মালদা, 3 এপ্রিল : অনলাইন প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছিলেন খোদ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি । ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়েছিল প্রায় 17 লক্ষ টাকা ৷ এই প্রতারণার ঘটনায় মালদা থেকে গ্রেফতার হল তিন মূর্তিমান (Fraud case of Rs 17 lakh with former High Court Judge ) ৷
2020 সালের অক্টোবরে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ঘনশ্যামজির সঙ্গে প্রতারণা হয় । তিনি উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের বাসিন্দা । এক বেসরকারি মোবাইল সংস্থার ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে প্রতারকরা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল । এরপর 15 থেকে 19 অক্টোবরের মধ্যে তাঁর স্টেট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে 16 লক্ষ 78 হাজার 380 টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় । 19 অক্টোবর প্রয়াগরাজের সাইবার ক্রাইম থানায় এনিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ঘনশ্যামজি । এই ঘটনায় আজ মালদা থেকে তিন যুবককে গ্রেফতার করল সেই রাজ্যের পুলিশ । রবিবার ধৃতদের জেলা আদালতের অনুমতিতে দু’দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে উত্তরপ্রদেশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।
ঘটনার তদন্তে নেমে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ মালদার যোগ খুঁজে পায় । জানা যায়, একাধিক সিমকার্ড ব্যবহার করে প্রাক্তন বিচারপতির অ্যাকাউন্ট থেকে দফায় দফায় টাকা গায়েব করেছে প্রতারকরা । সেই সিমকার্ডগুলি অ্যাক্টিভেট করা হয়েছে মালদার হবিবপুর এলাকা থেকে । এরপরেই গতকাল উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি দল হবিবপুর থানায় আসে । স্থানীয় থানার সহযোগিতায় গতকাল রাতে আইহোর বকসিনগর এলাকা থেকে 28 বছর বয়সী সুজনকুমার মণ্ডলকে আটক করা হয় । তাকে জেরা করতেই সে ঘটনার কথা স্বীকার করে নেয় ।
সুজন একসময় একটি বেসরকারি মোবাইল সংস্থায় কাজ করত । পুলিশকে সে জানায়, তার দুই সহকর্মীও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত । এরপরেই পুলিশ হবিবপুরের হালদার পাড়া থেকে আশিস বর্মন (23) ও বিশ্বজিৎ বর্মনকে (23) আটক করে থানায় নিয়ে যায় । দীর্ঘ জেরার পর তিনজনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ । তাদের হেফাজত থেকে চারটি মোবাইল ফোন এবং প্রচুর সিমকার্ডও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আজ ধৃতদের জেলা আদালতে পেশ করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ । বিচারক দু’দিনের ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করলে ধৃতদের নিয়ে প্রয়াগরাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে সেই রাজ্যের পুলিশ ৷
আরও পড়ুন : কোডিন ফসফেট পাচারচক্রের হদিশ মালদায়, গ্রেফতার তিন
প্রয়াগরাজ সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ আধিকারিক রাজদীপ তিওয়ারি বলেন, “16 লক্ষ 78 হাজার টাকা অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে অনলাইন প্রতারণার একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল । হ্যাকিংয়ে যেসব সিমকার্ড ব্যবহার করা হয়েছিল, তদন্তে তার সূত্র ধরে ধৃতদের নাম উঠে আসে । জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা স্বীকার করেছে, নকল আধারকার্ডের মাধ্যমে তারা সিম অ্যাক্টিভেট করেছিল । এদের হবিবপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে । ধৃতদের দু’দিনের রিমান্ডে উত্তরপ্রদেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ।”