ETV Bharat / state

টিম PK-র ফোনে দলেরই ভালো; বলছেন তৃণমূল নেতারা

author img

By

Published : Aug 8, 2019, 9:58 PM IST

ফোন আসছে টিম PK-র থেকে ৷ তা নিয়ে কিছুটা চিন্তায় রয়েছেন মালদার তৃণমূল নেতারা ৷

তৃণমূল নেতা

মালদা, 8 অগাস্ট : লোকসভা নির্বাচনে জেলার দুটি আসনে পর্যুদস্ত হয়ে ব্যাকফুটে তৃণমূল নেতৃত্ব । এই অবস্থায় টিম PK-র ফোন পাওয়া নিয়ে কিছুটা চিন্তায় নেতারা । সেই ফোন কখন যে কার কাছে আসবে, কেউ বুঝতে পারছেন না । ওপার থেকে ফোন করে বলা হচ্ছে, আপনার নাম এই । আপনি দলের এই পদে আছেন । আমি PK-র অফিস থেকে বলছি । তবে যিনি ফোন করেছেন, তাঁর পরিচয় মিলছে না ৷ যদিও তৃণমূল নেতারা নিশ্চিত ফোন আসছে প্রশান্ত কিশোরের (PK) অফিস থেকেই ৷ তাই বিনা বাক্য ব্যয়ে গড়গড় করে সব উত্তর দিচ্ছেন । ফোন আসছে বিধায়ক থেকে শুরু করে ব্লক, এমন কী পঞ্চায়েত স্তরের নেতাদের কাছেও । দলের এই ব্যবস্থায় ঘুম উড়েছে তৃণমূল নেতাদের , কখন যে পরীক্ষায় বসতে হয় ! শারীরিক অঙ্গভঙ্গিতে সেই ছাপ ফুটে উঠলেও মুখে চাপের কথা মানতে নারাজ কোনও নেতাই । বরং এই উদ্যোগতে স্বাগতই জানাচ্ছেন সবাই ।

মঙ্গলবার পর্যন্ত হবিবপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি ছিলেন প্রভাস চৌধুরি । কয়েকদিন আগে টিম PK-র ফোন এসেছিল তাঁর কাছে । আজ প্রভাস বলেন, "ফোন করে PK-র অফিস থেকে আমাকে বলল, আপনি কি প্রভাস চৌধুরি? আপনি কি হবিবপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি? আপনি কি দিদির মিটিংয়ে এসেছিলেন? সেখানে যে জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছিল তা কি আপনি পেয়েছেন? মিটিংয়ে আপনাদের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তা মেনে কি ব্লকে কাজ করছেন? তবে জনসংযোগ যাত্রায় আমাদের দু'দিন দেরি হয়ে গেছিল । আমি ফোনে সেকথা জানিয়েছি । জেলা কমিটির পর আমরা অনেক লোক নিয়ে ব্লকেও জনসংযোগ যাত্রা করেছি । ব্লকের প্রতিটি এলাকায় যাতে এই জনসংযোগ যাত্রা হয় তার ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি বলে জানাই । কী ভাবে সেই যাত্রা করতে হবে, তা প্রতিটি অঞ্চল নেতৃত্বকে জানিয়েছি । যেহেতু এখানে দলের কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই, তাই এখানে দলের তরফে জনসংযোগ যাত্রার জন্য কাউকে পাঠানো হবে । তবে PK-র অফিস থেকেই যে আমাকে ফোন করা হয়েছে, তা নিয়ে আমার কোনও সংশয় নেই । কারণ, ভুয়ো ফোন কথা বললেই বুঝতে পারা যায় । তবে দলের এই নতুন ব্যবস্থা আমার খুব ভালো লেগেছে । এভাবে যদি দলের তরফে প্রত্যন্ত এলাকাতেও মনিটরিং করা হয়, তবে আগামীতে নিশ্চিতভাবে এর ফল ভালো হবে ।"

