সন্দেশখালি, 13 জানুয়ারি: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সন্দেশখালিতে সন্দেশ 'হাব' তৈরির তোড়জোড় শুরু করে দিল উত্তর 24 পরগনা জেলা প্রশাসন । এনিয়ে প্রাথমিকভাবে ধামাখালি বাজারে সরকারি একটি জমিও চিহ্নিত করা হয়েছে । সেই জমি চিহ্নিতকরণের প্রস্তাব লিখিত আকারে পাঠানো হবে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরে । সেখান থেকে সবুজ সংকেত মিললেই সন্দেশ 'হাব' তৈরির পরিকাঠামোর কাজ শুরু করে দেওয়া হবে জেলা প্রশাসনের তরফে । এমনটাই জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রে ।
রবিবার জেলাশাসক শরৎকুমার দ্বিবেদীর নেতৃত্বে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের এক টিম সন্দেশখালিতে যান জমির সন্ধান করতে । সেই দলে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সুকুমার মাহাতোও । জমি খোঁজ করার পাশাপাশি এদিন স্থানীয় মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও আলোচনা করেন জেলাশাসক । মিষ্টি 'হাব' হলে কী কী ধরনের মিষ্টি সেখানে রাখা যেতে পারে, সেই বিষয়েও তিনি পরামর্শ নিয়েছেন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে । শুধু আলোচনা কিংবা পরামর্শ নেওয়াই নয় ! সন্দেশখালি 1 ও 2 নম্বর ব্লকের মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এদিন বৈঠক করে তথ্যও সংগ্রহ করেছেন জেলার প্রশাসনিক প্রধান ।
জানা গিয়েছে,সন্দেশখালিতে গিয়ে জেলাশাসক শরৎকুমার দ্বিবেদী তিনটি জায়গা পরিদর্শন করে জমির চরিত্র খতিয়ে দেখেছেন । তার কাগজপত্র ঠিকঠাক রয়েছে কি না,তা স্থানীয় বিধায়ক সুকুমার মাহাতোকে দেখে নিতে বলেছেন তিনি । সূত্রের খবর, তার মধ্যে থেকেই ধামাখালি বাজারের ওই জমিটি পছন্দ হয়েছে জেলাশাসকের । যা পরবর্তীতে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হবে সরকারের কাছে ।
গত 30 ডিসেম্বর প্রশাসনিক সভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সন্দেশখালিতে কী কী ধরনের মিষ্টি বেশি পাওয়া যায়, তা জানতে চান জনতার কাছ থেকে । আগামী দিনে সন্দেশখালিতে যাতে বেশি করে মিষ্টি পাওয়া যায়, তা প্রশাসনকে দেখার নির্দেশ দেন তিনি । এখানে সন্দেশ 'হাব' কিংবা 'ক্লাস্টার' যাতে তৈরি করা যায়, সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে যান রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান । মুখ্যমন্ত্রী চান,'ক্লাস্টারের মাধ্যমে এলাকার ছেলে-মেয়ে অথবা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা যাতে স্বাবলম্বী হতে পারেন ।'
মুখ্যমন্ত্রীর সেদিনের সেই সভা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক শরৎকুমার দ্বিবেদীও । তাই, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবে রূপ দিতে বিশেষভাবে উদ্যোগী হন তিনি । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশের 15 দিনের মধ্যেই সন্দেশখালিতে সন্দেশের নতুন হাব তৈরির তোড়জোড় শুরু করে দিল প্রশাসন ।
এই বিষয়ে ইটিভি ভারতের তরফে যোগাযোগ করা হয় উত্তর 24 পরগনার জেলাশাসক শরৎকুমার দ্বিবেদীর সঙ্গে । তিনি ফোনে বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো আমরা সন্দেশখালিতে গিয়ে জমি চিহ্নিত করার কাজ খতিয়ে দেখেছি । ঠিক কোন জায়গায় মিষ্টি হাব করা যেতে পারে তা নিয়ে একদিকে যেমন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তেমনই মিষ্টি হাবে কী কী ধরনের মিষ্টি জায়গা পেতে পারে, সেই বিষয়েও বৈঠক করে পরামর্শ নেওয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে । মিষ্টি হাব নিয়ে এলাকার লোকজন এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ রয়েছে । প্রাথমিকভাবে আমরা ধামাখালি বাজারে সরকারি একটি জমি চিহ্নিত করেছি । সেই প্রস্তাব আমরা পাঠাচ্ছি সরকারের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরে । তাঁদের সবুজ সংকেত মিললেই সেখানে পরিকাঠামোর কাজ শুরু হবে ।"