মালদা, 3 ডিসেম্বর : পাথর আনলোডিংয়ের জন্য শ্রমিকদের মজুরি একধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার ৷ লরি প্রতি 1200 টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে 5 হাজার টাকা ৷ তারই জেরে গত 17 নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশে পাথর রপ্তানি ৷ ক্ষতির মুখে পড়েছে এদেশের রপ্তানিকারক থেকে শুরু করে লরিচালক এবং শ্রমিকরাও ৷ অচলাবস্থা কাটাতে বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারের হস্তক্ষেপ দাবি করে চিঠি দিয়েছে মহদিপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ৷ চিঠি দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশি আমদানিকারকদেরও ৷ অচলাবস্থা কাটাতে আগামীকাল জেলা প্রশাসন ও জেলার বণিকসভা, মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সকে নিয়ে আলোচনায় বসতে চলেছে মহদিপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ৷ বৈঠকে থাকবে রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত পক্ষ ৷
মহদিপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক বলেন, "15 দিন ধরে বাংলাদেশে পাথর রপ্তানি বন্ধ রয়েছে ৷ রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত সবাই প্রবল সমস্যায় রয়েছে ৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমরা বারবার বাংলাদেশি আমদানিকারকদের চিঠি দিচ্ছি ৷ কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না ৷ তারা শুধু বলে যাচ্ছে, পানামা পোর্টে পাথরের আনলোডিং চার্জ বেড়ে যাওয়ার জন্য তারা পাথর নিতে পারছে না ৷ কিন্তু তারা লিখিতভাবে কিছু জানাচ্ছে না ৷ আমরা কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে দেখা না করলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তাঁকে চিঠিও দিয়েছি ৷ কিন্তু তাঁর তরফ থেকেও তেমন কোনও উদ্যোগ আমরা লক্ষ্য করিনি ৷ এই মুহূর্তে মহদিপুরে 3 থেকে 4 হাজার পাথরবোঝাই লরি দাঁড়িয়ে রয়েছে ৷ পণ্যবোঝাই লরি কোনও কারণে দাঁড়িয়ে থাকলে প্রতিদিনের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হয় রপ্তানিকারকদের ৷ এটাই এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ সমস্ত সমস্যা নিয়ে আজ আমরা একটি বৈঠক করেছি ৷ বৈঠকে মহদিপুর সি এন্ড এফ এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, মহদিপুর ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনও অংশ নিয়েছিল ৷ জেলা প্রশাসন ও জেলা বণিকসভার প্রতিনিধিদের আগামীকালের বৈঠকে ডাকা হয়েছে ৷ দেখা যাক, কত তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান হয় ৷"
রপ্তানিকারকরা জানাচ্ছেন, মহদিপুর সীমান্ত দিয়ে মূলত পাথর, ফ্লাই অ্যাশ, বিভিন্ন ধরনের ফল, পিঁয়াজ এবং শস্যসামগ্রী বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয় ৷ এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় পাথর ৷ সব কিছু ঠিক থাকলে প্রতিদিন প্রায় 300 লরি পাথর সেদেশে রপ্তানি করা হয় ৷ এই রপ্তানিতে কেন্দ্রীয় সরকারেরও কয়েকশো কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয় ৷ কিন্তু গত 15 দিন ধরে পাথর রপ্তানি বন্ধ থাকায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশের সরকারও ৷