মালদা, 8 অক্টোবর : “দাদা… ও দাদা… ৷ কেউ আছেন ?” রাতের নিস্তব্ধতা কাটিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে একইভাবে ডেকে চলেছেন এক যুবক ৷ কার্যত শুনশান মালদার চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এভাবে হত্যে দিয়েও সদ্যোজাত সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি তিনি ৷ বদলে মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে জন্ম নেওয়া ছেলেকে চোখের সামনেই ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখলেন ৷ তখনও ফাঁকা ‘সুপার স্পেশালিটি’ হাসপাতালের অনুসন্ধান কেন্দ্র ! চোখ খুলে পৃথিবীকে দেখার সুযোগটুকুও পেল না নিষ্পাপ একটি শিশু ৷ রাতেই মৃত শিশুর দেহ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন পরিবারের সদস্যরা ৷
আরও পড়ুন : Child death : জলপাইগুড়িতে শিশু মৃত্যু নিয়ে সরকারি তথ্যে বিভ্রান্তি
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের রাড়িয়াল গ্রামের বাসিন্দা মোজাফ্ফর আলি ৷ বৃহস্পতিবার তাঁর স্ত্রী মাজেনুর বিবি প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি হন ৷ বিকেলে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি ৷ কিন্তু, এর কিছুক্ষণ পর থেকেই সদ্যোজাতের শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ৷ তড়িঘড়ি ওই শিশুকে নিয়ে আসা হয় চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৷ সেখানে আইসিইউ-তে রেখে চিকিৎসা শুরু করা হলেও সদ্যোজাতের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে ৷ চিকিৎসকরা ওই শিশুকে মালদা মেডিক্যালে রেফার করে দেন ৷ অভিযোগ, সদ্যোজাতকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে মালদা মেডিক্যালে নিয়ে আসার জন্য চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অনুসন্ধান কেন্দ্রে যান পরিবারের সদস্যরা ৷ কিন্তু সেই সময় অনুসন্ধান কেন্দ্রে কোনও কর্মী ছিলেন না ৷ প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ‘নিখোঁজ’ কর্মীদের জন্য অপেক্ষা করেন শিশুর বাবা ও আত্মীয়রা ৷ কিন্তু, তাতে শেষ রক্ষা হয়নি ৷ প্রাণ যায় একরত্তির ৷
আরও পড়ুন : Children Death : গাড়ির ভিতরে আটকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত 3 শিশু
মোজাফ্ফর আলি বলেন, “বাচ্চাকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে মালদা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল ৷ কিন্তু, তার জন্য ভাউচার দিতে হত অ্যাম্বুল্যান্স চালককে ৷ অনুসন্ধান কেন্দ্র থেকে এই ভাউচার দেওয়ার কথা ৷ অথচ, অনুসন্ধান কেন্দ্রে কেউ নেই ৷ ভাউচার পাওয়া যায়নি বলে অ্যাম্বুল্যান্সও গেল না ৷ আমাদের বাচ্চাও শেষ হয়ে গেল ৷’’