শুধু প্রভাসবাবুই নয়, টিম PK-র ফোন ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষও পেয়েছেন বলে খবর ৷ এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে নীহারবাবু কিছুটা খানিকটা অস্বস্তিতে পড়ে যান । তিনি বলেন, "ফোন এসেছিল বটে, তবে সেটা PK টিমের কাছ থেকে কি না জানি না । আমাদের কাছে দলনেত্রীর নির্দেশ এসেছে । তাঁর দপ্তর থেকে বারবার আমাকে ফোন করা হয়েছে । আমি সব তথ্য জানিয়েছি । আমাকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে রিপোর্ট বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । আমি সেই রিপোর্ট তৈরি করেছি । তবে PK টিমের নাম করে আমার কাছে কোনও ফোন আসেনি । আমার সহায়ক ছাড়া আরও তিনজনের ফোন নম্বর পাঠিয়েছি । ফোন মারফত তাঁদের কাছ থেকে অনেক কিছু জানতে চাওয়া হচ্ছে । তাঁরা সেসব জানিয়েও দিচ্ছেন । বিধায়কের কাজকর্মের ভিডিয়োগ্রাফি ও ছবি তুলে নির্দিষ্ট নম্বরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে । দিদির লোকজন সেসব খতিয়ে দেখছে । তবে এসব কাজ টিম পিকে করছে কি না তা আমার জানা নেই ।"

এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, "লোকসভা নির্বাচনে আমরা এই জেলায় অনেক চেষ্টা করেও ভালো ফল করতে পারিনি । এরপর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলকে আরও শক্তিশালী করতে যোগাযোগের ভালো উপায় ঠিক করেছেন । তারই অঙ্গ হল প্রশান্ত কিশোরের টিম । টিম PK-র তরফে ইতিমধ্যেই মালদার বিভিন্ন নেতা-নেত্রীকে ফোন করা হয়েছে । অনেক কিছু জানতে চাওয়া হচ্ছে । এর ফলে, কর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছেন । তাঁরা দেখছেন, উপরমহল থেকে কেউ ফোন করে দলের ভালোমন্দের বিষয়ে জানতে চাইছেন । আমার কাছে মঙ্গলবার প্রশান্ত কিশোরের এক প্রতিনিধি এসেছিলেন । তিনি কিছু জিনিস জানতে চেয়েছিলেন । আমি তাঁকে সেইসব জানিয়েছি । আমি মনে করি, এই ব্যবস্থায় নিচুতলার কর্মীরাও নিজেদের মনের কথা টিম PK-র মাধ্যমে সরাসরি দিদিকে জানাতে পারবেন । হয়ত তাঁরা সেসব কথা জেলা বা রাজ্য নেতাদের কাছে বলতে পারতেন না । আর টিম PK-র ফোন নিয়ে কর্মীদের মনে যে ভয় রয়েছে, সেটা ভয় থাকা উচিত বলে আমার মনে হয় । কারণ, এখন দল অনেক বড় হয়েছে । অন্য দল থেকে অনেক নেতা-কর্মী তৃণমূলে এসেছেন । তাঁদের অনেকে ঠিকমতো কাজ না করলেও নেতাগিরি ফলান । কাটমানির বিষয়ও রয়েছে । এসবে দলেরই ক্ষতি হয়েছে । টিম PK-র ভয়ে এবার এসব বন্ধ হবে । এতে মানুষের কাছে দলের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে । শুধু তাই নয়, জেলায় দলের সমস্ত কাজকর্মের ভিডিয়ো ও ছবি প্রশান্ত কিশোরের মাধ্যমে সরাসরি দিদির কাছে চলে যাচ্ছে । এতে আমাদের আরাম প্রিয়তাও কমেছে । এতদিন আমাদের কাজকর্মের তদারকি করার কেউ ছিল না । এবার সেই তদারকি হচ্ছে । এতে দলের ভালো হবে ।"

মালদা, 8 অগাস্ট : লোকসভা নির্বাচনে জেলার দুটি আসনে পর্যুদস্ত হয়ে ব্যাকফুটে তৃণমূল নেতৃত্ব । এই অবস্থায় টিম PK-র ফোন পাওয়া নিয়ে কিছুটা চিন্তায় নেতারা । সেই ফোন কখন যে কার কাছে আসবে, কেউ বুঝতে পারছেন না । ওপার থেকে ফোন করে বলা হচ্ছে, আপনার নাম এই । আপনি দলের এই পদে আছেন । আমি PK-র অফিস থেকে বলছি । তবে যিনি ফোন করেছেন, তাঁর পরিচয় মিলছে না ৷ যদিও তৃণমূল নেতারা নিশ্চিত ফোন আসছে প্রশান্ত কিশোরের (PK) অফিস থেকেই ৷ তাই বিনা বাক্য ব্যয়ে গড়গড় করে সব উত্তর দিচ্ছেন । ফোন আসছে বিধায়ক থেকে শুরু করে ব্লক, এমন কী পঞ্চায়েত স্তরের নেতাদের কাছেও । দলের এই ব্যবস্থায় ঘুম উড়েছে তৃণমূল নেতাদের , কখন যে পরীক্ষায় বসতে হয় ! শারীরিক অঙ্গভঙ্গিতে সেই ছাপ ফুটে উঠলেও মুখে চাপের কথা মানতে নারাজ কোনও নেতাই । বরং এই উদ্যোগতে স্বাগতই জানাচ্ছেন সবাই ।

