মালদা, 18 জুন : চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের মালতিপুর গ্রামীণ হাসপাতাল । হাসপাতালের মেঝেতে রোগীদের গাদাগাদি। ভ্যাপসা গরমে সবাই ঘেমে নেয়ে একসা। মাথার উপর বৈদ্যুতিক পাখা থাকলে তা স্থির হয়েছে বেশ কয়েক বছর ধরে। কোনও রোগীর পিপাসা পেলে হাসপাতালের বাইরে দোকানে ছুটতে হচ্ছে বাড়ির লোকজনকে। কিনে আনতে হচ্ছে বোতলবন্দি পানীয় জল । হাসপাতালে পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। এভাবেই ভগ্নস্বাস্থ্যের হাসপাতালে স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার হচ্ছে স্থানীয় মানুষের (Hospital Problem In Malda)।
চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের মালতিপুর গ্রামীণ হাসপাতাল । ব্লকের একমাত্র বড় সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ব্লক। জনসংখ্যাও লক্ষাধিক। ফলে হাসপাতালে রোগীদের চাপ ভালই থাকে। কিন্তু এখানে বেডের সংখ্যাই পর্যাপ্ত নয়। বেডের সংখ্যা বাড়ানোর কথা চিন্তাভাবনাও করা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁদের আরও অভিযোগ, হাসপাতালে রোগীদের কথা চিন্তাই করা হয় না । সেকারণেই বছরের পর বছর পানীয় জল কিংবা বিকল থাকা বৈদ্যুতিক পাখা সারাই হয় না (No Fan And No Water in Malda Government Hospital)।
হাসপাতালের মেঝেতেই শুয়ে চিকিৎসাধীন এক রোগী মহম্মদ সোহেল বলেন, “গতকাল রাত 11টা নাগাদ এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। সমস্ত বেড ভর্তি থাকায় আমাকে মেঝেতেই রাখা হয়েছে। মাথার উপর ফ্যানটাও ঘুরছে না। খুব গরম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসবে একটু নজর দিলে ভাল হয়।” স্ত্রীকে এই হাসপাতালেই ভর্তি করেছেন স্থানীয় হজরতপুরের বাসিন্দা আরজাউল হক। তিনি কিছুটা ক্ষোভের সুরেই বলেন, “হাসপাতালে বেডের খুব সমস্যা । পর্যাপ্ত বেড নেই। বেড না পাওয়ায় স্ত্রী নীচেই শুয়ে আছে। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, এখানে খুব তাড়াতাড়ি পর্যাপ্ত বেডের ব্যবস্থা করা হোক। হাসপাতালের পাখাগুলোও চলছে না। মেরামত করা হচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এসব দেখা উচিত।”
আরও পড়ুন : রোগীর কাটা হাত মুখে ঘুরছে কুকুর ! উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে শিউরে ওঠা দৃশ্য
বিষয়টি জানানো হলে চাঁচল মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়ন্ত বিশ্বাস বলেন, “ওই হাসপাতালে বর্তমানে 60টি বেড রয়েছে । বেডের অপ্রতুলতার বিষয়ে আমি ইতিমধ্যে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছি। কিছুদিন আগে তিনি কয়েকটি নতুন বেড নিয়ে এসেছেন। তবে এই সময় আবহাওয়ার কারণে ওই হাসপাতালে রোগীদের চাপ একটু বেশি।’’
মালতিপুরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি আবদুর রহিম বকসি। তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতালের এমন পরিস্থিতির কথা তাঁর জানা ছিল না। এখন তিনি কলকাতায় আছেন ৷ জেলায় ফিরে তিনি এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন। স্বাস্থ্য দফতরেও বিষয়টি জানাবেন।