ধ হতে বসেছে খেয়া চলাচল ৷ তার ফলে সমস্যায় পড়ছেন নিত্যযাত্রীরা ৷ উচ্চ অববাহিকায় বৃষ্টি না-হওয়ায়, গঙ্গার জলস্তর নামতে শুরু করেছে ৷
উল্লেখ্য, 1996 সালে 12 ডিসেম্বর ভারত-বাংলাদেশ 30 বছরের জলবণ্টন চুক্তি হয়েছে ৷ সেই চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিবছর 1 জানুয়ারি থেকে 31 মে পর্যন্ত পদ্মার জলপ্রবাহ গঙ্গার উচ্চ অববাহিকার উপর নির্ভর করে ৷ যদি গঙ্গার উচ্চ অববাহিকা থেকে 50 হাজার কিউসেক জল প্রবাহিত হলে, 1-10 জানুয়ারি পর্যন্ত 35 হাজার কিউসেক জল বাংলাদেশকে ছাড়বে ভারত সরকার ৷ আর 15 হাজার কিউসেক জল গঙ্গায় প্রবাহিত হবে ৷ এই পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রিত ফরাক্কা ব্যারেজ থেকে ৷
একই ভাবে পরবর্তী 10 দিন 35 হাজার কিউসেক জল গঙ্গায় প্রবাহিত হবে আর 15 হাজার কিউসেক জল যাবে পদ্মায় ৷ 31 মে পর্যন্ত এই প্রক্রিয়ায় গঙ্গা ও পদ্মার মধ্যে জলবণ্টন করে দুই দেশ ৷ কিন্তু, এবছর এই জলবণ্টন প্রক্রিয়া শুরু হতেই মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে গঙ্গাবক্ষে জলস্তর নেমে গিয়েছে ৷ বিভিন্ন জায়গায় চর পড়ে গিয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে খেয়া চলাচলে সমস্যা হচ্ছে ৷ এই পরিস্থিতির আসল কারণ হিসেবে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, উচ্চ অববাহিকায় বৃষ্টির পরিমাণ কম বলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: খুব শিগগিরই তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে সমস্যা মিটে যাবে, আশা হাসিনার
কিন্তু বিষয় হল, এমনিতেও এই সময় উচ্চ অববাহিকায় বৃষ্টি হয় না ৷ তা সত্ত্বেও এই পরিস্থিতি ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে ৷ অন্যদিকে, বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি 2026 সাল পর্যন্ত রয়েছে ৷ তারপর সেই মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না, তাও জানা নেই ৷ এই পরিস্থিতিতে পদ্মা নদীতে জলবণ্টন করতে গিয়ে গঙ্গার গতি প্রবাহ বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছে ৷ আর জল প্রবাহ বন্ধ হলে খেয়া পারাপারও বন্ধ হয়ে যাবে ৷ ফলে সমস্যায় পড়তে পারে সাধারণ মানুষ ৷ এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বছর দশ আগে ৷ সেই সময় বহরমপুরে ভাগীরথী ব্রিজের নীচে চর পড়ে গিয়েছিল ৷ সেই সময় মানুষ নদীর চরে নেমে পড়েছিলেন ৷