কলকাতা, 29 অগস্ট: তিন বছর পর ফিরছে বিশ্বের দীর্ঘতম সাঁতার প্রতিযোগিতা। কোভিডের কারণে গত তিন বছর এই প্রতিযোগিতা বন্ধ ছিল। সব বাধা-প্রতিকূলতা কাটিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার ঐতিহ্যবাহী দীর্ঘতম সাঁতার প্রতিযোগিতার প্রত্যাবর্তন। সবমিলিয়ে আপাতত আগামী 3 সেপ্টেম্বর রবিবার ভাগীরথীতে নামার অপেক্ষায় দেশ-বিদেশের সাঁতারুরা।
মুর্শিদাবাদ মানেই দেশ এবং বঙ্গের অনেক ইতিহাস জড়িয়ে। নবাবিয়ানার স্মৃতি, কাঁসা-পিতল, মুর্শিদাবাদ সিল্ক শাড়ির গুণমানের পাশাপাশি এই জেলার সাঁতার প্রতিযোগিতাও ঐতিহ্যের। অতীতে এই প্রতিযোগিতা ছিল বিশ্বের দূরপাল্লার সাঁতারুদের কাছে প্র্যাকটিসের মঞ্চ। ইংলিশ চ্যানেলে নামার প্রস্তুতি হিসেবে বুলা চৌধুরী, সায়নী দাসরা এই সাঁতার প্রতিযোগিতা থেকেই নিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ারও দু'বছর আগে এই জেলার গঙ্গাবক্ষে শুরু হয়েছিল 81 কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতা।
সেই ঐতিহ্য এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন মুর্শিদাবাদ সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। বিশ্ব ইংলিশ চ্যানেল, পক প্রণালীর মতো বড় বড় একাধিক সাঁতারের ব্যক্তিগত ইভেন্ট আছে ঠিকই কিন্তু মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের 81 কিলোমিটারের মতো সাঁতার প্রতিযোগিতা সব থেকে আলাদা। দৈর্ঘ্য এবং চ্যালেঞ্জ দু'টোতেই বিশ্বের সাঁতারুদের কাছে এই প্রতিযোগিতা অন্যমাত্রা বহন করে। এই বছর 81 কিলোমিটার সাঁতারে মোট প্রতিযোগীর সংখ্যা 24 জন। তার মধ্যে মহিলা প্রতিযোগীর সংখ্যা চার। এই বিভাগে মালয়েশিয়ার 3, স্পেনের 2, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ডের এক জন করে সাঁতারু অংশ নিচ্ছেন।
বাংলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সাঁতারুরাও অংশ নিচ্ছেন। 3 সেপ্টেম্বর ভোরে জঙ্গিপুরের আহিরণ ঘাট থেকে শুরু 81 কিলোমিটার সাঁতারের। শেষ বহরমপুরের গোরাবাজারের কৃষ্ণনাথ কলেজ ঘাটে। একইদিনে জিয়াগঞ্জ ঘাট থেকে 19 কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতা হবে। জিয়াগঞ্জ থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে গোরাবাজার কৃষ্ণনাথ কলেজ ঘাটে। এই 19 কিলোমিটার প্রতিযোগিতার পুরুষ বিভাগে মোট 31 জন সাঁতারু অংশ নিচ্ছেন। মহিলা বিভাগে আছেন 16 জন সাঁতারু। 81 ও 19 কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতার বাজেট 25 লক্ষ টাকা।
মুর্শিদাবাদ সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের সচিব দেবেন্দ্রনাথ দাস বলেন, "কোভিডের কারণে গত তিন বছর আমরা এই ঐতিহ্যবাহী সাঁতার প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে পারিনি। আমরা এবার নতুন করে ফের শুরু করছি। বিভিন্ন দেশের বেশ কিছু সাঁতারু 81 কিলোমিটারে অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সবাইকে আমরা নিতে পারিনি। এবছর আমরা প্রতিযোগীদের জন্য বিশেষভাবে মেডিক্যাল ব্যবস্থার উপর বেশি করে জোর দিয়েছি। আশা করছি সুষ্ঠুভাবেই প্রতিযোগিতা শেষ করতে পারব।"
আরও পড়ুন: প্যারিস অলিম্পিক্সে আর্টিস্টিক সুইমিংয়ে প্রথমবার দেখা যাবে পুরুষদের