মালদা, 11 নভেম্বর: স্কুলের ভিতরেই মুদিখানার দোকান ৷ তার মালিক আবার স্কুলের এক শিক্ষক দম্পতি ৷ ওই দোকান নাকি পড়ুয়ারাই চালায় (shop in government school in Malda)৷ মালিকরা শুধু হিসাব মিলিয়ে নেন ৷ স্কুলের সাফাইকর্মীর কাজও করতে হয় পড়ুয়াদের ৷ এমন একটি স্কুলেই আবার শিক্ষকতা করেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ৷ তিনি নাকি ‘আসি যাই মাইনে পাই’ শব্দবন্ধকেও পিছনে ফেলে দিয়েছেন ৷ গত এক মাসে একদিনই তাঁকে স্কুলে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের (Malda Primary School controversy)৷ এমনই আজব সব অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের হলদিবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে (teacher couple open shop in government school in Malda Harishchandrapur)৷
বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা ৷ স্কুলে দোকান থাকার ঘটনা স্বীকার করে নিলেও তাঁর না-আসার অভিযোগের পিছনে বিরোধীদের ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছেন তৃণমূল নেতা ৷ হলদিবাড়ি গ্রামের মানুষজন জানাচ্ছেন, এই স্কুলে দীর্ঘদিন ধরেই অব্যবস্থা চলছে৷ শিক্ষকরা সময়মতো আসেন না ৷ স্কুলে জাতীয় সংগীত চলার সময় তাঁরা চেয়ারে বসে থাকেন ৷ বাচ্চাদের দিয়েই তাঁরা ক্লাশরুম-সহ গোটা স্কুল সাফাই করান ৷
এক অভিভাবক অজয় রায় বলেন, “স্কুলের মধ্যে দোকান থাকবে কেন ? শিক্ষকরা যদি চাকরির সঙ্গে স্কুলে ব্যবসাও করেন, সেটা কি ঠিক? আর মানিক মাস্টার স্কুলে আসেন না-বললেই চলে ৷ আমাদের দাবি, স্কুলে পড়াশোনাটা ভালো করে হোক ৷ বাচ্চাগুলো শিক্ষিত হোক ৷”
আরেক অভিভাবক শ্রবণ দাস বলেন, “স্কুলের ভিতর দোকান কেন থাকবে ? সব অভিভাবকরা তো ছেলেমেয়েদের টাকাপয়সা হাতে দিয়ে স্কুল পাঠাতে পারবেন না ৷ তাছাড়া এখন স্কুলে মিড মিল খাওয়ানো হচ্ছে ৷ তাহলে দোকান কেন থাকবে ? স্কুলের শিক্ষক হিমাংশু দাস আর তাঁর স্ত্রী পিংকি দাস এই দোকান খুলেছেন ৷ আর মানিক দাস স্কুলে আসেন না ৷ গত এক মাসে আজ তাঁকে আমি প্রথম স্কুলে দেখলাম ৷ তিনি তৃণমূলের ব্লক সভাপতি হতে পারেন ৷ কিন্তু স্কুলে আসবেন না কেন ? বাচ্চারা কেন পড়াশোনা থেকে ব্রাত্য থাকবে ?”
আরও পড়ুন: টাওয়ারে উঠে গান-নাচে মত্ত! মদের লোভে শেষমেশ নামলেন মদ্যপ ব্যক্তি
এ নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক তথা হরিশ্চন্দ্রপুর 1 ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস বলছেন, “আমি স্কুলে আসি কি না, তার প্রমাণ বাচ্চারা আর অন্যান্য শিক্ষকরাই দেবেন ৷ এসব ভিত্তিহীন কথাবার্তা ৷ বিরোধী দলের সঙ্গে জড়িত কিছু লোক এসব ষড়যন্ত্র করছে ৷ তবে পার্টির কাজের জন্য আমাকে কিছু ছুটি নিতে হয় ৷ কিন্তু আমি চাকরি করি ৷ স্কুলে তো আসতেই হবে ৷ তবে স্কুলের ভিতর একটা দোকান রয়েছে ৷ পড়ুয়াদের জন্যই এই দোকান খোলা হয়েছে ৷" তবে এর কোনও অনুমতি রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তৃণমূল ব্লক সভাপতি ৷