মঙ্গলবার পর্যন্ত হবিবপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি ছিলেন প্রভাস চৌধুরি । কয়েকদিন আগে টিম PK-র ফোন এসেছিল তাঁর কাছে । আজ প্রভাস বলেন, "ফোন করে PK-র অফিস থেকে আমাকে বলল, আপনি কি প্রভাস চৌধুরি? আপনি কি হবিবপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি? আপনি কি দিদির মিটিংয়ে এসেছিলেন? সেখানে যে জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছিল তা কি আপনি পেয়েছেন? মিটিংয়ে আপনাদের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তা মেনে কি ব্লকে কাজ করছেন? তবে জনসংযোগ যাত্রায় আমাদের দু'দিন দেরি হয়ে গেছিল । আমি ফোনে সেকথা জানিয়েছি । জেলা কমিটির পর আমরা অনেক লোক নিয়ে ব্লকেও জনসংযোগ যাত্রা করেছি । ব্লকের প্রতিটি এলাকায় যাতে এই জনসংযোগ যাত্রা হয় তার ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি বলে জানাই । কী ভাবে সেই যাত্রা করতে হবে, তা প্রতিটি অঞ্চল নেতৃত্বকে জানিয়েছি । যেহেতু এখানে দলের কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই, তাই এখানে দলের তরফে জনসংযোগ যাত্রার জন্য কাউকে পাঠানো হবে । তবে PK-র অফিস থেকেই যে আমাকে ফোন করা হয়েছে, তা নিয়ে আমার কোনও সংশয় নেই । কারণ, ভুয়ো ফোন কথা বললেই বুঝতে পারা যায় । তবে দলের এই নতুন ব্যবস্থা আমার খুব ভালো লেগেছে । এভাবে যদি দলের তরফে প্রত্যন্ত এলাকাতেও মনিটরিং করা হয়, তবে আগামীতে নিশ্চিতভাবে এর ফল ভালো হবে ।"

শুধু প্রভাসবাবুই নয়, টিম PK-র ফোন ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষও পেয়েছেন বলে খবর ৷ এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে নীহারবাবু কিছুটা খানিকটা অস্বস্তিতে পড়ে যান । তিনি বলেন, "ফোন এসেছিল বটে, তবে সেটা PK টিমের কাছ থেকে কি না জানি না । আমাদের কাছে দলনেত্রীর নির্দেশ এসেছে । তাঁর দপ্তর থেকে বারবার আমাকে ফোন করা হয়েছে । আমি সব তথ্য জানিয়েছি । আমাকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে রিপোর্ট বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । আমি সেই রিপোর্ট তৈরি করেছি । তবে PK টিমের নাম করে আমার কাছে কোনও ফোন আসেনি । আমার সহায়ক ছাড়া আরও তিনজনের ফোন নম্বর পাঠিয়েছি । ফোন মারফত তাঁদের কাছ থেকে অনেক কিছু জানতে চাওয়া হচ্ছে । তাঁরা সেসব জানিয়েও দিচ্ছেন । বিধায়কের কাজকর্মের ভিডিয়োগ্রাফি ও ছবি তুলে নির্দিষ্ট নম্বরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে । দিদির লোকজন সেসব খতিয়ে দেখছে । তবে এসব কাজ টিম পিকে করছে কি না তা আমার জানা নেই ।"

এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, "লোকসভা নির্বাচনে আমরা এই জেলায় অনেক চেষ্টা করেও ভালো ফল করতে পারিনি । এরপর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলকে আরও শক্তিশালী করতে যোগাযোগের ভালো উপায় ঠিক করেছেন । তারই অঙ্গ হল প্রশান্ত কিশোরের টিম । টিম PK-র তরফে ইতিমধ্যেই মালদার বিভিন্ন নেতা-নেত্রীকে ফোন করা হয়েছে । অনেক কিছু জানতে চাওয়া হচ্ছে । এর ফলে, কর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছেন । তাঁরা দেখছেন, উপরমহল থেকে কেউ ফোন করে দলের ভালোমন্দের বিষয়ে জানতে চাইছেন । আমার কাছে মঙ্গলবার প্রশান্ত কিশোরের এক প্রতিনিধি এসেছিলেন । তিনি কিছু জিনিস জানতে চেয়েছিলেন । আমি তাঁকে সেইসব জানিয়েছি । আমি মনে করি, এই ব্যবস্থায় নিচুতলার কর্মীরাও নিজেদের মনের কথা টিম PK-র মাধ্যমে সরাসরি দিদিকে জানাতে পারবেন । হয়ত তাঁরা সেসব কথা জেলা বা রাজ্য নেতাদের কাছে বলতে পারতেন না । আর টিম PK-র ফোন নিয়ে কর্মীদের মনে যে ভয় রয়েছে, সেটা ভয় থাকা উচিত বলে আমার মনে হয় । কারণ, এখন দল অনেক বড় হয়েছে । অন্য দল থেকে অনেক নেতা-কর্মী তৃণমূলে এসেছেন । তাঁদের অনেকে ঠিকমতো কাজ না করলেও নেতাগিরি ফলান । কাটমানির বিষয়ও রয়েছে । এসবে দলেরই ক্ষতি হয়েছে । টিম PK-র ভয়ে এবার এসব বন্ধ হবে । এতে মানুষের কাছে দলের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে । শুধু তাই নয়, জেলায় দলের সমস্ত কাজকর্মের ভিডিয়ো ও ছবি প্রশান্ত কিশোরের মাধ্যমে সরাসরি দিদির কাছে চলে যাচ্ছে । এতে আমাদের আরাম প্রিয়তাও কমেছে । এতদিন আমাদের কাজকর্মের তদারকি করার কেউ ছিল না । এবার সেই তদারকি হচ্ছে । এতে দলের ভালো হবে ।"

Intro:মালদা, 8 অগাস্ট : এমনিতেই গত লোকসভা নির্বাচনে জেলার 2 আসনে পর্যদুস্ত হয়ে ব্যাকফুটে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তার উপর এখন গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিয়েছে পিকে টিমের হঠাৎ ফোন। সেই ফোন কখন যে কার কাছে আসবে, কেউ বুঝতে পারছেন না। ওপার থেকে ফোন করে বলা হচ্ছে, আপনার নাম এই। আপনি দলের এই পদে আছেন। আমি পিকে'র অফিস থেকে বলছি। ফোনের ওপার থেকে কারোর নাম বলা হচ্ছে না। কিন্তু যেসব তথ্য বলা হচ্ছে, তাতে যাঁকে ফোন করা হচ্ছে, তিনি নিশ্চিত হয়ে যাচ্ছেন সেই ফোন প্রশান্ত কিশোরের অফিস থেকেই করা হচ্ছে। এরপর তাঁর কাছে যা জানতে চাওয়া হচ্ছে, বিনা বাক্যব্যয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিচ্ছেন তিনি। সেই ফোন আসছে বিধায়ক থেকে শুরু করে ব্লক, এমনকি পঞ্চায়েত স্তরের নেতৃত্বের কাছেও। দলের এই ব্যবস্থায় ঘুম উড়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের। বডি ল্যাঙ্গুয়েজে তা বোঝা গেলেও মুখে কোনও চাপের কথা মানতে নারাজ কেউ। বরং দলের এই ব্যবস্থাকে প্রকাশ্যে স্বাগতই জানাচ্ছেন সবাই।


