বহরমপুর, 8 অগস্ট: জিএসটি আর চালের দাম বৃদ্ধির জোড়া ফলায় একলাফে কেজি প্রতি দশ টাকা দাম বেড়েছে মুড়িতে (Fried the Bandage is Starting to Open at Home) । দাম বাড়তেই মুড়ি ভাজার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে । দেদার বিকোচ্ছে মাটির তৈরি মুড়ির খোলাও । গ্রামের মানুষের দাবি, কেজিতে দশ টাকা বেশি দিয়ে মুড়ি খাওয়ার সামর্থ্য তাঁদের নেই । তাই আগের মতো ফের বাড়িতে মুড়ি ভাজতে শুরু করেছেন তাঁরা । মুড়ি মিল মালিকদের দাবি, মুড়ির দাম বাড়ায় বিক্রি আগের তুলনায় অনেক কমেছে ।
প্যাকেট জাত খাবারে কেন্দ্র 5 শতাংশ জিএসটি চাপিয়েছে । সেই তালিকায় পড়েছে মুড়িও । কেন্দ্রের এই সিন্ধান্তের বিরোধিতায় 21 জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে মুড়ি হাতে নিয়েই গর্জে উঠেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো চালের দাম বাড়ায় একলাফে মুড়ির দাম বেড়েছে কেজি প্রতি দশ টাকা ।
মুড়ি ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন ঘোষ জানান, চারদিন আগে বস্তার খোলা মুড়ি বিক্রি করেছি 40 টাকা প্রতি কেজি । আজ থেকে সেই দাম 50 টাকায় উঠেছে । স্বাভাবিকভাবে বিক্রিতেও প্রভাব পড়েছে ।
আরও পড়ুন: মুড়ি থেকে জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিতে দুর্গাপুরে তৃণমূলের বিক্ষোভ
বড়ঞা ব্লকের মুড়ি ব্যবসায়ী আনন্দ সাহা জানান, চালের দাম কুইন্টাল প্রতি 700-800 টাকা বেড়েছে । স্বাভাবিকভাবে মুড়ির দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি । দাম বাড়তেই বিক্রি তলানিতে এসে ঠেকেছে ।
একসময় খোলায় হাতে ভাজা মুড়ির চল ছিল গ্রামগঞ্জে । প্রতিটি বাড়িতেই গৃহিনীরা নিজেদের প্রয়োজনীয় মুড়ি নিজেরাই ভাজতেন । বাড়িতে মুড়ির চাল তৈরি করে বা দোকান থেকে মুড়ির চাল কিনে মুড়ি ভাজতেন অনেকে । মুড়ির মিলের প্রচলন হওয়ায় ধীরে ধীরে বাড়িতে হাতে ভাজা মুড়ির চল প্রায় উঠে গিয়েছিল । গ্রামের মানুষও মুড়ির জন্য মিলের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল । গত চারদিনে মুড়ির ব্যবসায় ভাটা পড়েছে । জিএসটি-র ধাক্কা সামলাতেই একলাফে চালের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় মুড়ির দাম বেড়েছে পঁচিশ শতাংশ হারে ।
আরও পড়ুন: আমাদের মুড়ি ফিরিয়ে দাও, নইলে বিজেপি বিদায় নাও ! একুশের মঞ্চে জিএসটি-প্রতিবাদ মমতার
ডাকবাংলার পাইকারি মুদিখানা ব্যবসায়ী সুমন ঘোষ জানান, চারদিন আগে 25 কেজি প্যাকেটের চালের দাম ছিল 700-800 টাকা। আজ সেই চালের দাম 900-950 টাকা । এই ধাক্কা সহ্য করতে না-পেরেই গ্রামের মানুষ ফের তুলে রাখা মাটির খোলা নামিয়ে কাঠের উনুনে চাপিয়েছেন । কেউ কেউ নতুন মাটির খোলা কিনতে কুমোর পাড়ায় পা-রেখেছেন। এই সুবাদে মাটির খোলার চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে। পারশালিকার বাসিন্দা রায়ামুখী বাগদি জানান, ঘরে ভাজলে অনেক সস্তা হবে । তাই মুড়ি ঘরে ভাজতে শুরু করেছি ৷
চালের দাম হঠাৎ ঊর্ধমুখী কেন ? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে । জানা গিয়েছে, ধানের দাম বাড়ায় চালের দাম হুহু করে বাড়তে শুরু করেছে । ধানের দাম কুইন্টাল প্রতি 1150 টাকা থেকে বেড়ে 2100 টাকায় দাঁড়িয়েছে । চাষিদের দাবি, চাষিদের হাত থেকে ধান চলে যাওয়ার পর ধানে কালোবাজারি শুরু হয়েছে । আগামিদিনে চাল, মুড়ির দাম কোথায় ঠেকবে সেই আশঙ্কার মেঘ ক্রমশ ঘন হতে শুরু করেছে ।