মালদা, 1 সেপ্টেম্বর: পঞ্চায়েত সমিতির উপ-সমিতি গঠনকে কেন্দ্র করে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল গাজোল ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি চার্জ করতে হয় পুলিশকে ৷ শুক্রবারের এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে গাজোল ব্লক অফিস চত্বরে ৷ সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী ৷ এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল নেতৃত্বের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ তবে, পুরো ঘটনার দায় তৃণমূলের উপরেই চাপিয়েছে ‘জয়হিন্দ বাহিনী’ ৷
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে 45 আসনের গাজোল পঞ্চায়েত সমিতিতে 24 টি আসন দখল করেছে ঘাসফুল শিবির ৷ ফলে এই পঞ্চায়েত সমিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ তারা ৷ নির্দিষ্ট দিনে পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ডও গঠিত হয়ে গিয়েছে ৷ শুক্রবার পঞ্চায়েত সমিতির উপ-সমিতি গঠনের দিন নির্ধারিত করে ব্লক প্রশাসন ৷ নির্দিষ্ট সময়েই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা সভাকক্ষে উপস্থিত হন ৷ কিন্তু, কিছুক্ষণ পর থেকেই সভার পরিবেশ গরম হতে শুরু করে ৷
জানা গিয়েছে, উপসমিতির সদস্য নির্বাচনে মূল তৃণমূল ও শাসকদলের শাখা সংগঠন ‘জয়হিন্দ বাহিনী’র বিরোধ শুরু হয় ৷ সভাকক্ষের বচসা একসময় বেরিয়ে আসে বাইরেও ৷ দু’পক্ষের সমর্থকরা পরস্পরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ৷ একসময় সেখানে পার্কিংয়ে থাকা গাড়ি ভাঙচুর করতে উদ্যোত হন দুই গোষ্ঠীর সদস্যরা ৷ তখনই লাঠি চার্জ শুরু করে পুলিশ ৷ ফাঁকা করে দেওয়া হয় ব্লক অফিস চত্বর ৷
পুলিশের উপস্থিতিতে পরে পঞ্চায়েত সমিতির সভাকক্ষে ফের শুরু হয় উপ-সমিতি নির্বাচনের কাজ ৷ তবে, দলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ গাজোল ব্লকের তৃণমূল সভাপতি দীনেশ টুডুকে ফোন করা হলেও, তাঁর সঙ্গে সংযোগ করা যায়নি ৷ জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবদুর রহিম বকসিকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এমন ঘটনার কথা তাঁর জানা নেই ৷ তিনি খোঁজখবর নিয়ে দেখছেন ৷ তবে, যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তা বাঞ্ছনীয় নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি ৷ তাঁর দাবি, এর পিছনে বিরোধীদের উস্কানিও থাকতে পারে ৷
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে খানাকুলে পুলিশ-বিজেপি খণ্ডযুদ্ধ
এদিকে জয়হিন্দ বাহিনীর গাজোল ব্লকের সভাপতি বিশাল সাহা বলেন, “আজ গাজোল পঞ্চায়েত সমিতিতে উপ-সমিতির বোর্ড গঠন ৷ আমার মা সোমা সাহা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ৷ বাবাকে ফোন করে মা জানায়, গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন তাঁর অনুগামীদের নির্দেশ দেন, বাইরে সুদীপ সাহা কিংবা সঞ্জয় সাহাকে দেখলে মারতে ৷ আমি খবর পেয়ে সেখানে যাই ৷ দেখি, ব্লক অফিস চত্বরে পুলিশ রয়েছে ৷ সেখানে রাজু নামে একজনের দলবল লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে ৷ রাজু একজন সমাজবিরোধী ৷ জয়ন্ত ঘোষ এবং প্রসেনজিৎ সাহার নেতৃত্বে আমরা কয়েকজন ভিতরে ঢুকতেই ওরা লাঠি দেখায় ৷ এর পর পুলিশ লাঠি চার্জ করে এলাকা ফাঁকা করে দেয় ৷ কিছু লোকের উস্কানিতে এই ঘটনা ঘটেছে ৷ জয়হিন্দ বাহিনীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা মিথ্যে ৷ গোটা ঘটনা প্রশাসন খতিয়ে দেখুক ৷ দলীয় নেতৃত্বও তদন্ত করুক ৷”