Body:গত পরশু পর্যন্ত হবিবপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি ছিলেন প্রভাস চৌধুরি। কয়েকদিন আগে পিকে টিমের ফোন এসেছিল তাঁর কাছে। আজ প্রভাসবাবু জানান, "ফোন করে পিকে'র অফিস থেকে আমাকে বলল, আপনি কি প্রভাস চৌধুরি? আপনি কি হবিবপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি? আপনি কি দিদির মিটিং-এ এসেছিলেন? সেখানে যে জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছিল তা কি আপনি পেয়েছেন? মিটিং-এ আপনাদের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তা মেনে আপনি কি ব্লকে কাজ করছেন? তবে জনসংযোগ যাত্রায় আমাদের দু'দিন দেরি হয়ে গিয়েছিল। আমি ফোনে সেকথা জানিয়েছি। জেলা কমিটির জনসংযোগ যাত্রার পর আমরা প্রচুর লোকজন নিয়ে ব্লকে সেই যাত্রা করেছি। আমি পিকে'র অফিসে আরও জানাই, ব্লকের প্রতিটি অঞ্চলে যাতে এই জনসংযোগ যাত্রা হয় তার ব্যবস্থা নিয়েছি আমরা। কীভাবে সেই যাত্রা করতে হবে, তা প্রতিটি অঞ্চল নেতৃত্বকে জানিয়েছি। যেহেতু এখানে দলের কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই, তাই এখানে দলের পক্ষ থেকে জনসংযোগ যাত্রার জন্য কাউকে পাঠানো হবে। তবে পিকের অফিস থেকেই যে আমাকে ফোন করা হয়েছে, তা নিয়ে আমার কোনো সংশয় নেই। কারণ, ভুয়ো ফোন কথা বললেই বুঝতে পারা যায়। তবে দলের এই নতুন ব্যবস্থাপনা আমার খুব ভালো লেগেছে। এভাবে যদি দলের পক্ষ থেকে প্রত্যন্ত এলাকাতেও মনিটরিং করা হয়, তবে আগামীতে নিশ্চিতভাবে এর ফল ভালো হবে।"
শুধু প্রভাসবাবুই নয়, পিকে টিমের ফোন এসেছিল ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের কাছেও। আজ এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে নীহারবাবু যেন খানিকটা অস্বস্তিতে পড়ে যান। তিনি বলেন, "ফোন এসেছিল বটে, তবে সেটা পিকে টিমের কাছ থেকে কি না জানি না। আমাদের কাছে দলনেত্রীর নির্দেশ এসেছে। তাঁর দপ্তর থেকে বারবার আমাকে ফোন করা হয়েছে। আমি সব তথ্য জানিয়েছি। আমাকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে রিপোর্ট বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি সেই রিপোর্ট তৈরি করেছি। তবে পিকে টিমের নাম করে আমার কাছে কোনও ফোন আসেনি। আমার সহায়ক ছাড়া আরও তিনজনের ফোন নম্বর আমি পাঠিয়েছি। ফোন মারফত তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু জানতে চাওয়া হচ্ছে। সেসব তারা জানিয়েও দিচ্ছে। বিধায়কের কাজকর্মের ভিডিয়োগ্রাফি ও ছবি তুলে নির্দিষ্ট নম্বরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দিদির লোকজন সেসব খতিয়ে দেখছে। তবে এসব কাজ পিকে টিম করছে কিনা তা আমার জানা নেই।"


Conclusion:এপ্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, "গত লোকসভা নির্বাচনে আমরা এই জেলায় অনেক চেষ্টা করেও ভালো ফল করতে পারিনি। এরপর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলকে আরও শক্তিশালী করতে দলের মধ্যে যোগাযোগের ভালো উপায় ঠিক করেছেন। তারই অঙ্গ হল প্রশান্ত কিশোরের টিম। পিকে'র টিম ইতিমধ্যেই মালদা জেলার বিভিন্ন নেতা-নেত্রীকে ফোন করেছে। ফোনের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে চাওয়া হচ্ছে। এতে কর্মীরা বাস্তবিকই উজ্জীবিত হচ্ছেন। তাঁরা দেখছেন, দলের উপরমহল থেকে কেউ ফোন করে দলের ভালোমন্দের বিষয়ে তাঁদের কাছে জানতে চাইছেন। আমার কাছেও গত পরশু প্রশান্ত কিশোরের এক প্রতিনিধি এসেছিলেন। তিনি কিছু জিনিস জানতে চেয়েছিলেন। আমি সেসব তাঁকে জানিয়েছি। আমি মনে করি এই ব্যবস্থায় নীচুতলার কর্মীরাও নিজেদের মনের কথা পিকে টিমের মাধ্যমে সরাসরি দিদিকে জানাতে পারবেন। হয়তো তাঁরা সেসব কথা জেলা বা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে বলতে পারতেন না। আর পিকে টিমের ফোন নিয়ে কর্মীদের যে ভয় রয়েছে, আমি মনে করি, সেই ভয় থাকা উচিত। কারণ, এখন দল অনেক বড়ো হয়েছে। অন্য দল থেকে অনেক নেতা-কর্মী দলে এসেছেন। তাঁদের অনেকে ঠিকমতো কাজ না করলেও নেতাগিরি ফলাযন। কাটমানির বিষয়ও রয়েছে। এসবে দলের ক্ষতিই হয়েছে। পিকে টিমের ভয়ে এবার এসব বন্ধ হবে। এতে মানুষের কাছে দলের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে। শুধু তাই নয়, জেলায় দলের সমস্ত কাজকর্মের ভিডিয়ো ও ছবি প্রশান্ত কিশোরের মাধ্যমে সরাসরি দিদির কাছে চলে যাচ্ছে। এতে আমাদের আরামপ্রিয়তাও কমেছে। এতদিন আমাদের কাজকর্মের তদারকি করার কেউ ছিল না। এবার সেই তদারকি হচ্ছে। এতে দলের ভালো হবে।"
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.